1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
মাদুরোর সঙ্গে ফোনালাপের কথা নিশ্চিত করলেন ট্রাম্প, মার্কিন হামলার প্রস্তুতির নিন্দা ভেনেজুয়েলার ক্যালিফোর্নিয়ায় বন্দুকধারীর গুলিতে শিশুসহ নিহত ৪, আহত ১১ শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়া’য় প্রাণহানিতে প্রধান উপদেষ্টার শোক সশস্ত্র বাহিনীর বঞ্চিত সদস্যদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বোদায় ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল ও ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচী শোকসংবাদ সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ৫ জানুয়ারি হাসিনার ৫, রেহানার ৭ ও টিউলিপের ২ বছরের কারাদণ্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়া  সাদ্দাম হত্যার প্রধান আসামি  দেলোয়ার হোসেন দিলীপ ও বাবুলক গ্রেফতার  পঞ্চগড় আদালতে বিচার প্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য নির্মাণ করা হলো “স্বস্তি চত্বর”

পটিয়ার ওসির অপসারণ ও পুলিশের জুলুমের প্রতিবাদে উত্তাল চট্টগ্রাম

মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও জনি
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

পটিয়ার ওসির অপসারণ ও পুলিশের জুলুমের প্রতিবাদে উত্তাল চট্টগ্রাম: ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির সড়ক অবরোধ”

চট্টগ্রামে ফের চাপে পুলিশ প্রশাসন। নাগরিক অসন্তোষ ও তরুণদের প্রতিবাদে এবার সরাসরি ঘিরে ফেলা হলো পুলিশের শীর্ষ কার্যালয়। পটিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা অবিচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ অবশেষে বিস্ফোরিত হলো সড়কে। বুধবার (২ জুলাই) চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যৌথভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ জাকির হোসেন সড়ক অবরোধ করে দাবি তোলে—পটিয়ার ওসিকে অপসারণ করতে হবে, দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংঘর্ষের সূচনালগ্ন:
গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে পটিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ—উক্ত ব্যক্তি নিয়মিত স্থানীয় পর্যায়ে ভয়ভীতি, হামলা ও দখলবাজির সঙ্গে জড়িত। আন্দোলনকারীরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলে পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, ফলে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এখান থেকেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
রাত সাড়ে ৯টা এবং সাড়ে ১১টায় পটিয়া থানার ভেতরে ও বাইরে দুই দফা সংঘর্ষ ঘটে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে। উভয়পক্ষের ১৯ জন আহত হন বলে জানা গেছে। এরপরই ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পটিয়া থানা ঘেরাও করে এবং পরদিন নগরীতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
ডিআইজি কার্যালয় ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ:
বুধবার দুপুর ৩টায় নগরীর খুলশী এলাকায় চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন শতাধিক আন্দোলনকারী। তারা ‘দখলদার পুলিশ হটাও’, ‘ওসি পটিয়া অপসারণ করো’, ‘জুলুমবাজদের বিচার চাই’—এমন বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তোলে এলাকা।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তারা জাকির হোসেন সড়ক পুরোপুরি অবরোধ করে দেয়। এতে নগরের গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় যান চলাচল একপ্রকার থমকে যায়।
ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের শান্ত করতে চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা দাবি জানায়—ডিআইজি নিজে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং পরিস্কার প্রতিশ্রুতি দেবেন।
দাবিগুলোর বিবরণ:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব সাজ্জাদ হোসাইন বলেন,
“গত বছরের জুলাই মাসেও আমাদের কর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনার বিচার হয়নি। এবার একই কায়দায় আমাদের কর্মীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। একজন ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরও পুলিশ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। আমরা এ অবিচারের বিচার চাই। শুধু পটিয়ার ওসিকেই নয়, ওই রাতে দায়িত্বে থাকা সব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত ডিআইজি স্বশরীরে এসে আমাদের সঙ্গে কথা না বলবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”
পুলিশের অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া:
ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা সংযম প্রদর্শন করছেন এবং কোনো উস্কানিতে সাড়া দিচ্ছেন না। তারা আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার আহ্বান জানান।
জনদুর্ভোগ:
ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধের ফলে জাকির হোসেন রোডসহ নগরীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে যানজট সৃষ্টি হয়। অফিসগামী মানুষ, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও আন্দোলনকারীরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন—“এই প্রতিবাদ দেশেরই স্বার্থে। আজ আমরা না দাঁড়ালে কাল কেউ দাঁড়াতে পারবে না।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
এনসিপির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক জনি বলেন,
“আমরা আইন ও শৃঙ্খলা বাহিনীর শত্রু নই, কিন্তু অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোও আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পুলিশের যে অংশটি জুলুম-দুর্নীতি করে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এটি সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করতেও গুরুত্বপূর্ণ।”
ভবিষ্যৎ কর্মসূচি:
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা নগরব্যাপী গণঅবস্থান, মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচির মতো আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন।
উপসংহার:
চট্টগ্রামের পটিয়ায় যে ঘটনার সূত্র ধরে এই বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ, তা শুধুই স্থানীয় কোনো তুচ্ছ বিবাদ নয়। এটি দেশের তরুণ প্রজন্মের ভেতরে জমে থাকা ক্ষোভ ও অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রতীক হয়ে উঠছে। প্রশাসনের দায়িত্ব এখন—এই দাবিগুলোর প্রতি সাড়া দিয়ে ন্যায় ও স্বচ্ছতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট