1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৯:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

পুলিশ তুমি কার-জনতার নাকি ক্ষমতার!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

পুলিশ: জনতার নাকি ক্ষমতার? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে পাওয়াটাই খুবই কঠিন- আমি সেই কঠিন শব্দ নিয়ে লেখা লিখে আসছি আজ বহুকাল আগে থেকে-

বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী যখন গৌরবময় ইতিহাসের কথা আমাদের কানে আসে, তখন আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও গর্ববোধ করি। আমাদের মনে পড়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পুলিশের ভূমিকা, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের ত্যাগ ও সংগ্রাম। কিন্তু সময় বদলেছে, সমাজ বদলেছে, এবং পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আজকাল অনেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত—আসলে পুলিশ কাকে সেবা দিচ্ছে? জনতাকে, নাকি ক্ষমতাধর শাসকদের? ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রধানত শাসকদের শাসন রক্ষার উদ্দেশ্যে। তখন পুলিশ ছিল শোষকদের হাতিয়ার, যাদের কাজ ছিল জনগণের ওপর নিপীড়ন চালানো এবং শাসকদের স্বার্থ রক্ষা করা। সেই ইতিহাসের উত্তরাধিকারী হিসেবে আজও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কিছু সমস্যা বিদ্যমান। এখন পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যের আচরণও জনগণের কাছে অনেক সময় ক্ষমতার সেবক হিসেবে দেখা যায়, যা একদিকে যেমন জনগণের কাছে বিরক্তির কারণ, তেমনি পুলিশের প্রতি আস্থা হারানোর পথও প্রশস্ত করে। পুলিশ যখন ক্ষমতার পক্ষে কাজ করতে শুরু করে, তখন তা সাধারণ জনগণের কাছে একটি লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে পরিণত হয়, যা তাদের অধিকারের বিরুদ্ধে কাজ করতে থাকে। জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত থাকার বদলে, কিছু পুলিশ সদস্য যখন রাজনৈতিক স্বার্থে কিংবা ক্ষমতার দখলে ভূমিকা রাখে, তখন তা তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে গভীর প্রশ্ন তৈরি করে।

আজকের এই পরিস্থিতিতে আমরা সবাই এক প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে: আসলেই পুলিশ কার? জনগণের সেবক, নাকি শাসকদের বাহিনী? এ প্রশ্নটি শুধুমাত্র পুলিশ বাহিনীকে নিয়েই নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পর্কেও এক গভীর অনুসন্ধান। পুলিশের এই দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থান আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যেখানে পুলিশের নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ এবং উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের ভাবনার দরকার। এবার আসি মূল প্রশ্নে—পুলিশ কি জনতার নাকি ক্ষমতার? পুলিশ বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত। তবে পুলিশের ভূমিকা শুধুমাত্র জনগণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা নয়, বরং রাষ্ট্রের ক্ষমতা রক্ষার জন্যও অনেক সময় এটি ব্যবহৃত হয়। তাই প্রশ্ন উঠতে পারে, পুলিশ জনতার নাকি ক্ষমতার? এই প্রশ্নের উত্তর একদিকে যেমন জনগণের সেবা, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পক্ষে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হতে পারে। পুলিশ বাহিনীর ইতিহাস অনেক পুরনো, যার উৎপত্তি মানব সভ্যতার শুরু থেকেই। তবে আধুনিক পুলিশ বাহিনীর প্রতিষ্ঠা হয় মূলত ১৭০০-১৮০০ শতকের মধ্যে, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে। পুলিশ বাহিনীর প্রথম আধুনিক রূপ গঠন করা হয় ১৭৮৫ সালে লন্ডনে, স্যার রবার্ট পিলের মাধ্যমে। পিলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বাহিনী ছিল পৃথিবীর প্রথম আধুনিক পুলিশ বাহিনী, যা অপরাধ দমন, জননিরাপত্তা এবং জনগণের সহায়তায় কাজ শুরু করেছিল। পুলিশ বাহিনীর ভিত্তিতে ১২টি মৌলিক নীতি প্রবর্তন করেন, যা এখন “পিলস ল” বা পিলের আইন নামে পরিচিত। এই নীতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল জনগণের মধ্যে বিশ্বাস সৃষ্টি, অপরাধ প্রতিরোধ, এবং জনতার প্রতি সহযোগিতা। এর মাধ্যমে, পুলিশ বাহিনী জনগণের সেবা প্রদান করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পুলিশ বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং সমাজে শান্তি বজায় রাখা। তবে ইতিহাসে দেখা যায় যে, পুলিশের ক্ষমতা কখনো কখনো একতরফাভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অধিকাংশ সমাজেই পুলিশ বাহিনী রাষ্ট্রের হাতে থাকে এবং এটি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে, অনেক সময় পুলিশ বাহিনী জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকে, বিশেষত রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু দেশে পুলিশ বাহিনী জনগণের অধিকারের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে, বা শাসকগোষ্ঠীর সমর্থনে বিরোধী মত দমন করতে ব্যবহৃত হয়।বাংলাদেশে পুলিশের প্রতিষ্ঠা ও ভূমিকা প্রথমে ছিল ইংরেজ শাসনের অধীনে। ১৮৬১ সালে, ব্রিটিশ শাসনের সময় ভারতীয় পুলিশ আইন প্রবর্তন করা হয়, যা আধুনিক বাংলাদেশেও এখনও কার্যকর। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ শাসকদের ক্ষমতা রক্ষা এবং জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। স্বাধীনতার পর, বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনী জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য গঠন করা হলেও, অনেক সময় ক্ষমতাশীল গোষ্ঠীর হাতে এর অপব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে।
সাধারণত পুলিশের কাজ হল আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু যখন পুলিশ বাহিনী ক্ষমতার প্রয়োগে ব্যবহৃত হয়, তখন তার উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয়ে যায়। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, সাধারণ মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা, কিংবা বিরোধী মত দমন করা—এই সব কিছুই পুলিশ বাহিনী যখন ক্ষমতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন দেখা যায়। বাংলাদেশসহ অনেক দেশে, যখন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে, তখন পুলিশ বাহিনী সেই দলের পক্ষ থেকে কাজ করে, যা অনেক সময় জনগণের প্রতি অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করে। তাহলে, পুলিশ বাহিনীর প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো জনগণের সেবা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কিন্তু কখনো কখনো ক্ষমতার প্রয়োগের উদ্দেশ্যে তা ব্যবহার করা হয়। এজন্যই পুলিশ বাহিনী জনগণের নয়, বরং ক্ষমতার হাতিয়ার হতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব, দায়বদ্ধতা এবং জনসেবার মনোভাব। পুলিশ বাহিনী যদি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে কাজ করে, তাহলে তার কার্যক্রমের নিরপেক্ষতা এবং জনগণের প্রতি তার সেবা-দায়িত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং, পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা একটি উন্নত গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য অত্যাবশ্যক। নিম্নলিখিত কিছু পদক্ষেপ পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করার জন্য কার্যকর হতে পারে: পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। এই কমিশন পুলিশ বাহিনীর নিয়োগ, পদোন্নতি, শাস্তি এবং প্রশাসনিক কাজকর্মের প্রতি স্বতন্ত্রভাবে নজরদারি করবে। এটি পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমের স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের প্রক্রিয়াটি অবশ্যই নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ হওয়া উচিত। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা বা দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে কোন প্রকার নিয়োগ বা পদোন্নতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং পদোন্নতি কেবলমাত্র কর্মদক্ষতা, সততা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
পুলিশ বাহিনীকে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাদের কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করতে হবে এবং তাদেরকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উৎসাহিত করতে হবে।পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমের উপর আইনগত নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। আইনগত সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। এই সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশের অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রভাবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। পুলিশ বাহিনীর বাজেট এবং খরচের বিষয়টি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। বাজেট বরাদ্দ এবং খরচের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত এবং কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজ, নাগরিক সংগঠন, এবং অন্যান্য প্রভাবশালী সংস্থাগুলি পুলিশের কার্যক্রমের উপর নজর রাখতে পারে।
পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়মিতভাবে কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের রাজনীতিক প্রভাবের প্রতি সচেতন করতে হবে। তাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং নিরপেক্ষ হতে শিক্ষিত করতে হবে। তারা যেন বুঝতে পারে তাদের কাজের উদ্দেশ্য জনগণের নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা, বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর ইতিহাস এবং চরিত্র নানা দিক থেকে আকর্ষণীয় এবং জটিল। পুলিশের ভূমিকাকে সময়ের পরিক্রমায় নানা পর্যায়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এটি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, কিন্তু তার কার্যক্রম এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক কখনোই একরকম ছিল না। পুলিশ বাহিনীর চরিত্র এবং এর পরিবর্তন শাসনব্যবস্থা, রাজনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি, এবং জনগণের দাবি অনুযায়ী সমসময় পরিবর্তিত হয়েছে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী এক ধরনের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। ব্রিটিশ রাজত্বের অধীনে গড়ে ওঠা পুলিশের একটি পুরনো কাঠামো ছিল, যা পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে নানা রাজনৈতিক প্রভাবের মধ্যে পরিণত হয়। পাকিস্তানি শাসনকালে পুলিশ বাহিনী ছিল এক ধরনের শাসকশ্রেণির অস্ত্র। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশেও পুলিশ বাহিনী সেই পূর্বসূরির প্রভাব কিছুটা বহন করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পুলিশের ভূমিকা ছিল মিশ্র। অনেক পুলিশ সদস্য স্বাধীনতার পক্ষের ছিলেন, আবার অনেকেই পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের মানুষের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর পুলিশের চরিত্র এবং কার্যক্রম আরও এক ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘূর্ণনে পতিত হয়, যা ভবিষ্যতে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।আজকের পুলিশ বাহিনী নানা ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। একদিকে আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক মানের কর্মকৌশল পালিত হলেও, অন্যদিকে পুলিশ বাহিনীর কর্মকাণ্ডে অনেক সময় রাজনৈতিক পক্ষপাত, স্বার্থের সংঘাত, এবং আইনের প্রতি অনীহা প্রকাশ পেয়েছে।

বর্তমান পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য বিভিন্ন দলের প্রভাবের অধীনে কাজ করে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রয়োজনে পুলিশকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। এই কারণে পুলিশের কাজের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব এবং আইনের অপব্যবহার ঘটে। জনগণের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা অনেক কমে গেছে, বিশেষত যখন তারা নিজেদের নিরাপত্তা বা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশের কাছে যায়, তখন তারা অনেক সময় হতাশ হয়ে ফিরে আসে।
এছাড়া, বিভিন্ন অপরাধী চক্র এবং দুষ্কৃতিকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে পুলিশের সম্পর্কের বিষয়টি অনেক সময় সন্দেহের সৃষ্টি করে। এসব কারণে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে শক্তি ও মর্যাদার অভাব এবং অপরাধীদের প্রতি কঠোর মনোভাবের অভাব সৃষ্টি হয়েছে।পুলিশ বাহিনীর চরিত্র এবং কার্যক্রম পরিবর্তন, তা যদি দীর্ঘমেয়াদী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়, তবে কিছু মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন পুলিশ একটি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যার ভূমিকা সমাজে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং রাষ্ট্রের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। তবে, বাংলাদেশে পুলিশের প্রতি সাধারণ জনগণের মনোভাব কখনোই একরকম নয়। অনেক সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে থাকে—অবিচার, দুর্নীতি, দলীয় পক্ষপাতিত্ব, এবং আইন লঙ্ঘনের মতো। এ কারণে জনগণের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা কমে গেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন পুলিশের প্রতি এমন মনোভাব তৈরি হয়েছে এবং আমাদের কি মনোভাব হওয়া উচিত?বাংলাদেশে পুলিশের প্রতি খারাপ মনোভাব তৈরির পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যেগুলি সমাজে অপরাধ এবং আইনশৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করেছে। তার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো: পুলিশের অনেক কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক প্রভাবের মধ্যে পড়ে। রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় আসার পর পুলিশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং প্রভাব বৃদ্ধি পায়, যা পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং সঠিকভাবে কাজ করার সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিছু সময় পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ব্যবহার করা হয়, ফলে জনগণ পুলিশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করতে পারে না। বাংলাদেশে পুলিশের মধ্যে দুর্নীতি এক বড় সমস্যা। অনেক সময় পুলিশ সদস্যরা টাকা আদায়ের জন্য বা স্বার্থে পক্ষপাতিত্ব করে থাকে। কিছু সদস্য ব্যক্তিগত স্বার্থে আইন ভঙ্গ করেন এবং দুর্নীতির মাধ্যমে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করেন, যা পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার অভাব তৈরি করে।
কিছু পুলিশ সদস্যের অপরাধী চক্রের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে, যা তাদের নৈতিকতা এবং কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রশ্ন তোলে। এসব কর্মকাণ্ড পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস করে। কখনো কখনো পুলিশের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং দক্ষতার অভাব হয়। এর ফলে অনেক পুলিশ সদস্য তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে না, যা জনগণের মধ্যে পুলিশের প্রতি ক্ষোভ এবং হতাশা তৈরি করে। অনেক সময় পুলিশ অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে, যা গণতান্ত্রিক সমাজে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণের অধিকার ও স্বার্থের প্রতি যদি পুলিশ সঠিকভাবে মনোযোগ না দেয়, তবে এটি তাদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।
এমন পরিস্থিতির পরেও, পুলিশের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। পুলিশ রাষ্ট্রের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তাদের ভূমিকা সমাজে অপরাধ রোধ এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পুলিশের প্রতি আমাদের মনোভাব হওয়া উচিত দায়িত্বশীল, ন্যায়নিষ্ঠ, এবং পেশাদারিত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:
পুলিশ বাহিনীকে একটি পেশাদার সংগঠন হিসেবে দেখার চেষ্টা করতে হবে। তাদের কাজের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাদের প্রতি আস্থা ও সহযোগিতা প্রদর্শন করা উচিত।
আইন ও পুলিশের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল মনোভাব থাকতে হবে। পুলিশের কাজকে বুঝতে পারলে এবং তাদের দিক থেকে আইন ও শৃঙ্খলার প্রতি দায়িত্বশীল মনোভাব গড়ে তুললে তারা তাদের কাজ সহজে করতে পারবে এবং সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। পুলিশকে তাদের কাজ করতে সহায়তা করা উচিত। তাদের কাজকে বোঝা এবং প্রয়োজনীয় সময়ে সহযোগিতা প্রদান করা, তাদের সক্ষমতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো আমাদের দায়িত্ব। জনগণের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক ভালো হলে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে। যদি কখনো পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য ভুল করেন, তবে তা সমালোচনা ও প্রতিবাদ করা যেতে পারে। কিন্তু তা করার সময় আমাদের সুশীল ও আইনি উপায়ে তা করা উচিত। পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য যদি আইন ভঙ্গ করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে, পুরো বাহিনীকে একমাত্রিকভাবে নেতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না। পুলিশের ভূমিকা, যেমন জনগণের নিরাপত্তা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, সুশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা—এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা, সুতরাং পুলিশ ব্যতীত আমরা সমাজে শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারব না। পুলিশ একটি রাষ্ট্রের এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা সমাজের প্রতিটি স্তরে আইন এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করে। পুলিশ না থাকলে: আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের ওপর থাকে। পুলিশ না থাকলে অপরাধীদের মুক্ত reign চলবে এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এতে মানুষ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হবে।
পুলিশ জনগণের আস্থা অর্জন করে এবং নিরাপত্তা দেয়। পুলিশ যদি ঠিকমতো কাজ না করে বা না থাকে, তবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেবে।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধী চক্রের মোকাবিলা করতে পুলিশ ছাড়া কোনো পদ্ধতি সফল হতে পারে না। পুলিশ কর্তৃপক্ষ না থাকলে অরাজকতা, দুর্নীতি এবং ভ্রষ্টাচার ছড়িয়ে পড়বে, যা দেশের শান্তি এবং অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। অতএব, পুলিশ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যার মাধ্যমে আমরা শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং আইনসম্মত সমাজ উপভোগ করতে পারি। পুলিশ বাহিনী যদি নিরপেক্ষভাবে, পেশাদারিত্বের সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে, তবে সমাজের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। তাই, পুলিশের প্রতি আমাদের মনোভাব গঠন করা উচিত দায়িত্বশীল, সহায়ক এবং সমালোচনামূলক, যাতে তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট