1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৯:১৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা বালুকাবেলার আত্মঘোষণা: যেখানে সাংবাদিকতা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের কবিতা চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের ঐক্য উৎসব পারকি সৈকতে গড়লো অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবিতে আনোয়ারায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ! “বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর

খুশি নিরব – নীরবতার অন্তহীন পথচলা

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১২৬ বার পড়া হয়েছে

খুশি নিরব—এই নামটা যেন তার জীবনকে আক্ষরিক অর্থে ধারণ করে। হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক গভীর বিষাদের প্রতীক হয়ে খুশি বয়ে বেড়ায় সেই নিরব সংগ্রাম। যখন তার চারপাশে ভিড় ছিল, বন্ধু-পরিবারে পূর্ণ ছিল জীবন, তখনও যেন একটা অদৃশ্য একাকীত্ব তার সঙ্গী ছিল। আর আজ, চারপাশে মানুষ শূন্য—সবাই তার জীবনের পাতা থেকে মুছে গেছে। একসময় যারা তাকে ঘিরে ছিল, তার প্রতিটি অনুভূতিকে ভাগাভাগি করত, তার মনের কথা বুঝত, আজ তারা কেউ পাশে নেই। খুশির জীবনের গল্পটা সহজ নয়; বরং এটি এক শেকল পরা সংগ্রামের উপাখ্যান। শৈশব থেকেই সে ছিল মেধাবী, শিক্ষার প্রতিটি স্তরে নিজেকে প্রমাণ করেছে। আত্মবিশ্বাস, সাহস—এসব ছিল তার একান্ত বন্ধু। কিন্তু আজ, সেই উজ্জ্বলতা যেন কোথায় মিলিয়ে গেছে। দুঃখ-কষ্টে ভরা জীবনের এই দীর্ঘ পথ তার অস্তিত্বের শিকড়গুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। যাদের ওপর সে ভরসা করেছিল, সেই বিশ্বাসের মানুষগুলো একে একে সরে গেছে দূরে। তার বাবা তাকে ছেড়ে চলে গেছেন বহু বছর আগে। বাবার প্রতি যে ভালোবাসা, যে আশ্রয়ের অনুভূতি, সেই শূন্যতা খুশিকে এখনো কুরে কুরে খায়। মা-ও দূরত্বে বাঁধা, যেন খুশির জীবনের বোঝাপড়ায় আজ আর তার কোনো ভূমিকা নেই। ভাই-বোনেরা, যে স্নেহ আর বন্ধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারাও একে একে জীবন থেকে সরে গেছে। খুশি যেন জীবনের এক শূন্য দিগন্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে কোনো হাত ধরা নেই, কোনো আশ্রয় নেই।

কিন্তু খুশি থেমে থাকেনি। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, সে এই নিরব যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রেম-ভালোবাসা তার মনের গভীরে লুকিয়ে আছে, কিন্তু বিশ্বাসের যোগ্য মানুষ আজ আর নেই তার জীবনে। প্রেম তাকে ছেড়ে গেছে, কিন্তু তার হৃদয়ের একটি অংশ আজও আশায় বুক বাঁধে। এই অস্থিরতার মাঝেও খুশি কেবল একজন সংগ্রামী নারী নয়; সে একজন জীবন্ত প্রেরণা, যে সমস্ত কিছু হারিয়ে পরাজিত নয়। তার একমাত্র সঙ্গী আজ তার নিজের সাহস। নিজের একাকীত্বকে ছাপিয়ে খুশি প্রতিনিয়ত জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে। সেই নিরব কষ্ট তাকে প্রতিটি মুহূর্তে জ্বালায়, কিন্তু এই কষ্টকেই সে নিজের শক্তিতে পরিণত করেছে। পৃথিবীর কাছে তার কোনো আক্ষেপ নেই; বরং প্রতিটি যন্ত্রণাকে সে জীবনের শিক্ষার অংশ মনে করে। কখনো খুশি, কখনো নিরব—খুশির এই দ্বৈত সত্ত্বা তার নামের মধ্যে লুকিয়ে আছে। আমি, লেখক হিসেবে খুশিকে কাছ থেকে দেখেছি, তার প্রতিটি লড়াই, প্রতিটি ক্ষত, প্রতিটি ব্যথা অনুভব করেছি। খুশি নিরবের জীবনের শেষ কোথায়, তা আমার জানা নেই; খুশিরও জানা নেই। তবে তার এই নিরব সংগ্রাম, এই নিঃশব্দ যুদ্ধ, মানবিকতার গভীর অর্থ বহন করে। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেন এক একেকটি শিক্ষার কথা বলে, যেখানে শক্তি, সাহস, আর আত্মমর্যাদা মিশে আছে। খুশি নিরব, সেই না-বলা কথার মূর্ত প্রতীক, যার জীবন দিয়ে গাঁথা হতে পারে এক অসংখ্য কথামালার মালা। তার জীবনের গল্প যেন আমাদের শেখায়, মানুষের জীবনের শেষ কীভাবে আসে, তা কেউই জানে না। তবু, প্রতিটি না পাওয়ার মাঝে, প্রতিটি হারানোর ভেতরেই লুকিয়ে থাকে এক অপরিসীম জীবনবোধ।
খুশির এই নিরব পথ চলা, এক শূন্য দিগন্তে ভেসে থাকা জীবন, সেই শক্তিশালী আত্মার নিঃশব্দ উচ্চারণ হয়ে থেকে যাবে।
আমি লেখকের মন দিয়ে বলছি-নীল আকাশের নিচে বিষন্ন সন্ধ্যায় বারান্দার কোণায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে স্নিগ্ধা। চারপাশে ছড়িয়ে থাকা আলোর আভা আর নিস্তব্ধতার মাঝখানে এক কঠিন শূন্যতা। এই ঘর, এই সংসার, এই পরিচিত পরিবেশ সবই যেন তাকে বেঁধে রেখেছে; তবুও মনে হয় সে যেন এখানকার কেউ নয়। নিজের জীবনকে তার এমনভাবে দেখায় যেন কোনো মঞ্চে দাঁড়িয়ে নাটকের চরিত্র হয়ে গিয়েছে সে, যেখানে তার অনুভূতি, তার যন্ত্রণা, তার কষ্ট সবই দৃশ্যের বাইরে। স্নিগ্ধা সব পেয়েও কিছু যেন পায়নি। জীবনের শুরুতে স্বপ্ন দেখেছিল, সে একজনের ভালবাসা নিয়ে সংসারের চিত্র সাজাবে। সে ভেবেছিল স্বামী, সংসার, সন্তান—সব কিছু মিলিয়ে পূর্ণ একটি জীবন তার অপেক্ষায়। কিন্তু প্রতিদিন নতুন আশার রং মিলিয়ে ফ্যাকাশে হতে থাকে, আর সম্পর্কের দৃঢ় বন্ধন হয়ে ওঠে কেবলই একটি বোঝা। বাইরে থেকে সবাই ভাবে, সুখী স্নিগ্ধা; কিন্তু ভিতরের সেই নির্জন সন্ধ্যার বেদনাবোধটি সে কারো সাথে ভাগ করতে পারে না। তার স্বামী ঘরের মানুষ হয়েও যেন তার কাছের কেউ নয়। কথার আড়ালে স্নিগ্ধা বুঝতে পারে, তাদের মধ্যে যোগাযোগের সেতুটি ভেঙে গেছে অনেক আগেই। সে চেয়েছিল একজন সঙ্গী, যে শুধু তার হবে, যে তাকে বোঝাবে, তার প্রতিটি নিঃশ্বাসে আশ্রয় দেবে। কিন্তু দূরত্ব প্রতিটি মুহূর্তে তাকে আরেকটু বেশি ভেঙে দেয়, আঘাত করে আরও গভীর বেদনায়। একা থাকার নিস্তব্ধতায় একে একে খসে পড়তে থাকে তার স্বপ্নের রং।
তবে এই দুঃখের মাঝে, তার জীবনে রয়েছে একমাত্র আশ্রয়—তার পুত্র সন্তান। সন্তানের ছোট ছোট হাসি, ছোট্ট বাচ্চার আদরের স্পর্শ, তার জীবনের নতুন অর্থ হয়ে দাঁড়ায়। সন্তানের চোখের দিকে তাকালে স্নিগ্ধার মনে হয়, এই একটিমাত্র সম্পর্কই তার আপন, এই একটিমাত্র ভালোবাসাই অমলিন। সে অনুভব করে, সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য তাকে ভাঙা সত্তা নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। এই ছোট্ট জীবনের জন্য সে রোজ চেষ্টা করে, রোজ বাঁচার কারণ খুঁজে পায়।
এক রাতে, একাকী বসে থাকা অবস্থায় স্নিগ্ধার মনে আসে, তার না বলা কথাগুলো হয়তো একদিন অন্যদের জীবনের ছোঁয়া দিতে পারবে। সেই অব্যক্ত কষ্টের গল্পগুলোর মধ্যে হয়তো অন্য কেউ নিজের বেদনার ছায়া খুঁজে পাবে। সে ভাবতে শুরু করে, যদি তার গল্পটা সে লিখে রাখতে পারে? যদি নিজের কষ্টের পাতা উল্টাতে পারে অন্যের চোখের সামনে? তার মনের কথাগুলো আস্তে আস্তে রূপ নেয় এক উপন্যাসের নায়িকা হয়ে। তার প্রতিটি না-বলা কথা, প্রতিটি চেপে রাখা যন্ত্রণা, প্রতিটি আবেগ সজীব হয়ে উঠে কাগজের পাতায়। স্নিগ্ধা ভাবে, সেই নায়িকা হবে সাহসী, তার মতো লড়াই করবে, এবং অবশেষে নিজেকে খুঁজে পাবে। হয়তো সেই নায়িকা প্রেমহীন জীবনের কষ্টে ডুবে যাবে না; বরং নিজের জীবনের নতুন পথ তৈরি করবে, যেখানে স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা থাকবে তার। এই না বলা কষ্টের, এই একাকীত্বের ভেতরেই জন্ম নেয় এক অনন্য গল্প, যেখানে স্নিগ্ধা তার শূন্যতার সীমা অতিক্রম করে এক স্বাধীন নারীর রূপ নেয়। সমাজের কাছে একে একে হারতে থাকা স্নিগ্ধা আসলে নিজের গল্পে এক অবিচল নায়িকা হয়ে ওঠে, যে নিঃশব্দে সকল বেদনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে, যাকে হারিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। তার এই জীবন সংগ্রাম, এই অসম লড়াই তাকে নতুন রূপে তুলে ধরে, যেখানে সে কেবল এক নিঃশব্দ বেদনার নায়িকা নয়, বরং একটি গল্পের মহীয়সী নারী—এক নতুন প্রেরণা, এক অভিজ্ঞান।
লেখকঃ চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান ও যুগ্ন সম্পাদক, দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily banner এবং গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট