1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

ধানমন্ডি ৩২: স্বাধীনতার ইতিহাসের নিরব সাক্ষীর ধ্বংস

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৬ বার পড়া হয়েছে

স্বাধীনতার শত বছর পর যখন আমরা ইতিহাসের এই জীবন্ত স্মৃতিকে মনে করার চেষ্টা করব, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন, সংগ্রাম, এবং স্বাধীনতার ঘোষণা এবং তাকে সপরিবারে হত্যার সেই অজানা ইতিহাসের পাতা থেকে গল্প লিখতে চাইব। ঠিক সেই মুহূর্তে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এই বাড়ি আমাদেরকে মর্মস্পর্শীভাবে স্মরণ করিয়ে দেবে, কীভাবে এটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। তখন আমরা হাজারো প্রচেষ্টা করেও এই ইতিহাসের প্রাণকেন্দ্র, ৩২ নম্বরের সেই বাড়িটিকে আর ফিরে পাবো না।
এই বাড়ি একদিন আমাদেরকে অভিশাপ দিয়ে জানিয়ে দেবে”তোমরা অকৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি, তোমরা আমার বুকের ওপর জাতির পিতার রক্ত ছড়িয়েছো, আমাকে আগুনে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছো। আমি চিরকাল জ্বলতে জ্বলতে তোমাদের ইতিহাসের পাতায় থেকে গেছি, যেখানে ইতিহাসের মূল সত্ত্বা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে।”
এই বাড়িকে নিয়ে কিছু কথা লিখলাম, যার সুর হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়।
স্বাধীনতার ইতিহাসের সাক্ষী ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি আজ অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে তা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই বাঙালি জাতির ইতিহাসের চিহ্নটি আজ কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের হাতে ধ্বংসিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার জীবন্ত স্মৃতিস্মারক এই বাড়িটি আগুনের গ্রাসে ভস্মীভূত হয়েছে। এই ঘটনার মাধ্যমে, আমাদের জাতির গৌরবময় ঐতিহ্যের একটি অমূল্য অংশ চিরতরে হারিয়ে গেছে। ধানমন্ডি ৩২, যা একসময় বঙ্গবন্ধুর সাহসিকতা এবং আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ছিল, আজ এই অগ্নিকাণ্ডের দ্বারা ধ্বংস হয়ে গেছে। এই বাড়িটি, যেখানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, আমাদের ইতিহাসের একটি সোনালী অধ্যায় ছিল। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে, আমাদের সংগ্রামের ইতিহাসকে ধারণ করেছিল। এই অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে, একটি শ্রেণীর যুবকের অদূরদর্শিতা এবং নৈরাজ্য আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে ধ্বংস করেছে। এরা আমাদের জাতির ঐতিহ্যকে কেবল অস্বীকৃতি জানায়নি, বরং জাতির গৌরবকে এক গভীর সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
আমরা জানতে পারি যে, ইতিহাস কখনোই শুধুমাত্র বর্ণনা হয় না, এটি আমাদের জাতির চেতনার অঙ্গ। এই স্মৃতিচিহ্নের ধ্বংস আমাদের প্রতিটি নাগরিককে কষ্টের সাথে সাথে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যকে রক্ষার প্রতি আমাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের এখন দ্বিগুণ দৃঢ়তায় কাজ করতে হবে, যাতে এমন অদূরদর্শিতা ও নৈরাজ্যের পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং আমাদের ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায়গুলো সুরক্ষিত থাকে। এই বেদনা ও শোকের সময়ে, আমাদের ঐক্য ও শক্তি ইতিহাসের এই ক্ষতিগ্রস্ত অংশকে নতুনভাবে পুনর্গঠিত করতে সাহায্য করবে। এটাই আমাদের জাতির অঙ্গীকার—যে কোনও ধরনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, আমাদের ইতিহাসের সত্যিকারের চিহ্নগুলি রক্ষা করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবো। ধানমন্ডি ৩২, বঙ্গবন্ধু কোটের সেই ঐতিহাসিক বাড়ি, আজ অতীতের গৌরব গর্জে হেরে গিয়ে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ আমরা দেখছি সেই বাড়িটি, যা একসময় মুক্তিযুদ্ধের মহিমা, জাতির স্বপ্ন এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতীক ছিল, এখন শুধু এক টুকরো অগ্নিদগ্ধ ভগ্নাবশেষে পরিণত হয়েছে। এই বাড়ির মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে ইতিহাসের এক অমূল্য অংশ, জাতির আস্থা এবং সংগ্রামের এক উজ্জ্বল চিহ্ন। এই পুড়ে যাওয়া বাড়িটি শুধু আমাদের জাতির গৌরবের নিদর্শন নয়, এটি আমাদের জাতীয় চেতনারও এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ ছিল। আজ যখন এই বাড়ির দেয়ালগুলো ধোঁয়ার মেঘে ঢাকা পড়েছে, তখন আমরা গভীর দুঃখ ও লজ্জায় হতবাক।আমরা জানি, একটি জাতির ইতিহাস কখনোই শুধু বিলীন হয় না। কিন্তু এই ভগ্নাবশেষ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে আমাদের ইতিহাস, আমাদের গৌরবের রক্ষক হতে হবে। আমরা একদিন ইতিহাসের কাছে জবাব দেব, যে আমরা এই জাতির অহংকার ও স্মৃতিগুলোর মূল্য দিইনি।
এই অগ্নিকাণ্ড আমাদের জাতির এক গভীর চিন্তার আহ্বান জানায়। এখন আমাদের দায়িত্ব, এই স্মৃতির অগ্নিদগ্ধ ভগ্নাবশেষ থেকে নতুন উদ্যমে ও দৃঢ়তায় জাতির গৌরবকে পুনরুজ্জীবিত করা। এই দুর্ঘটনা আমাদের সবাইকে একত্রিত করার, আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরব রক্ষার এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার সংকল্পে বাধ্য করবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই বেদনার্ত পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে, আমাদের ইতিহাসের উজ্জ্বল চিহ্নকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কাজ করবো। আমাদের সবার কাঁধে এই দায়িত্ব, এই জাতির গৌরব পুনঃস্থাপনের প্রতিজ্ঞা নিয়ে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক এই ৩২ নং ধানমন্ডি বাড়ীর ইতিহাসের পাতা থেকে কিছু কথা লিখলাম। একসময়ের ধানমন্ডি-৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়ি, যার পরিবর্তিত বর্তমান ঠিকানা ১০ নম্বর বাড়ি, রোড নম্বর-১১, ধানমন্ডি-ঢাকা। এর ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর’ নামে। ১৯৬১ সাল থেকে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে এখানেই বসবাস করেছেন।এই বাড়ি থেকেই পরিচালিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি ধাপ। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার ছয় বছর পর তার বড় সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেও তাকে এ বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে তিনি হাউস বিল্ডিংয়ের ঋণ শোধ করে বাড়িটি বুঝে পান। এরপর বঙ্গবন্ধুর জীবিত দুই সন্তান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার সম্মিলিত সিদ্ধান্তে ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট থেকে বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। বাড়িটির দখল ও পুনরুদ্ধার ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১০ জুন পর্যন্ত এই বাড়িটি সামরিক কর্তৃপক্ষের অধীনে ছিল। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো সদস্যকেই এ বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। এমনকি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে ফিরলেও সেদিন তাকে এই বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। যে কারণে বাড়ির বাইরের সামনের চত্বরে বসে পরিবারের সদস্যসের জন্য দোয়া ও মিলাদ পড়েন তিনি। এর কিছুদিন পর হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের ঋণে নির্মিত ভবনটি নিলামে ওঠানো হয়। তৎকালীন প্রায় ১২ হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধ না হওয়ায় নিলামে চড়ানো হয় বাড়িটি। সে টাকা পরিশোধ করে বাড়ি বুঝে পান শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালের জুন মাসের ১০ তারিখে বাড়িটি বুঝে নেওয়ার পর দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ঘোষণা করেছিলেন ঐতিহাসিক এই বাড়িটি হবে জনগণের। ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। এর আগে ৩২ নম্বরের বাড়ি ও টুঙ্গিপাড়ার বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। ট্রাস্টিই বাড়িটিকে জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা দেয়।দেয়ালে রক্তের ছাপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বিশেষ সহকারী এবং তার স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ভাগ্নি সেলিমা খাতুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে যখন বাড়িটি বুঝে পান তখনো এ বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে ছিল রক্তের ছাপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরম মমতায় নিজে এবং তার সঙ্গী-সাথিদের নিয়ে বাড়িটি পরিষ্কার করেন।
সেলিমা খাতুন জানান, রাজধানীতে নিজেদের থাকার কোনো জায়গা না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোনের ইচ্ছানুযায়ী এ বাড়ি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত হয়। এর ধারাবাহিকতায় বাড়িটিকে ‘বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। ট্রাস্ট বাড়িটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর ঘাতকচক্র এই বাড়িটি সিল করে রাখে এবং বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।
১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৬২ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, ১৯৭১-এর শুরুতে অসহযোগ আন্দোলনসহ নানা চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী এই বাড়ি। এসব আন্দোলনের পরিকল্পনা প্রণয়ন, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়, সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা শোনা সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু ছিল ৩২ নম্বরের এই বাড়ি।এখান থেকেই ট্রাঙ্ককলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, এই বাড়ি থেকে,মনে রাখবেন সরকার যাবে সরকার যাবে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার বার বার আসবেনা, বিপ্লব বহুবার বহুভাবে আসবে, বিপ্লব আর স্বাধীনতা যুদ্ধ এক যেমন নয়, তেমনি বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা একনয়।
বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই যার সাথে কোন কাহারও সাথে তুলনা করা যাবেনা। আমি হয়তোবা আবেগে ভেসে গিয়ে অনেক কিছু করে ফেলত পড়ছি তবে যখন বিবেকের তাড়নায় এই ইতিহাস ঐতিহ্য খোঁজতে যাবো তখনই আমাদের ভুল আমরা বুঝতে পারবো, তবে হয়তো ভুল সংশোধন করে নেওয়ার সেই সুযোগ থাকবে না- মনে রাখবেন ইতিহাস কখনো কাহাকেও ক্ষমা করেননি এবং আগামীতেও করবে না।সেই অপেক্ষায় থাকবে জাতি!!
লেখকঃ সাংবাদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট