1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নিরাপদ সড়ক চাই সফল সামাজিক সংগঠন তারেক রহমান ফিরতে চাইলে একদিনেই ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব ঘোড়াঘাটে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক সীমিত গঠন ও বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত শ্রীমঙ্গলে ১১মাস ধরে ঘরবন্দী এক পরিবার লামায় ট্রাক্টর মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৪ চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক ব্লকেড, ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবি রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও  আলোচনা সভা  গৌরনদীতে বিএনপি’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড গাইবান্ধা, ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা হত্যার হুমকি থানায় অভিযোগ  ৩২ তম বাৎসরিক ওরশ মোবারক ও গুনীসম্মাননা ২০২৫

ডিসি হিলে বর্ষবরণের মঞ্চে হামলা: ৪৭ বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে বর্বর থাবা!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণ উপলক্ষে প্রস্তুতকৃত মঞ্চে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে একদল যুবক। রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গন, সুশীল সমাজ এবং সচেতন নাগরিকদের মধ্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তারা একে চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর ‘বর্বর হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ঘটনার বিবরণ-
সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন যুবক ডিসি হিল চত্বরে প্রবেশ করে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’-এর তৈরি মঞ্চে হামলা চালায়। ভাঙচুর করে চেয়ার, কাঠামো, ব্যানার ও প্যান্ডেলের কাপড়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে সমন্বয়কারী সুচরিত দাশ খোকন বলেন, “আমরা পুরো প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলাম। অনুষ্ঠান শুরুর মাত্র ঘণ্টা কয়েক আগে এই হামলা আমাদের স্তম্ভিত করেছে।” প্রশাসনের বক্তব্য-
চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম বলেন, “আমাদের ফোর্স আগে থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে ছিল। কিছু লোক হামলার চেষ্টা করলেও তা প্রতিহত করা হয়েছে।” তবে ভাঙচুরের চিত্র প্রশাসনের বক্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ঐতিহ্যের ওপর আঘাত- ডিসি হিল চত্বরে এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজনের সূচনা হয় ১৯৭৮ সালে। ৪৬ বছর ধরে একই স্থানে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় উদযাপন করে আসছে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’। এবারে ৪৭তম বর্ষে পদার্পণ করলেও আয়োজন ঘিরে শুরু থেকেই ছিল প্রশাসনিক জটিলতা ও নিরাপত্তা শর্ত।
১৩ ফেব্রুয়ারি আয়োজকরা অনুমতির জন্য আবেদন করলেও দীর্ঘদিন সেটি ঝুলিয়ে রাখা হয়। অবশেষে ১০ এপ্রিল এক সভায় সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দেওয়া হয় নানা শর্ত— গান ও কবিতার তালিকা আগে জমা দিতে হবে, বিতর্কিত কিছু রাখা যাবে না, অনুষ্ঠান ৪টার মধ্যে শেষ করতে হবে ইত্যাদি।
সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়া-
ঘটনার পরপরই সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাংস্কৃতিক সংগঠক ও কবি মোহিত কামাল বলেন, “এটি শুধু একটি মঞ্চ ভাঙচুর নয়, এটি আমাদের চট্টগ্রামের অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনার ওপর হামলা। ৪৭ বছরের ঐতিহ্যকে যারা আঘাত করেছে, তারা চট্টগ্রামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির শত্রু।” চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক ড. রাশেদা আক্তার বলেন, “পহেলা বৈশাখ একটি জাতীয় উৎসব, কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নয়। এই উৎসবের ওপর হামলা মানে আমাদের অসহিষ্ণুতা ও চেতনাগত সংকটের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।”
চট্টগ্রাম সিটি কলেজের অধ্যাপক ও নাট্যজন সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “প্রশাসনের চোখের সামনে একটি প্রস্তুত মঞ্চে এইভাবে হামলা হয়, আর তারা বলে প্রতিহত করা হয়েছে— এটি হাস্যকর ও লজ্জাজনক।” সংগঠকদের উদ্বেগ-
আয়োজক পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই অনুষ্ঠান করে আসছি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে, কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছাড়া। এবারে কেনো এমন হামলার শিকার হলাম, তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
তারা আরও জানান, হামলার পরও তারা অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কারণ “ভয় নয়, সংস্কৃতিই আমাদের শক্তি।”
চট্টগ্রামের ডিসি হিলের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান কেবল একটি উৎসব নয়, এটি একটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। এই অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে যারা ভাঙচুর করেছে, তারা কেবল একটি কাঠামো নয়, একটি জাতির সাংস্কৃতিক গর্বকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।
এটি নিছক দুঃখজনক নয়— এটি লজ্জার, এটি এক গভীর সংকেত যে আমাদের মুক্তচিন্তা, উৎসব ও সংস্কৃতির জায়গাগুলোও এখন নিরাপদ নয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট