1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
ঠাকুরগাঁওয়ে নদীতে গোসল করতে নেমে   দ্বিতীয় শ্রেণীর  শিশুর মৃত্যু বান্দরবানে বাজার চৌধুরীর অপসারণ ও বিচারের দাবীতে মানব বন্ধন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা! শিবচরে মাদক রোধে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিল উপজেলা বিএনপি ঘোড়াঘাটে ৩৪ টি পূজা মন্ডপে নগদ অর্থ প্রদান করেন ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বৃহত্তর কুমিল্লাকে কুমিল্লা বিভাগ করার জন্য মানববন্ধন অনুষ্ঠিত! গাইবান্ধায় সেবামূলক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত নবীনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন নবীনগরে অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে বিদায় সংবর্ধনা বোদায় দূর্গাপুজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

শতায়ু অঙ্গনের হিরো-হিরোইনদের বৈশাখী মহোৎসব

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

বৈশাখের সকালে সূর্যটাও বুঝি একটু রঙ চড়িয়েই উঠেছিল। আলোয় ছিল লালচে উজ্জ্বলতা, হাওয়ায় একটা কাঁপুনি, আর আকাশে পাখিদের ডানায় যেন ছিল গানের নোটেশন। এমন দিনেই আমরা পৌঁছালাম শতায়ু অঙ্গনে—একটা জায়গা যা বয়সের হিসাব পাল্টে দেয়, আর মনটাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় একেবারে যৌবনের প্রথম প্রেমে।
সেই চিরচেনা বৈশাখী সকাল—কেউ পাঞ্জাবি পরে বুক ফুলিয়ে এসেছে, কেউ শাড়ির আঁচল সামলে কোমরে রাখার অভিনয় করছে, আবার কেউ লাল টিপটা একটু তেরছা হয়ে গেছে কি না দেখে নিচ্ছে আয়নায়, যা আসলে মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। আর আমি? আমি ক্যামেরা হাতে খুঁজছিলাম কার হাসিটা সবচেয়ে ঝকঝকে, কার চাহনিটা সবচেয়ে ‘সিনেম্যাটিক’।
আনন্দের ঢেউয়ে যারা ভেসে যাচ্ছিলেন, তাদের মধ্যেই ছিলেন হিরো ভাবী ও মাঝি ভাবী “রুবিনা”, —পরে আছেন বৈশাখী রঙের শাড়ি, মুখে লাজুক অথচ অভিজাত হাসি, যেন ‘মাধুরী দীক্ষিত’ এদেশি সংস্করণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তার পাশে আমি! ভাগ্যিস মাঝি ভাই একটু দূরে ছিলেন—না হলে হয়তো বলতেন, “এই লোকটার হিরো ভাবটা আজকেও গেল না!”
রুবিনা তখন শাড়ির ভাঁজে আর চোখের চাহনিতে এমন এক বৈশাখী আগুন লাগিয়েছিলেন যে, আশপাশে যারা ছিলেন তারা মনে মনে ভাবছিলেন—এই উৎসবে যদি একটা মুকুট দেওয়া হয়, তবে সেটা নিশ্চিতভাবেই তাঁর মাথায়। আমি ঠিক পাশে দাঁড়িয়ে আছি, কিছুটা অপ্রস্তুত, কিছুটা গর্বিত, আর একটু হয়তো নার্ভাস, কারণ আমার ডান দিকে হিরো ভাবী আর বাম দিকে রুবিনা—দুজনেই এমন ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে যে মনে হচ্ছিল, আমি যেন মাঝখানে কোনো পোস্টারের চরিত্র!
আর মাঝি ভাই? তিনি হিরো নন, তিনি বাস্তব জীবন থেকে উঠে আসা সেই প্রেমিক, যিনি স্ত্রীর শাড়ি কেনা থেকে শুরু করে তাঁর সেলফি তোলা পর্যন্ত সব কিছুর দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। তবে আজকের দিনটা এমনই ছিল—একটুখানি হিংসে, একটুখানি ভালোবাসা, আর অনেকখানি হাসি। কেউ কারো দিকে তাকিয়ে ঠাট্টা করছে, আবার হেসে বলছে, “তুমি না একেবারে সিনেমার নায়ক!” কেউ পাশে দাঁড়িয়ে বলছে, “এই ছবিটা তো ফেসবুকে ভাইরাল হবে!”
ক্যামেরা ক্লিক করছিল, আর মুহূর্তগুলো জমে উঠছিল এক একটা ফ্রেমে। পিছনের পাহাড়ি সবুজ আর সামনের লাল-সাদা মানুষগুলোর চোখেমুখে যে আনন্দ ছিল, তা দিয়ে একটা আস্ত কবিতা লেখা যেত। আমি যেন লেখার বদলে ক্যামেরায় কবিতা তুলছিলাম।
তবে আমার সবচেয়ে পছন্দের মুহূর্তটা ছিল যখন একজন বললেন—“এই নায়কের ছবি তোলো, একদম দুই নায়িকার মাঝে!” হাসির রোল পড়ে গেল, কেউ বলল “ভাইরে, ভাগ্যবান তো তুমি!” কেউ বলল “এই পোস্টার চট্টগ্রামে লাগাইতে হবে!”
এই সবকিছু মিলিয়ে যে পহেলা বৈশাখটা কাটল, সেটা ছিল কেবল দিনপঞ্জির নতুন পাতা নয়—এ যেন জীবনের নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলা এক টুকরো মহোৎসব। আমরা যেন ফিরে গেলাম কৈশোরের ছুটিতে, বন্ধুবান্ধবের সাথে মিলেমিশে হাসার দিনগুলোতে।
এখন ভাবি, ছবি তো অনেক হলো—এই হাসিগুলো, এই চাহনিগুলো, এই ছেলেমানুষি খুনসুটিগুলো ধরে রাখার জন্য যদি একটা শব্দ থাকত! থাকলে সেটার নাম হতো “শতায়ু আনন্দ”।
আর এই আনন্দের মধ্যেই আমি মিশে গিয়েছিলাম—না কোনো বিশেষ অতিথি হয়ে, না কোনো সঞ্চালক বা সাংবাদিক হয়ে—শুধু একজন মানুষ হয়ে, যে ভালোবাসে বাঙালিকে, বৈশাখকে, আর মানুষজনের এই সহজ সরল হাসিকে।
এই লেখা কি ঠিক গল্প? নাকি স্মৃতি? নাকি হালকা প্রেমমিশ্রিত প্রহসন? কে জানে! তবে এটুকু জানি—এই দিনটা জীবন থেকে ফুরিয়ে গেলেও, মনে থেকে যাবে রঙধনুর মতো একটা রেখা হয়ে।
শুভ বৈশাখ, হিরো-হিরোইনদের পক্ষ থেকে!

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট