পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শিল্পকলা একাডেমি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও দীর্ঘ পাঁচ দশক পেরিয়ে গেছে — আজও প্রতিষ্ঠানটি আধুনিকায়নের কোনো ছোঁয়া পায়নি। ফলে একাডেমির সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এখন চরম অবহেলা, অদক্ষতা ও অনুদানহীনতার গহ্বরে নিঃশেষের পথে।
প্রশিক্ষণের জন্য নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, নেই আধুনিক বাদ্যযন্ত্র, নেই পরিবেশ উপযোগী ভবন। একাডেমির বর্তমান ভবন এখনো টিনশেডের অস্থায়ী কাঠামো, যা প্রশাসনিক উদাসীনতার দৃষ্টান্তস্বরূপ। একাধিকবার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবায়নের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি।বর্তমানে মাত্র দুইজন শিক্ষক — কার্তিক বাবু ও গাজী সোহরাফ হোসেন — সাপ্তাহিক দুই দিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার গান শেখানোর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে পরিবেশ, যন্ত্রপাতি ও মানসম্মত প্রশিক্ষকের অভাবে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। একসময় যে প্রতিষ্ঠানটি ছিল স্থানীয় প্রতিভা বিকাশের উর্বর ভূমি, আজ তা শুধুই নামমাত্র অস্তিত্বে ঝুলে আছে। স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সচেতন নাগরিকেরা একে সাংস্কৃতিক মৃত্যুর পূর্বাভাস হিসেবে দেখছেন। তারা বলেন, সরকার যদি অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ না নেয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সংস্কৃতি চর্চা থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাদের মতে, একটি উপজেলা সদরের শিল্পকলা একাডেমির যে ন্যূনতম পরিকাঠামো ও উপকরণ থাকা উচিত, গলাচিপা একাডেমিতে তার ছিটেফোঁটাও নেই। তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন — অবিলম্বে একাডেমির জন্য আধুনিক বাদ্যযন্ত্র সরবরাহ, অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ, এবং একটি পূর্ণাঙ্গ মানসম্পন্ন ভবন নির্মাণ করে এখানে সংস্কৃতি চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যথায়, গলাচিপা শিল্পকলা একাডেমি হারিয়ে যাবে শুধুই ইতিহাসের পাতায় — সংস্কৃতির নয়, ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার নিদর্শন হয়ে।