“Life is truly strange.
We bring nothing with us,
Yet we fight to make everything our own,
In the end, we leave everything behind.”
“জীবন সত্যিই বড়ই অদ্ভুত। আমরা কিছুই সঙ্গে নিয়ে আসি না, অথচ সবকিছু নিজের করে পাওয়ার জন্য নিরন্তর লড়াই করি। অবশেষে, সবকিছু রেখে চলে যাই।”
আজ সকালে ফেসবুকে এই কথাগুলো পেলাম। মাত্র কয়েকটি শব্দের মধ্যে কত গভীর অর্থ লুকিয়ে আছে! এর ওপর ভিত্তি করে সহস্র পৃষ্ঠা লেখা যায়, কিন্তু এই অল্প কথাগুলোর ভেতর ডুবে গেলে বুঝতে পারি—এই পৃথিবীতে আমরা যা কিছু করি সাময়িক সুখের জন্য, তা আসলে আমাদের কোনো কাজে আসে না।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার লুটপাটের সংবাদ দেখে মনে হয়, আমরা কোথায় আছি? লজ্জা হয়—এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে এত কিছু পাওয়ার লড়াইয়ের প্রয়োজনই বা কী? যদি একবার রাতের আকাশের নীচে ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের দিকে তাকাই, তবে আমাদের লোভ-লালসার হিসেব মিলিয়ে যাবে। কেন এত কিছু অর্জন করার জন্য লড়াই করব?
এই প্রশ্ন নিয়েই আজকের লেখাটি উপস্থাপন করছি।
জীবনের এই চক্রটি প্রতিটি মানুষের জন্যই এক অভিজ্ঞতার পাঠশালা। আমরা শূন্য হাতে আসি, কিন্তু আমাদের প্রয়োজনের তালিকা কখনও শেষ হয় না। প্রতিটি চাওয়া, প্রতিটি আকাঙ্ক্ষা যেন আমাদের লড়াইয়ের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়ায়। জীবনের মানে খুঁজতে গিয়ে আমরা অনেক সময় ভুলে যাই, এই সংগ্রামের উদ্দেশ্যটা আসলে কী। কিছু পাওয়ার জন্য লড়াই করতে করতে আমরা যখন তা অর্জন করি, তখনই যেন আরও কিছু পাওয়ার ইচ্ছা জন্ম নেয়। এই অশেষ চাহিদা আমাদের অস্থির করে তোলে, ক্লান্ত করে দেয়। আমরা ভুলে যাই, জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য শুধুই অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা অনুভবের মধ্যে নিহিত। মানুষের আসল সম্পদ কি? আমাদের সম্পর্ক, ভালোবাসা, শান্তি, এবং ত্যাগের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আমাদের জীবনের সত্যিকারের মূল্য। অর্থ, খ্যাতি, ক্ষমতা—এসব সাময়িক। কিন্তু যাদের জীবন ভালোবাসা ও আদর্শের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাদের কীর্তি চিরকাল বেঁচে থাকে।
তাই, হয়তো আমাদের এই সত্য মেনে নিতে হবে যে সংগ্রাম জীবনের অংশ, কিন্তু সেই সংগ্রামে মগ্ন হয়ে প্রকৃত সুখের পথকে হারানো যাবে না। জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে যখন সব কিছু ছেড়ে যেতে হবে, তখন যদি মনে হয়, যা কিছু চেয়েছিলাম, তা পেয়েও আসলে কিছুই পাইনি—তখন সেই অনুভূতি বড্ড কষ্টকর। তাই এখন থেকেই হয়তো উচিত, প্রতিটি মুহূর্তকে, প্রতিটি সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে দেখা, এবং চাওয়া-পাওয়ার দৌড়ে না হারিয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির পথে চলা। শেষমেশ সব ফেলে যেতে হয়, কিন্তু কী রেখে যাওয়া যায়? রেখে যেতে হয় ভালোবাসা, রেখে যেতে হয় স্মৃতি, এবং রেখে যেতে হয় এমন কিছু কাজ, যা মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে—যে সংগ্রাম শুধু নিজের জন্য নয়, মানুষের জন্য, মানবতার জন্য। জীবনের এই চক্রটি প্রতিটি মানুষের জন্যই এক অভিজ্ঞতার পাঠশালা। আমরা শূন্য হাতে আসি, কিন্তু আমাদের প্রয়োজনের তালিকা কখনও শেষ হয় না। প্রতিটি চাওয়া, প্রতিটি আকাঙ্ক্ষা যেন আমাদের লড়াইয়ের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়ায়। জীবনের মানে খুঁজতে গিয়ে আমরা অনেক সময় ভুলে যাই, এই সংগ্রামের উদ্দেশ্যটা আসলে কী। কিছু পাওয়ার জন্য লড়াই করতে করতে আমরা যখন তা অর্জন করি, তখনই যেন আরও কিছু পাওয়ার ইচ্ছা জন্ম নেয়। এই অশেষ চাহিদা আমাদের অস্থির করে তোলে, ক্লান্ত করে দেয়। আমরা ভুলে যাই, জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য শুধুই অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা অনুভবের মধ্যে নিহিত। মানুষের আসল সম্পদ কি? আমাদের সম্পর্ক, ভালোবাসা, শান্তি, এবং ত্যাগের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আমাদের জীবনের সত্যিকারের মূল্য। অর্থ, খ্যাতি, ক্ষমতা—এসব সাময়িক। কিন্তু যাদের জীবন ভালোবাসা ও আদর্শের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাদের কীর্তি চিরকাল বেঁচে থাকে।
তাই, হয়তো আমাদের এই সত্য মেনে নিতে হবে যে সংগ্রাম জীবনের অংশ, কিন্তু সেই সংগ্রামে মগ্ন হয়ে প্রকৃত সুখের পথকে হারানো যাবে না। জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে যখন সব কিছু ছেড়ে যেতে হবে, তখন যদি মনে হয়, যা কিছু চেয়েছিলাম, তা পেয়েও আসলে কিছুই পাইনি—তখন সেই অনুভূতি বড্ড কষ্টকর। তাই এখন থেকেই হয়তো উচিত, প্রতিটি মুহূর্তকে, প্রতিটি সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে দেখা, এবং চাওয়া-পাওয়ার দৌড়ে না হারিয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির পথে চলা। শেষমেশ সব ফেলে যেতে হয়, কিন্তু কী রেখে যাওয়া যায়? রেখে যেতে হয় ভালোবাসা, রেখে যেতে হয় স্মৃতি, এবং রেখে যেতে হয় এমন কিছু কাজ, যা মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে—যে সংগ্রাম শুধু নিজের জন্য নয়, মানুষের জন্য, মানবতার জন্য। এই পৃথিবী মিছে হলেও মানুষ যেন প্রতিনিয়ত তার নিজস্ব শক্তি, ক্ষমতা, আর অহংকারের এক অন্ধকার লড়াইয়ে নিমগ্ন। ক্ষমতার মায়াজাল মানুষকে ভুলিয়ে দেয় তার অস্তিত্বের ক্ষণস্থায়ীতা। শেখ হাসিনার মতো অনেক নেতা এবং শাসক যখন ক্ষমতার চূড়ায় আরোহন করেন, তখন তারা নিজেদের অপরিহার্য ভাবতে শুরু করেন। তাদের ভেতরে জন্ম নেয় এক ধরনের অহংকার, যা তাদের মানবিক দিকগুলোকে ধ্বংস করে দেয়।
আমরা দেখতে পাই, শেখ হাসিনার মতো নেতাদের জীবনবোধ যেন ক্ষমতার আসনে বসেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। একসময় যে মানুষ ছিল সাধারণ, যে এক কাপড়ে ভাত খেয়ে দিন কাটাত, তার আজ পৃথিবীর চাবিকাঠি হাতে থাকা সত্ত্বেও শান্তি নেই। এই অহংকার, এই ক্ষমতার নেশা তাকে প্রতিনিয়ত ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে। অথচ আল্লাহ বলেছেন, মানুষ মাটির সৃষ্টি—এই মাটিতেই তাকে ফিরে যেতে হবে। তাহলে কেন এত অহংকার? কেন এত ক্ষমতার লোভ? এটা মনে রাখতে হবে, যে অহংকার মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়, তার ফল সবসময়ই কষ্টকর। আমরা কুরআনে দেখি, আল্লাহ অহংকারী মানুষকে কখনোই ভালোবাসেন না। তিনি বলেছেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী এবং আত্মতুষ্ট মানুষদের পছন্দ করেন না।” (সুরা লুকমান: ১৮)
এ আয়াতের মধ্যে লুকিয়ে আছে আমাদের জন্য এক বিশাল শিক্ষা। অহংকার মানুষকে যে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়, তা কেবল তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। ইতিহাস সাক্ষী, যত বড় বড় শাসক, যত ক্ষমতাশালী রাজা—সবাই এক সময় নিঃস্ব হয়ে গেছে, ক্ষমতা আর অহংকারের তাণ্ডবে তারা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করেছে।
ক্ষমতার লড়াই এই মিছা পৃথিবীর একটি প্রাচীন অভিশাপ। আজকে যারা ক্ষমতায় আসীন, কাল তারা স্মৃতির আড়ালে হারিয়ে যাবে। শেখ হাসিনার মতো নেতারাও একসময় বুঝতে পারবে, তাদের অহংকার, তাদের ক্ষমতা সবই মাটির নিচে চাপা পড়ে যাবে। দিনশেষে, সবাইকে সেই এক কাপড়ে ফিরতে হবে—যে কাপড়ে আসলে কোনো ক্ষমতা বা অহংকার থাকে না, থাকে শুধু আল্লাহর বিধানের সামনে আত্মসমর্পণ। তাই, যতক্ষণ সময় আছে, আমাদের উচিত ক্ষমতা আর অহংকারের লড়াই ত্যাগ করে মানবতার সেবা করা, আল্লাহর সামনে বিনয়ী থাকা। আজ আমরা যাদের রাজা ভাবি, তারা কালকের ফকিরে পরিণত হবে—এটাই পৃথিবীর অনিবার্য নিয়ম।
লেখকঃ সাংবাদিক, গবেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক।