চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের ভগ্নিপতি সেলিম ও তার সহযোগী সাতকানিয়া ধর্মপুরের বাসিন্দা সারোয়ারের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীদের দাবি, এই দুই প্রতারক চট্টগ্রাম বন্দরের নাম ব্যবহার করে অসংখ্য বেকার যুবকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাউকে চাকরি দিতে পারেনি। প্রতারণার কৌশল ও বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, সেলিম এবং সারোয়ার চট্টগ্রাম বন্দরের একটি বেসরকারি সংস্থা সায়েফ পাওয়ারটেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্তত ১০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। তারা ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করতো, এই টাকা চাকরির নিশ্চয়তার জন্য নিরাপত্তা জামানত হিসেবে রাখা হবে। একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাদের আত্মীয়দেরও চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছে এই প্রতারক চক্র।
এক সংবাদকর্মীর ৭ জন আত্মীয়ের কাছ থেকে তারা মোট ৩৫ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে এবং তাদেরকে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। আরও জানা যায়, যারা তাদের প্রতারণার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলো, তাদেরকে হাসান মাহমুদের নাম ব্যবহার করে ভয় দেখানো হতো এবং পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হতো। আর্থিক প্রতারণার পাশাপাশি অবৈধ ব্যবসায় জড়িত অভিযুক্ত সেলিম ও সারোয়ার শুধু চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করেই থেমে থাকেনি; তারা কয়েন, জাল ডলার এবং প্রত্নতাত্ত্বিক মূর্তি প্রতারণার সাথে একটি সিন্ডিকেট চালিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই প্রতারণামূলক ব্যবসায় বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন নামে আত্মপ্রকাশ করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সেলিম এবং সারোয়ার এই প্রতারণামূলক ব্যবসার কারণে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে ভীতিকর নাম হিসেবে পরিচিত। সারোয়ারের অতীত কর্মকাণ্ড ও পুলিশি তদন্ত সারোয়ার একজন পেশাদার প্রতারক হিসেবে পরিচিত এবং জাল ডলার ও কয়েন ব্যবসায় তার সম্পৃক্ততার তথ্য রয়েছে। তিন বছর আগে চট্টগ্রামে ডলার জালিয়াতি চক্রের সদস্য হিসেবে তার পাঁচ সহযোগীকে পুলিশ আটক করেছিল, যেখানে একজন সংবাদকর্মী নিজে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং সারোয়ারের সহযোগীদের আইনের আওতায় এনেছিলেন। বর্তমানে সারোয়ার সমস্ত দোষ সেলিমের উপর চাপিয়ে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।
আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি প্রতারণার শিকার অসংখ্য ভুক্তভোগী এখন এই চক্রের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন ফোরামে অভিযোগ জমা দিচ্ছে এবং এই চক্রকে আইনের আওতায় আনতে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের নাম ব্যবহার করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ আত্মসাতের এই ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগীরা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই দুই প্রতারককে গ্রেফতার করবে এবং আইনানুগ প্রক্রিয়ায় তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে।