1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৯:০৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা বালুকাবেলার আত্মঘোষণা: যেখানে সাংবাদিকতা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের কবিতা চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের ঐক্য উৎসব পারকি সৈকতে গড়লো অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবিতে আনোয়ারায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ! “বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি প্রতিহিংসার বহি প্রকাশ কিনা???

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১০২ বার পড়া হয়েছে

বিবেকের আদালতে বিচার দাবীঃ-১
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি প্রতিহিংসার বহি প্রকাশ কিনা???

বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আজ আমাদের মাঝে নেই। আমি এমন একটি সময়ে লেখাটি লিখতে বসেছি, কিন্তু তাকে ফিরিয়ে আনা যাবে না। আজকের সময় এসেছে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় কার্যকর বিষয়ে পর্যালোচনা করার। তবে বিষয়টি আদালতে রায়ের মাধ্যমে যেহেতু মীমাংসিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে এই রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করা আমার কোনো এখতিয়ার নেই। মন্তব্যটি সরাসরি আদালত অবমাননার হিসেবে গণ্য হবে। তাই আমি আদালতের বিচারকে সম্মান জানিয়ে আদালতের বিচার অস্বীকার করা কোনো সুযোগ নেই। তাকে আদালতের বিচার মেনে নিয়ে এই লেখাটি শুধুমাত্র বিবেকের আদালতে উপস্থাপন করছি। আমরা জানি, বিগত সরকার যুদ্ধাপরাধীদের মানবতা অপরাধের অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করে মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে কয়জনকে ফাঁসি রায়ের মাধ্যমে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করেছে, তাদের মধ্যে একজন হলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তার পারিবারিক ও রাজনৈতিক পরিচয় নতুনভাবে উপস্থাপন করার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পিতা ছিলেন অবিভক্ত পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। তিনি মুসলিম লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা। সেই মুসলিম লীগের রাজনীতি মনেপ্রাণে ধারণ করে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, যা ইতিহাসে স্বীকৃত। এই ফজলুল কাদের চৌধুরী ১৯১৯ সালে চট্টগ্রামের রাউজান গহিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালে গোপালগঞ্জের টঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ফজলুল কাদের চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর এক বছরের সিনিয়র হলেও রাজনৈতিকভাবে সিনিয়র ছিলেন বেশ কয়েক বছরের। সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরাসরি নেতা ছিলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী। শেখ মুজিবুর রহমান ফজলুল কাদের চৌধুরীর অধীনে রাজনীতি করেছেন অবিভক্ত ভারত ও পাকিস্তানের। বিশেষ করে ভারত থেকে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে রাজনৈতিক ও পারিবারিক সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর রাজনৈতিক মতাদর্শে কিছু ভিন্নতা এলেও তাদের পারিবারিক সম্পর্ক অটুট ছিল, যা ইতিহাসের পাতায় স্পষ্ট। বঙ্গবন্ধু কখনোই সেই সম্পর্কের ভাঙ্গন প্রত্যাশা করেননি। পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হলেও তাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ভিত্তি শক্ত ছিল।১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলস্বরূপ স্বাধীনতার ঘোষণা আসলে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যার ইতিহাস আমরা সকলেই জানি। তবে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণার এক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হন এবং তিনি প্রায় ১০ মাস পাকিস্তান কারাগারে আটক ছিলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে বাস্তব চিত্র সচক্ষে না দেখলেও, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও ভারত হয়ে ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি মুক্তি পাওয়ার পর দেশ গড়ার কাজে লিপ্ত হন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রের সর্বক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। এ সময় রাজাকার, আলবদর ও যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা ও বিচার কার্যক্রম কিছুটা সম্পন্ন করেছিলেন।এখানে উল্লেখ্য যে, ফজলুল কাদের চৌধুরীকে বঙ্গবন্ধু সরাসরি গ্রেপ্তার করেননি; তিনি আনোয়ারা হয়ে নৌকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়েন। পরবর্তীতে তাকে আটক করা হয় এবং তিনি কারাগারে হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুবরণ করেন, যার ইতিহাস ভিন্নতর।এখন জাতির সামনে প্রশ্ন উঠছে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী কি যুদ্ধাপরাধী ছিলেন? সালাউদ্দিন কাদেরের পক্ষে যুক্তি হলো, তিনি যুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশে ছিলেন না; বরং পাকিস্তানে। এই যুক্তি আদালতে বিচারাধীন, এবং প্রশ্নগুলো এখনো অবিমাশিত অবস্থায় রয়ে গেছে। যদি সালাউদ্দিন কাদের ও ফজলুল কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী হয়ে থাকেন, তাও স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফজলুল কাদের চৌধুরীর জব্দকৃত সকল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য ফিরিয়ে দেন এবং তার পরিবারকে আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করেন।
১৯৭৪ সালে সালাউদ্দিন কাদের পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসেন, পরবর্তীতে তিনি লন্ডনে চলে যান। আবার ৮০ দশকে দেশে ফিরে এসে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুসলিম লীগ, জাতীয় পার্টি, এবং পরবর্তীতে এনডিপি গঠন করেন এবং ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সাথে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও পারিবারিকভাবে তাদের সখ্যতা ছিল। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির বহিষ্কারকৃত নেতা ছিলেন। ২০০০ সালে গনিবেকারিস্হ সালাউদ্দিন কাদেরের বাসভবনের পাহাড়ের নিচে তখনকার ছাত্রদলের মহানগরের নেতা নিঠুল দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। তখন নিঠুল হত্যার মামলায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে আসামি করা হয় এবং সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান নিজেই কোতুয়ালি থানায় উপস্থিত ছিলেন।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রেফতার এবং কোতোয়ালি থানার ঘটনাবলী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট একটি হত্যা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোতোয়ালি থানার পুলিশ তার গুডস হিলের বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়। গ্রেফতারের সময় পুলিশ বেশ কয়েকটি বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার দেখায়। সালাউদ্দিন কাদেরের গ্রেফতারির খবর দেশে-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। শত শত সাংবাদিক এবং হাজার হাজার উভয় পক্ষের নেতাকর্মী কোতোয়ালি থানায় ভিড় জমায়।
এই ঘটনাটি যেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি রাজনৈতিক লড়াইয়ের রূপ ধারণ করে। সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান নিঃঠুল হত্যার মামলার পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অন্যদিকে ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। সবাই অপেক্ষা করছিলেন—কে জিতবে এই লড়াইয়ে? তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন সিদ্ধান্তের মূলে অবস্থান করছিলেন। বিস্ময়করভাবে শেখ হাসিনার ভূমিকায় জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে যখন দেখা যায় তিনি জয়ের পতাকা সালাউদ্দিন কাদেরের হাতে তুলে দেন। এই রহস্যজনক ভূমিকার বিস্তারিত কখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে সেই সময় সালাউদ্দিন কাদেরের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত তার পক্ষে দাঁড়িয়ে এ ঘটনা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি সালাউদ্দিন কাদেরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার বিপক্ষের কৌশলী হিসেবে ট্রাইবুনালে উপস্থিত হন।গ্রেফতারের পর কোতোয়ালি থানায় আটক অবস্থায় সালাউদ্দিন কাদেরকে কীভাবে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়েছিল, সেটাও তাৎপর্যপূর্ণ। শেখ হাসিনার নির্দেশে তার সম্মান রক্ষায় নজরদারি রাখা হয় এবং থানায় তাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পৃথক একটি ভিআইপি কক্ষে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তখন কোতোয়ালি থানায় এয়ার কন্ডিশনের ব্যবস্থা ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তৎক্ষণাৎ তার কক্ষে শীতাতপ যন্ত্র সংযোজন করা হয়।
এরপর আদালতে শুরু হয় আইনি লড়াই…
চলবে—–

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট