1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

ভুলে যাওয়া এক বিপ্লবী: ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল হত্যাকারী শহীদ শের আলী আফ্রিদী

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে

ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের নায়ক ছিলেন মূলত মুসলিম বিপ্লবীরাই। অথচ স্বাধীনতার পরে রচিত ইতিহাসে তাদের অবদানকে পরিকল্পিতভাবে আড়াল করার প্রয়াস চালানো হয়েছে, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাদের আত্মত্যাগের কথা জানতে না পারে। অথচ দুইশত বছরের ব্রিটিশ শাসনে অসংখ্য ইংরেজ অফিসার স্বাধীনতাকামীদের হাতে নিহত হলেও কেবলমাত্র একবারই কোনো ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল নিহত হয়েছিলেন—এবং সে অসাধ্য সাধন করেছিলেন এক অকুতোভয় মুসলিম বীর, শের আলী খান আফ্রিদী। শের আলী আফ্রিদীর জন্ম হয়েছিল খাইবার পাস সংলগ্ন জামরুদ গ্রামে, বর্তমান পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও বিপ্লবী চেতনার অধিকারী। আমিরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভীর আদর্শ অনুসরণ করে তিনি ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পোষণ করতেন। প্রথম জীবনে তিনি ব্রিটিশ সরকারের অধীনে মাউন্ট পুলিশে চাকরি করলেও অন্তরে লালন করতেন একদিন ইংরেজদের হাত থেকে উপমহাদেশকে মুক্ত করার স্বপ্ন।
১৮৬৭ সালে এক ব্রিটিশ গুপ্তচরকে হত্যা করায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আন্দামান দ্বীপের কুখ্যাত কারাগারে নির্বাসিত করা হয়। কিন্তু নির্বাসন তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, বরং সেখানে থেকেই তিনি প্রতিশোধের অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে রেখেছিলেন। কারাগারে তিনি অত্যন্ত ন¤্র স্বভাবের, ধার্মিক ও সহানুভূতিশীল মানুষ হিসেবে পরিচিত হন। জীবিকার জন্য নাপিতের কাজ করতেন এবং উপার্জিত অর্থ কারাবন্দী সহযোদ্ধাদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন। কিন্তু তার অন্তরে চলছিল আরেক যুদ্ধ—ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এক মহাপরিকল্পনা।
একজন গভর্নর জেনারেলের পতন
১৮৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। গভর্নর জেনারেল লর্ড মায়ো আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের হারিয়েট দ্বীপে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে গিয়েছিলেন। অভিজাত ব্রিটিশ রীতি অনুসারে, তার চারপাশে ছিল দেহরক্ষীদের কড়া পাহারা। কিন্তু শের আলী আফ্রিদী ছিলেন সুযোগ সন্ধানী। অতর্কিত তিনি গভর্নর জেনারেলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার বুকে ছুরি বসিয়ে দেন। সেই মুহূর্তেই ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে যায় এক অনন্য অধ্যায়—প্রথম ও একমাত্র ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেলের হত্যার ঘটনা।
হত্যার পর তিনি পালানোর চেষ্টা করেননি, বরং দাঁড়িয়ে ছিলেন অবিচল, যেন তিনি তার নিয়তি নিজেই বেছে নিয়েছেন। ব্রিটিশ সেনারা তাকে গ্রেপ্তার করে এবং বিচারের নামে দ্রুত ফাঁসির আদেশ দেয়। মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আর কেউ আছে কিনা, তখন তার উত্তর ছিল দৃঢ় ও স্পষ্ট—
“খোদা নে হুকুম দিয়া। মেরা শারীক কোই আদমি নেহি। মেরা শরীক স্রেফ খোদা হ্যায়।”

(এ কাজের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। আমার কোনো মানবীয় সহযোদ্ধা নেই, আমার একমাত্র সহযোদ্ধা স্বয়ং আল্লাহ।)

শহীদের বিদায়
১৮৭৩ সালের ১১ মার্চ, ভাইপার দ্বীপের কারাগারে শের আলী খান আফ্রিদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর ঠিক পূর্বমুহূর্তে তিনি ফাঁসির দড়িকে চুম্বন করে উচ্চারণ করেছিলেন কালিমা শাহাদাত। এভাবেই এক অকুতোভয় বীর মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন, ইতিহাসের পাতায় স্থায়ী করে গেলেন তার নাম।
কিন্তু আফসোস, এই মহান আত্মত্যাগকে ইতিহাসের পাতায় যথাযোগ্য স্থান দেওয়া হয়নি। যেখানে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক ব্যর্থ প্রচেষ্টাকে জাগরণী ইতিহাস হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, সেখানে সফল এই হত্যাকাণ্ড, যা ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল, তা আজও অনেকের কাছে অজানা।
একজন গভর্নর জেনারেলের হত্যাকারী—এমন দুর্লভ ঘটনার নায়ক হয়েও কেন শের আলী আফ্রিদীর নাম আজ প্রায় বিস্মৃত?
কারণ তিনি ছিলেন মুসলমান। কারণ তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের বিপ্লবী, যিনি ধর্ম ও স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মবিসর্জন দিয়েছিলেন। অথচ আমাদের পাঠ্যপুস্তকে তাকে স্থান দেওয়া হয়নি, বরং তার পরিবর্তে বারবার অন্যদের নাম উচ্চারিত হয়েছে, যাদের অনেকের অবদান প্রশ্নবিদ্ধ।
কিন্তু ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না। সত্যের আলো একদিন ঠিকই উদ্ভাসিত হয়। শের আলী খান আফ্রিদী এক বিস্মৃত নায়ক হলেও, তার বীরত্ব চিরকাল স্বাধীনতাকামী মানুষের হৃদয়ে জ্বলজ্বল করবে।
তার রক্ত বৃথা যায়নি, যাবে না। ইতিহাস তার প্রাপ্য সম্মান একদিন তাকে ফিরিয়ে দেবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট