ভারত উপমহাদেশে মুসলমানদের শাসনকাল ১২০৬-১৮৫৭-শুরু ও সময়কালঃ
ভারতে মুসলিম শাসন কার্যত শুরু হয় ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে যখন দিল্লির কুতুবউদ্দিন আইবক গোরি শাসনের পরে নিজেকে সুলতান ঘোষণা করে ‘দিল্লি সালতানাত’ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর প্রায় ৬৫০ বছর ধরে বিভিন্ন মুসলিম রাজবংশ ভারত শাসন করেছে—মুঘল শাসনের শেষ পর্যন্ত (১৮৫৭ সাল)। প্রধান মুসলিম শাসক ও রাজবংশঃ ১. দিল্লি সালতানাত (১২০৬–১৫২৬) ,গুলাম বংশ: কুতুবউদ্দিন আইবক, ইলতুতমিশ, রজিয়া সুলতানা
,খিলজি বংশ: জালালউদ্দিন খিলজি, আলাউদ্দিন খিলজি,তুঘলক বংশ: মোহাম্মদ বিন তুঘলক, ফিরোজ শাহ,
লোধি বংশ: বহলুল লোধি, ইব্রাহিম লোধি
২. মুঘল সাম্রাজ্য (১৫২৬–১৮৫৭)
,বাবর (১৫২৬-১৫৩০) – পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোধিকে পরাজিত করে শাসন শুরু,হুমায়ুন,আকবর (১৫৫৬–১৬০৫) – ধর্মনিরপেক্ষতা ও ‘দীন-ই-ইলাহি’র প্রবর্তক, জাহাঙ্গীর,শাহজাহান – তাজমহলের নির্মাতা, আওরঙ্গজেব (১৬৫৮–১৭০৭) – ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কঠোর শাসন ৩. বিভিন্ন স্বাধীন মুসলিম শাসন,হায়দার আলি ও টিপু সুলতান (মহীশূর),বাহাদুর শাহ জাফর (শেষ মুঘল সম্রাট), বাংলার নবাবেরা (সিরাজউদ্দৌলা, আলীবর্দী খান) ২. মুসলিম শাসনে হিন্দুদের অবস্থা সামগ্রিক চিত্রঃ মুসলিম শাসনের দীর্ঘকালীন সময়ে হিন্দুরা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে টিকে ছিল এবং রাজদরবার, প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও অর্থনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করত। ইতিবাচক দিকঃ আকবরের সময় হিন্দুদের প্রতি সহনশীলতা এবং রাজপুতদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং হিন্দু উপদেষ্টাদের প্রাধান্য,আকবর জিজিয়া কর (অমুসলিম কর) বাতিল করেন,বিভিন্ন মন্দিরে দান, সংস্কৃতি ও সাহিত্য চর্চা সমস্যাসমূহঃ কিছু শাসক (যেমন মুহাম্মদ ঘোরি, মহম্মদ বিন তুঘলক, আওরঙ্গজেব) হিন্দুদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেন, যেমন জিজিয়া কর পুনর্বহাল, মন্দির ধ্বংসের অভিযোগ
,কিছু যুদ্ধ বা দমনমূলক অভিযান হিন্দু রাজ্য বা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হয়েছিল
৩. হিন্দুদের হাতে মুসলমানদের নিপীড়ন ও সমস্যাঃ ব্রিটিশ আমলে ও পরে: ১৮৫৭ সালের বিপ্লবের ব্যর্থতার পর মুসলমানদের বিশেষভাবে টার্গেট করে চাকরি, জমিদারি, শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখা হয়,কংগ্রেস পরিচালিত আন্দোলনগুলোতে মুসলমানদের প্রান্তিক করা হয়,
বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা (যেমন ১৯৪৬ সালের কলকাতা দাঙ্গা) মুসলিমদের ওপর নৃশংস হামলা স্বাধীন ভারতের পর: বাবরি মসজিদ ধ্বংস (১৯৯২) – রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দুত্ববাদী হামলা
গুজরাট গণহত্যা (২০০২) – প্রায় ২০০০ মুসলমান নিহত,গো-রক্ষার নামে পিটিয়ে হত্যা, মুসলিম শিক্ষার্থীদের বয়কট, এনআরসি ও সিএএ নিয়ে হয়রানি
বহু মুসলিম গ্রাম বা মহল্লা “no Muslim zone” এ রূপান্তরিত, ভারতের ইতিহাসে মুসলিম শাসন ছিল দীর্ঘ, এবং শাসকের ধর্ম নির্বিশেষে বহু ন্যায়-অন্যায়ের চিত্র
রয়েছে। মুসলিম শাসকরা যেমন কখনও কঠোর ছিলেন, তেমনি বহু উদার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকও ছিলেন। অপরদিকে, স্বাধীনতার পর মুসলিম সংখ্যালঘুরা নানা রকম বৈষম্য, সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে, যা এখনো চলছে।
আজকের ভারত এক অদ্ভুত
আত্মপ্রবঞ্চনার পথে হাঁটছে।
যে মাটিতে মুসলিম শাসকরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সভ্যতা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, সাহিত্য, স্থাপত্য ও রাষ্ট্রনীতি গড়ে তুলেছেন— সে মাটিতে আজ মুসলিমদেরই ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। ভারত সরকারের আজকের জাতীয়তাবাদী প্রচারে মুসলিম মানেই “বহিরাগত”, মুসলিম মানেই “আক্রমণকারী”— অথচ ইতিহাস সাক্ষী, এই ভারতবর্ষের প্রতিটি ইট, প্রতিটি ঐতিহাসিক সৌধ, বিজ্ঞান ও কাব্যের অনেক উজ্জ্বল শিখা জ্বলেছে মুসলিমদের হাতে। ভারতের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী “ভারত মাতা”র নামে এক জাতীয়তাবাদী পৌরুষ গড়ে তুলতে গিয়ে তার প্রকৃত ইতিহাস ভুলে গিয়েছে। তারা আজ “তাজমহল”কে ‘কালো দাগ’ বলে, “লালকেল্লা”র মালিকানা দাবি করে নিজেদের ঐতিহ্য বানাতে চায়। অথচ এই সবই নির্মাণ করেছে মুসলিম শাসকরা, তাঁদের ঘামে, মেধায়, শিল্পে ও স্বপ্নে।
একটি শিশুর মুখে যখন উঠে আসে একের পর এক প্রশ্ন:
“মা, তাজমহল কি আমরা বানিয়েছি?”
“মা, কুতুব মিনার কি আমাদের?”
“মা, মিসাইল আমরাই তো প্রথম বানিয়েছি?”
তখন একজন মা থেমে থেমে বলতে বাধ্য হন— “না বেটা, এগুলো সব মুসলিমদের অবদান…” মুসলিমরা কী দিয়েছে ভারতকে? যদি আপনি তাজমহল দেখতে চান, তবে যেতে হবে মুসলিম বাদশাহ শাহজাহানের কাছে।
যদি কুতুব মিনার দেখতে চান, তাহলে স্মরণ করতে হবে কুতুবুদ্দিন আইবককে।
লালকেল্লা, হাজারদোয়ারি, চারমিনার, গোলকুন্ডা— সবই মুসলিমদের সৃষ্ট অবকাঠামো।গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড— আজকের ভারতের অন্যতম বৃহৎ সড়ক, গড়ে তুলেছিলেন শের শাহ সূরী।
মঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করেছিলেন আলাউদ্দিন খলজি, না হলে ভারত ধ্বংস হয়ে যেত। যে “সারে জাহাসে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা” গানটি নিয়ে ভারত গর্ব করে, তার রচয়িতা ছিলেন মুসলিম কবি আল্লামা ইকবাল।
“জয় হিন্দ” স্লোগানটি আসে মুসলিম নেতার কণ্ঠ থেকে।
ভারতের জাতীয় পতাকায় চূড়ান্ত রূপ দিয়েছিলেন সুরাইয়া তৌবজি, একজন মুসলিম নারী। ভারতের বিজ্ঞান ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদান তো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর মতো:
এ পি জে আবদুল কালাম— একজন মুসলিম বিজ্ঞানী, যিনি ভারতের প্রথম সফল মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিলেন, গড়েছিলেন শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
নিউক্লিয়ার অস্ত্র ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ— সবেতেই ছিল তাঁর অগ্রণী ভূমিকা। অথচ আজ তাঁর নামটি পাঠ্যপুস্তকে ক্ষীণ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতের বর্তমান প্রপাগান্ডা ও বাস্তবতা: আজকের ভারত যে “হিন্দু সভ্যতা”র নামে চিৎকার করছে, তারা যেন ভুলে যায়—
যখন তারা গোমূত্র পান করে আশীর্বাদ খোঁজে, তখন মুসলিম বিজ্ঞানী স্পেস টেকনোলজির ইতিহাস গড়েছেন।
যখন তারা মন্দির নির্মাণে ব্যস্ত, তখন মুসলিমরা জ্ঞান, প্রযুক্তি, স্থাপত্য ও শিল্পকলায় পৃথিবীকে মুগ্ধ করেছে।
ভারতের ইতিহাসে মুসলিম শাসকদের অবদান শুধু বিস্ময়করই নয়, তা এতটাই গভীর ও ব্যাপক যে, সেটিকে বাদ দিয়ে “ভারত” নামে কোনো সভ্যতার পরিচয়ই হয় না। তবু আজ ভারতের পাঠ্যপুস্তকে মুসলিমদের গৌরব মুছে ফেলা হয়, মিডিয়ায় মুসলিমদের ‘অপর’ বানানো হয়, আর গণপিটুনিতে প্রাণ হারায় অনেক নিরীহ মুসলিম। এই ইতিহাস কোনো ধর্মের নয়, এই গৌরব কোনো জাতির নয়— এটা এক বৃহৎ মানবিক, সাংস্কৃতিক, এবং জ্ঞানের ঐতিহ্য, যা উপমহাদেশের প্রতিটি মানুষের সম্পদ। যারা এই ইতিহাস অস্বীকার করে, তারা নিজের শিকড়ই অস্বীকার করে। ভারতের হিন্দুদের মধ্যে মুসলমানদের প্রতি গ্রহণযোগ্যতার ঘাটতি ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তা: এক তুলনামূলক বিশ্লেষণ-
ভারতের ইতিহাসে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মুঘল সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে আধুনিক ভারতের রাজনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞান এমনকি ক্রীড়াঙ্গনে মুসলমানদের উপস্থিতি ব্যাপক ও গৌরবময়। আজও এ.পি.জে. আবদুল কালামের মতো বিজ্ঞানী ও রাষ্ট্রপতি, শাহরুখ খান ও আমির খানের মতো অভিনেতা, ইরফান হাবিবের মতো ঐতিহাসিক, আজহারুদ্দিনের মতো ক্রীড়াবিদের নাম উচ্চারণ করলে বোঝা যায়, ভারতীয় মুসলমানদের সফলতা কতটা বিস্তৃত। তবু প্রশ্ন থেকে যায়: এত অর্জন, এত মেধা থাকা সত্ত্বেও কেন ভারতের বহু হিন্দু মুসলমানদেরকে “আপনজন” বলে গ্রহণ করতে পারেননি? ১. ঐতিহাসিক বিভাজন ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব-
ভারতের বিভাজনের মূল ইতিহাসে রয়েছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুসলমানদের একটি অংশের “স্বতন্ত্র রাষ্ট্র” চাওয়া অনেক হিন্দুর মনে মুসলমানদের প্রতি সন্দেহ জন্ম দিয়েছে। সেই মনস্তত্ত্ব পরবর্তীকালে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মাধ্যমে আরও চর্চিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
২. হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উত্থান-
১৯৮০’র দশক থেকে বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (RSS)-এর উত্থান ও প্রচারিত হিন্দুত্ববাদ মুসলমানদেরকে একধরনের ‘অন্তর্নিহিত শত্রু’রূপে চিহ্নিত করেছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস, গুজরাট দাঙ্গা, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA), NRC — এই সব ঘটনায় মুসলমানদের প্রতি অগহণযোগ্যতার প্রবণতা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
৩. গণমাধ্যম ও কৌশলী প্রচার-
ভারতের একাংশের মিডিয়া মুসলমানদেরকে ‘দেশদ্রোহী’, ‘জেহাদি’ বা ‘পাকিস্তানের সমর্থক’ হিসেবে চিত্রিত করে। এতে সাধারণ হিন্দুদের মধ্যেও মুসলমানদের প্রতি ভয়, রাগ বা দূরত্ব তৈরি হয়। ৪. সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও নিরাপত্তাহীনতা- প্রায় প্রতি দশকে একাধিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, বিশেষ করে মুসলমানদের উপর সহিংসতার ঘটনাগুলো এই বিভাজনকে ঘনীভূত করেছে। মুসলমানদের গেটোতে বসবাস, শিক্ষা ও চাকরিতে বৈষম্য এসব কিছুর প্রতিফলন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা ও তার কিছু দীর্ঘমেয়াদি মূল্য-১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের প্রতি একটি ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশকে কূটনৈতিক, সামরিক ও মানবিক সহায়তা দেয়। প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেয়, ভারতীয় সেনা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয় এবং ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এ সহায়তার কিছু সুস্পষ্ট ‘মূল্য’ বা ক্ষতির দিকও ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য:
১. অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নির্ভরশীলতা- স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারতের প্রভাব উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে। বিশেষত ১৯৭২-৭৪ সময়কালে “ইন্ডিয়ান প্রোডাক্ট ডাম্পিং” এর ফলে বাংলাদেশের ছোট ও মাঝারি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একসময় অনেকেই মনে করতেন, ভারত আমাদের বাজার দখল করছে। ২. চুক্তিগত অসমতা: ফারাক্কা বাঁধ ও পানিবণ্টন- স্বাধীনতার পর প্রথম বড় অসন্তোষ সৃষ্টি করে গঙ্গার পানি প্রবাহে ভারতের একতরফা নিয়ন্ত্রণ। ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ চালু হলে পদ্মা নদীর প্রবাহ কমে যায়, যার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণ শুরু হয়। ৩. চুক্তিভিত্তিক সুবিধা অর্জনের চেষ্টা- ভারতের বিভিন্ন স্তরে চেষ্টা ছিল বাংলাদেশে করিডর, বন্দর ব্যবহার, নদীপথ ইত্যাদির একতরফা সুবিধা আদায়ের। অনেক সময় এই বিষয়গুলো বাংলাদেশে জাতীয় স্বার্থ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। ৪. অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ-স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে ভারত ঘনিষ্ঠ কিছু রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষত বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ভারতের রাজনীতির কিছু কৌশল বাংলাদেশের রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলেছিল। ভারতের হিন্দু জনগণের মধ্যে মুসলমানদের প্রতি অগহণযোগ্যতা শুধুমাত্র ধর্মীয় নয় — এটি ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক একত্রিত মনস্তত্ত্বের ফল। অন্যদিকে, ১৯৭১ সালে ভারতের মহান সহায়তা নিঃসন্দেহে চিরস্মরণীয় ও বন্ধুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার পেছনে কূটনৈতিক স্বার্থও ছিল — এবং সেই স্বার্থ অনেক সময় আমাদের ক্ষতির কারণও হয়েছে। সত্য ও ইতিহাসকে পাশাপাশি রেখে আমরা যদি ভবিষ্যতের পথ রচনা করি, তবেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জন পূর্ণতা পাবে, এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে। সত্যকে জানুন, ইতিহাসকে ভালোবাসুন। মুসলিমদের অবদান ভুলে গেলে ভারত অর্ধেক ফাঁকা হয়ে যায়।
ভারতের অন্ধ হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির মুখোশ খুলে দিন— ইতিহাসের আলোয় সত্যই সবচেয়ে উজ্জ্বল।