1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

৮০ হাজারি হারুন: পুলিশের ব্যাজ, দুবাইয়ের ব্যাংক, আর আমেরিকার বিলাসিতা!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে

সম্পাদকের টেবিল থেকেঃ
“৮০ হাজারি হারুন: পুলিশের ব্যাজ, দুবাইয়ের ব্যাংক, আর আমেরিকার বিলাসিতা”

একটা সময় ছিল, যখন পুলিশের ইউনিফর্ম গায়ে চড়ালে মানুষ বুক চিতিয়ে বলত—”এই তো, দেশের রক্ষক!” কিন্তু কিছু ‘বিশেষ’ কর্মকর্তা এমন কীর্তিকলাপ করেছেন যে এখন পুলিশের নাম শুনলে মানুষ ভাবে—”এই বুঝি আরেকটা হারুন সাহেব এল!”
হ্যাঁ, বলছি সেই ডিআইজি হারুনের কথা। নামের আগে ‘ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (DIG)’ থাকলেও, তার আসল পরিচয় বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে কলঙ্কিত চরিত্রগুলোর একটি। যে মানুষটা ৮০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে এমন এক সম্পদের পাহাড় গড়লেন, যা দেখে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরাও অবাক হয়ে বলেন—”ভাই, এই লোকের কাছে শিখতে হবে!”
আজ তিনি আমেরিকায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। অথচ, একসময় ছিলেন শেখ হাসিনার সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোকদের একজন। কিন্তু বাস্তবতা এমনই নিষ্ঠুর—যে পুলিশরা ক্ষমতাকে ঢাল বানিয়ে অন্যায় করেছে, তারা এখন নিজেরাই বিশ্ব রাজনীতির দাবার গুটির মতো ছিটকে পড়ছে।
হারুনের উত্থান: ‘গোল্ডেন বয়’ থেকে ‘ব্ল্যাক মানি বয়’
ডিআইজি হারুনের উত্থান একটা সিনেমার চেয়েও রোমাঞ্চকর! পুলিশের চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই তিনি ছিলেন ‘বিশেষ কোটার’ লোক। শেখ হাসিনার শাসনে নিজের অবস্থান পোক্ত করতে গিয়ে বিরোধী দল দমন, ব্যবসায়ীদের হয়রানি, চাঁদাবাজি, এবং দুর্নীতির নতুন এক সংস্কৃতি চালু করেন।
তার নাম শুনলেই মনে পড়ে—
ব্যবসায়ীদের ধরে নিয়ে পেটানো প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বেপরোয়া ক্ষমতার অপব্যবহার কিন্তু ইতিহাস বলে, ক্ষমতার জোরে দুর্নীতি চিরকাল চলে না। অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য: বেতন ৮০ হাজার, কিন্তু সম্পদ বিলিয়ন ডলার! হারুন সাহেবের সরকারি বেতন ছিল ৮০ হাজার টাকা। অথচ, তার নামে নিউ ইয়র্ক, দুবাই, সিঙ্গাপুর, কানাডা, আর ঢাকায় একাধিক বাড়ি, প্লট, রেস্টুরেন্ট, এবং ব্যবসা রয়েছে। নিউ ইয়র্কে ৫ মিলিয়ন ডলারের বাড়ি:
যেখানে বসে তিনি হাসেন—”হায় হায়, বাংলাদেশে আমার নামে কী সব নিউজ হচ্ছে!” দুবাইতে ১০ মিলিয়ন ডলারের মানি এক্সচেঞ্জ ও ব্যবসা: এখান থেকে টাকা সাদা-কালো হয়, তারপর আমেরিকায় যায়!
উত্তরায় ১০-১৫টি বাড়ি:
যেখানে ভাড়াটিয়ারা টাকা জমা দেয়, কিন্তু জানে না মালিক আসলে প্রাক্তন এক পুলিশ অফিসার!
গাজীপুরে রিসোর্ট, ফ্যাক্টরি ও প্লট:
এই জায়গাগুলো এমনভাবে দখল করা হয়েছে যে মালিকরাও কেঁদে বলেছে—”ভাই, আমাদেরটাও একটু রেখে দেন!”
ডিআইজি হারুনের কীর্তি: শেখ হাসিনার জন্য ‘ব্যুমেরাং’!
এক সময় শেখ হাসিনার ‘বিশ্বস্ত ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এই হারুন, বিরোধীদের পুলিশি নির্যাতন চালিয়ে সরকারের জন্য এক ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন।
বিরোধীদের পেটানোর ‘স্পেশালিস্ট’ ছিলেন তিনি!
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করতেন ‘তদন্তের’ নামে!
ক্ষমতার দাপটে যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতেন!
কিন্তু সময় বদলায়। আজ শেখ হাসিনার সরকারই সেই পুলিশদের কারণে রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে! যারা একসময় ‘ডান্ডা মেশিন’ চালিয়ে আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছিল, তারা এখন দুর্নীতির কারণে নিজেরাই ‘লুটেরা’ তকমা নিয়ে দেশ ছাড়ছে!
পালানোর কৌশল: পুলিশ থেকে ‘অপরাধী’ হয়ে আমেরিকা গমন!
হারুন সাহেব জানতেন, তার সময় ফুরিয়ে আসছে। তাই তিনি আগেভাগেই নিজের সব সম্পদের কাগজপত্র গোছালেন, টাকা দুবাই পাঠালেন, এবং ঠিক ‘সময়মতো’ আমেরিকায় পাড়ি জমালেন। বাংলাদেশে যখনই কেউ বলে—”হারুন কোথায়?”
তখন উত্তর আসে—”ভাই, উনি এখন আমেরিকায়!”
এই ঘটনা থেকে শেখার মতো কিছু বিষয়:
বাংলাদেশে দুর্নীতি করে, ক্ষমতা ব্যবহার করে সম্পদ বানিয়ে, শেষমেশ আমেরিকায় পালানো একটা নতুন ট্রেন্ড!
আইনের শাসন না থাকলে, একদিন অপরাধীরাই দেশ চালাতে শুরু করে!
যে পুলিশ জনগণের রক্ষক হওয়ার কথা, তারা যখন লুটেরা হয়, তখন শেখ হাসিনার মতো নেতাদেরও মুখ লুকাতে হয়!
শেষ কথা: আজ হারুন কোথায়, কাল কে হারাবে?
ডিআইজি হারুন এখন আমেরিকায়! বাংলাদেশের মাটিতে যখন কেউ তার নাম নেয়, তখন মনে পড়ে—”এটা তো পুলিশের ব্যাজ পরা এক ভয়ংকর ডাকাত ছিল!”
শেখ হাসিনার সরকার আজ যে সংকটে পড়েছে, তার একটা বড় কারণ এমন কিছু হারুনদের অপকর্ম। যে পুলিশ একসময় বিরোধী দল দমন করত, সেই পুলিশ আজ সরকারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
একটা কথাই মনে হয়—
হারুন তো পালিয়ে গেল, কিন্তু বাংলাদেশে আরও কত ‘হারুন’ লুকিয়ে আছে?
ডিআইজি হারুন: নারীলোভী এক পুলিশ অফিসারের ‘ডার্টি গেম’!
বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে কিছু “বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন” কর্মকর্তা আছেন, যারা জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে নিজেদের ব্যক্তিগত ‘আমোদ-প্রমোদের’ ব্যবস্থা করতে বেশি ব্যস্ত থাকেন। এই বিশেষ প্রজাতির পুলিশদের মধ্যে ডিআইজি হারুন একেবারে ফার্স্ট ক্লাস নমুনা! আমাদের দেশে ডিআইজি মানেই শৃঙ্খলাপরায়ণ, সৎ, এবং কঠোর দায়িত্বশীলতা। কিন্তু হারুন? তিনি পুলিশের ইউনিফর্মকে নিজের ব্যক্তিগত ‘প্লেজার জ্যাকেট’ বানিয়ে নিয়েছিলেন। শুধু চাঁদাবাজি আর নির্যাতন করেই সন্তুষ্ট ছিলেন না, নারী সংক্রান্ত কেলেঙ্কারিতেও ছিলেন এক নম্বর!
হারুন: পুলিশের ব্যাজ পরে ‘ডন জুয়ান’! ডিআইজি হারুনের নারী সংক্রান্ত নেশা কোনো সাধারণ বিষয় ছিল না, বরং সেটা ছিল ‘সিরিয়াল অপরাধী’ পর্যায়ের।
নারী সহকর্মীদের হয়রানি করতেন:
পুলিশ সদর দফতরের নারী কর্মকর্তারা তাকে ভয় পেতেন। কেউ প্রতিবাদ করলে, তাদের বাদ দেওয়া হতো, অথবা অন্য জায়গায় বদলি করা হতো।
সাধারণ নারীদের ভয় দেখিয়ে সম্পর্ক করতেন:
যেকোনো সুন্দরী নারী দেখলেই তার মাথায় ‘সরকারি ক্ষমতার বাতি’ জ্বলে উঠত। ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে, কিংবা ‘উন্নতির সুযোগ’ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের ফাঁদে ফেলতেন।
ভিআইপি প্রটেকশনের নামে নারী সঙ্গ:
অনেক ব্যবসায়ী বা রাজনীতিবিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে ‘ভিআইপি সিকিউরিটি’ নামে বিভিন্ন সুন্দরী নারীদের কাছে যাওয়ার ব্যবস্থা করতেন।
অফিসে ‘বিশেষ চেম্বার’ বানিয়েছিলেন:
নারী সহকর্মীদের সঙ্গে ‘একান্ত সময় কাটানোর’ জন্য নিজের অফিসে ‘সাউন্ডপ্রুফ চেম্বার’ রেখেছিলেন। যারা ঢুকত, তারা বেরিয়ে এসে হাসিমুখে কিছু বলত না, তবে চোখেমুখে আতঙ্ক লেগে থাকত।
মিডিয়া হ্যান্ডেলিং ও সত্য গুম:
কেউ যদি তার নারী সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুলত, তখনই মিডিয়ায় চাপ সৃষ্টি করে বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন। সাংবাদিকদের ভয় দেখাতেন, প্রয়োজনে টাকার প্রলোভনও দিতেন!
নারী নির্যাতন, বেয়াদবি, আর ক্ষমতার অপব্যবহার
হারুন শুধু নারী সংক্রান্ত কেলেঙ্কারিতেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক অহংকারী, বেয়াদব ও ক্ষমতালোভী ব্যক্তি, যার আচরণ ছিল নির্লজ্জ।
মিটিংয়ে উগ্র আচরণ:
যেকোনো মিটিংয়ে তার গায়ের জোর চলত। সিনিয়র অফিসারদের সামনেও ‘তুই-তোকারি’ করতেন, যেন তিনিই পুরো পুলিশের মালিক!
ব্যবসায়ীদের ‘টাকা না দিলে’ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো:
কেউ টাকা দিতে না চাইলে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে জেলে ঢুকিয়ে দিতেন! এমনকি অনেক নারী ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও অশ্লীল দাবি তুলতেন।
পুলিশ ফোর্সের মধ্যেও তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ:
অনেক পুলিশ সদস্যই মনে মনে চাইত, এই লোক যেন একদিন নিজের কর্মফল পায়।
অবশেষে ধরা খেলেন!
হারুনের মতো লোকদের বেলায় আইন সাধারণত লুকিয়ে থাকে! কারণ, তারা নিজেরাই আইনকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার অপকর্মের দলিলগুলো একে একে বের হতে শুরু করল।
তার অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু হলো।
নারী নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ সামনে এলো।
রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা কমতেই, সবাই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে লাগল।
অবশেষে যখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেল, তখন নিজেকে বাঁচানোর জন্যই আমেরিকায় পালিয়ে গেলেন! কিন্তু ইতিহাস বলে, পালিয়ে গেলেই বিচার এড়ানো যায় না।
শেষ কথা: হারুন একা নয়, আরও কত ‘হারুন’ বেঁচে আছে?
ডিআইজি হারুন আজ হয়তো আমেরিকায় বিলাসী জীবনযাপন করছেন, কিন্তু তার মতো পুলিশ বাহিনীতে আরও অনেক ‘হারুন’ আছে, যারা এখনো ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে জনগণের টাকায় ভোগ-বিলাস করছে।
প্রশ্ন হলো—আর কত দিন এসব ‘হারুন’ বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করবে?
সময় এসেছে, জনগণের টাকায় বেতন নেওয়া এইসব পুলিশ লুটেরাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার!
লেখকঃ যুগ্ম সম্পাদক, দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily banner,

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট