ভুয়া ডোনার ভোটার, অফিস পিয়ন,কাজের বুয়াসহ অসংখ্য ভুয়া সদস্য- “চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নির্বাচনে ভুয়া ভোটারের বিরুদ্ধে আপত্তি দিয়েছেন জাবেদ আবছার চৌধুরী”
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আসন্ন নির্বাচনে ভুয়া ডোনার ভোটার অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তুলেছেন হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার লায়ন মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী। ১৪ নভেম্বর, তিনি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) ও নির্বাচন কমিশনার নুরুল উল্লাহ নুরি বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়ে এই বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ভুয়া ডোনার ভেটার
বাতিলের আহবান জানিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম আজাদ তাঁর আত্মীয়স্বজন ও ব্যক্তিগত অফিস, ঘরের বুয়া ও পিয়নসহ প্রায় ১১০ জনকে অবৈধভাবে ডোনার সদস্য বানিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অন্যজনের
অনুদানের টাকা দিয়ে সেই তার পছন্দ মতো মানুষকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সদস্য করেছেন,
এতে করে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও গঠনতন্ত্রের স্বচ্ছতার নীতি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ চৌধুরী জানান, “রেজাউল করিম আজাদ প্রকৃত দাতাদের উপেক্ষা করে সম্মানিত দাতাদের সাথে প্রতারণা করে
তাঁর নিজস্ব স্বার্থে এই ভুয়া ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে।”
অভিযোগে উঠে আসে যে, ভুয়া ভোটার তালিকায় নিম্নলিখিত বিভাগগুলোর
ডোনার সদস্যরা রয়েছেন: ১১৩ থেকে ১১৯ নম্বরের ৭ জন সদস্য,
১২১ থেকে ১২৩ নম্বরের ৩জন সদস্য,
১৩৩ থেকে ১৫০ নম্বরের ১৮ জন সদস্য,
২০৭ থেকে ২৩৯ নম্বরের৩৩জন সদস্য,
২৫৪ থেকে ২৫৯ নম্বরের ৬ জন সদস্য,
৩৩২ থেকে ৩৫০ নম্বরের ১৯ জন সদস্য।
এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, প্রফেসর ডা. আবু তাহেরের অনুদান থেকে অনুমতি ছাড়া ৩৫১ থেকে ৩৭৪ নম্বরের ২৪ জনকে ডোনার সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও জানানো হয় যে, দুইজন মৃত সদস্যের নাম রহস্যজনকভাবে ভোটার তালিকায় (১২৯), মরহুম সৈয়দ ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমদ (১৩৪), এবং মরহুম সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরী (২১৯)। ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছার চৌধুরী আরও জানান, “এই ভুয়া ও মৃত ভোটারদের উপস্থিতি হাসপাতালের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অবাধ ও নিরপেক্ষ রাখার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আমি অভিযেগ মূলে জানাচ্ছি যে প্রকৃত দাতা হিসেবে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত এই ভুয়া সদস্যদের ভোটাধিকার স্থগিত রাখা হোক এবং দ্রুত যথাযথ তদন্ত করা হোক।”এ ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনার নুরুল উল্লাহ নুরি কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তা নিয়ে চট্টগ্রামের দাতাগণ এবং সাধারণ সদস্যদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অভিযোগ জমা দেওয়ার পর জাবেদ আবছার চৌধুরীর মনোভাব জানতে চাইলে তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভুয়া দাতা সদস্য তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, ন্যায় বিচার না পেলে উচ্চ আদালতে যাবো-
প্রয়োজনে হাইকোর্টে রিড করাসহ ভুয়া ভোটার সৃষ্টিকারি ও ভুয়া ভোটারদের বিরুদ্ধে প্রতারনা মামলা করা হবে। জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন আমি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুউল্লাহ নুরী সেই অভিযুক্তদের কাছে প্রতিবেদন চয়েছেন,যাতে অভিযোগকারি ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছারের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, “আমার অভিযোগের মূল বিষয়ই তো রেজাউল করিম চৌধুরী আজাদের বিরুদ্ধে, অথচ তাদেরকেই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ
দিয়েছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, সবাই মনেকরেন “এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।” জাবেদ আবছার উল্লেখ করেন যে, তিনি বহুবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দাখিল করলেও, তারা এই ভুয়া সদস্যদের চিহ্নিত করতে কোনও পদক্ষেপ নেননি। বরং অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়েই তাকে আড়ালে রাখার চেষ্টা চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার ভাষায়, “আমার অভিযোগকে বিবেচনায় না নিয়ে এমনভাবে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন প্রকৃত অপরাধীরা আড়ালে রয়ে যায়।” জাবেদ আবছার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “ন্যায়বিচার না পেলে আমি হাইকোর্টে যাই বাধ্য হবো। আমি এই অনিয়মের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো এবং আশা করি উচ্চ আদালতে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে।”এই অভিযোগকে ঘিরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের অভ্যন্তরে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে। জীবন সদস্যসহ সচেতন মানুষেরা মন্তব্য করেন যে বাংলাদেশের শীর্ষ ধনীরা যেখানে ডোনা সদস্য, বিশেষ করে পি এইছ পির সুফি মিজানুর রহমান সাহেব সহ আরো বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিরা যেখান বড় অংকের ডোনেশন দিয়ে দাতা সদস্য হিসেবে পরিচিত হয়েছে, সেই খানে আজাদের বদৌলতে তার অফিস পিয়নও ডোনার সদস্য,ছিঃ ছিঃ বলতে লজ্জা হয়, যেপিয়ন নামে মাত্র বেতনের টাকা দিয়ে যেখানে জীবনযাপন করেন সেই খানে ৫ লক্ষ টাকা এককালীন নগদে ডোনেশন দিয়ে সদস্য হওয়া তা রুপকথার কাহিনিকে হার মানিয়েছে। ড. সানাউল্লাহ দুঃখ করে বলেন আমি এককালীন ৫ লক্ষ টাকা দিতে পারিনি বলে আমি ডোনার সদস্য হতে পারেনি! এই ধরনের অসংগতি সত্যি দুঃখ ও লজ্জার বিষয়, অনেকে বলেন এই অসংগতির কারণে আগামীতে সমাজের বিত্তশালীরা চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ডোনার সদস্য হতে ইচ্ছুক হবেনা। ডোনার সদস্যদের এখন আত্মমর্যাদার প্রশ্নই দাঁড়িয়েছে। তা জরুরি ভিত্তিতে নিরসনের প্রয়েজন। অন্যদিকে আমাদের পত্রিকার প্রতিনিধিরা মা ও শিশু হাসপাতালের অনিয়ম অনুসন্ধান করতে গিয়ে অসংখ্য অনিয়ম পেয়েছে, তা প্রকাশ করলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের তথাকথিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি মানুষের অনাস্থা দেখাদেবে। সমাজ সেবার আড়ালে তারা কি পরিমাণ অনিয়ম করেছে তা প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন ভাবে আত্মসাৎ এবং অসংখ্য দূর্নীতি স্বজনপ্রীতি অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সহ তাদেরকে হাসপাতাল থেকে বিতাড়িত করতে হবে বলে অনেকে মনে করেন, কেউ কেউ বলেন তাদের অনিয়ম চিহ্নিত করে তাদেরকে নির্নাচন করার থেকে বিরত রাখতে হবে, নির্বাচন দিলে তাদেরকে পরাজিত করানো সম্ভব হবে না, তাদের হাজার হাজার পকেট ভোটার রয়েছে, এই ভোটারের ভোট তাদের রিজার্ভ ভোট তা অন্য কেউ পাবেনা, তাদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তারা মা ও শিশু হাসপাতালকে এমনভাবে জিম্মি করেছেন তারআথেকে মুক্ত করা আল্লাহ ছাড়া আরা কাহারও সম্ভব নয়। তাই বিজ্ঞাজনেরা বলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে।