1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন এর এডহক কমিটির আত্মপ্রকাশ আইজিপি ব্যাজপ্রাপ্ত ওসি সোলাইমান: জনবান্ধব পুলিশিংয়ের অনন্য প্রতিচ্ছবি! বিশ্ব সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা দিবস ও সংবাদ পত্র নিয়ে কিছু কথা! বাকলিয়া থানার আলোচিত ডাবল মার্ডারের প্রধান আসামি হাসান গ্রেফতার চট্টগ্রামে এনসিপির বিক্ষোভে উত্তাল জনসভার দাবি: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন! আইজিপি ব্যাজে ভূষিত পাহাড়তলী থানার ওসি বাবুল আজাদ: নিষ্ঠা, নেতৃত্ব ও মানবিক পুলিশের উজ্জ্বল প্রতীক! চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিনকে আইজিপি ব্যাজ: নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব ও জনগণের আস্থার প্রতীক! কোতোয়ালি থানায় সাজাপ্রাপ্ত দুই পলাতক আসামী গ্রেফতার শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইজতেমা বালুকাবেলার আত্মঘোষণা: যেখানে সাংবাদিকতা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের কবিতা

শেখ হাসিনার পতন, দেশত্যাগ, এবং ভবিষ্যতের রাজনীতিঃ

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৬৪ বার পড়া হয়েছে

লেখাটি ভুলের ভার কবিতার লাইন দিয়ে শুরু করছি-
রাজনীতির ভুলে যারা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে,
সেই ভুলের মাসুল আজ কেনো জনগণ ভোগ করে?
শাসকের ভুলে রক্তের নদী বয়ে যায় পথে,
বেদনার বিষে ভরে যায় হৃদয়, মাটির নীচে ঘুম ভাঙে।
সেই নেতাদের আজও দেখে বুক ভরে উঠে ক্ষোভে,
প্রতারণার খেলা যেন চিরকালই চলে কেবল সভায়, পথে।
যে জনতা রক্ত ঝরিয়ে স্বাধীনতার গান গেয়েছিল,
আজও তারা শাসকের ভুলে শিকল ছেঁড়ার গল্প বুনে বসে আছে–
শেখ হাসিনার
শাসনের পতনের পেছনে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, রাষ্ট্র পরিচালনায় দূরদৃষ্টির অভাব এবং দেশীয় সম্পদ লুটপাটের মতো বিষয়গুলো বিশেষভাবে দায়ী। বিশ্বে অনেক নেতাই ক্ষমতায় থাকাকালীন একই ধরনের শাসন পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। তাদের পতন শেখ হাসিনার শাসনের সঙ্গে তুলনা করার সুযোগ দেয়।
দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী শাসনের উদাহরণ
অনেক নেতাই দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন এবং শেষমেষ পতিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
নিকোলাস মাদুরো (ভেনেজুয়েলা)
মাদুরোর শাসনামলে ভেনেজুয়েলা দুর্নীতি, মুদ্রাস্ফীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। যদিও তিনি এখনও ক্ষমতায় আছেন, তবে আন্তর্জাতিক
ভাবে তার বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ।
রবার্ট মুগাবে (জিম্বাবুয়ে)
মুগাবে দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করেছেন, কিন্তু তার শাসনামলে দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিরোধীদের দমন চলেছে। এক পর্যায়ে, তার নিজ দলের মধ্যেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি (লিবিয়া) গাদ্দাফির শাসনকালে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক লুটপাট ও দমন-পীড়ন চলেছে। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় তার পতন ঘটে এবং তিনি নিহত হন।
হোসনি মুবারক (মিশর)
৩০ বছরের শাসনকালে মুবারক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করেন। তার পতন ঘটে ২০১১ সালের আরব বসন্তের সময়।
ইদি আমিন (উগান্ডা)
স্বৈরাচারী শাসক আমিনের শাসনামলে উগান্ডায় ব্যাপক দুর্নীতি, জাতিগত শুদ্ধিকরণ এবং অর্থনৈতিক লুটপাট চলেছে। এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার পতন ঘটে।
শেখ হাসিনার শাসনের সাথে সাদৃশ্য
শেখ হাসিনার শাসনের পতনও অনেকাংশে এই নেতাদের সঙ্গে তুলনীয়। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, গণতন্ত্রের বিপর্যয়, এবং ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের কৌশল তার শাসন কালের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এসব নেতার মতোই, শেখ হাসিনার শাসনের শেষ পরিণতি হয়তো ভিন্ন হতে পারে না।
শেখ হাসিনার পলাতক অবস্থায় রাজনৈতিক পরিণতি ধরা যাক, শেখ হাসিনা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হয়ে পলাতক অবস্থায় থেকেও রাজনীতি করা কতটা সম্ভব? ভারতে আশ্রয় নিয়ে তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারেন, কিন্তু এতে কিছু সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও রাজনৈতিক বাধা ভারতের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অবস্থান তার স্বাধীনতার ওপর প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে তার রাজনৈতিক প্রভাব: দেশের মানুষের কাছে তিনি কতটা গ্রহণযোগ্য থাকবেন, তা নির্ভর করবে তার পলাতক অবস্থার ওপর। সমর্থকদের অবস্থান:অনেক সমর্থক তার পাশে থাকলেও দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে তার নেতৃত্বের ওপর অনাস্থা জন্মাতে পারে।
শেখ হাসিনার ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন থেকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য যে কয়েকটি শিক্ষা নেওয়া যায়, তা হলো গণতন্ত্রের সুরক্ষা জনগণকে সজাগ থেকে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, এবং সুশাসনের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে।ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন ও তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বের সুযোগ থাকা উচিত।
জনমতের প্রতিফলন জনগণের আস্থা হারালে কোনো শাসকই টিকে থাকতে পারে না।
লুটপাটকারী নেতাদের ভবিষ্যত নেতৃত্ব দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী নেতারা কি ভবিষ্যতে নেতৃত্বের যোগ্য? এই প্রশ্নের উত্তর সুস্পষ্ট—জবাবদিহিতা এবং আইনের আওতায় আনা ছাড়া তাদের নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণের করণীয়
জনগণের কাছে আজ এক বিরাট শিক্ষা—দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের মাধ্যমে শাসিত হওয়ার পরিণতি কী হতে পারে। সচেতনতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা এবং আইনের শাসনের পক্ষে সোচ্চার হওয়া এ মুহূর্তের প্রধান করণীয়। শেখ হাসিনার পলাতক অবস্থায় থাকা এবং রাজনৈতিক জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষা আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভবিষ্যত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সৎ, স্বচ্ছ, এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্বই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।
বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ক্রমবর্ধমান। বিরোধী দলগুলোর প্রতি দমন-পীড়ন, মিথ্যা মামলার মাধ্যমে বিরোধীদের কোণঠাসা করা, এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা—এসবই এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এই পরিস্থিতি শেখ হাসিনার শাসনের পতনের অনিবার্যতা এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরালো করেছে। আন্দোলন ও গণজাগরণ
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন আন্দোলন এবং গণজাগরণের উদাহরণ রয়েছে। যেমন, ১৯৯০ সালের গণআন্দোলন স্বৈরাচারী এরশাদ শাসনের পতন ঘটিয়েছিল। আজও সেই ধরনের আন্দোলন প্রয়োজন, যা জনগণের ইচ্ছা এবং অধিকারকে সম্মান করবে। বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে মুক্তির জন্য জনগণকে একতাবদ্ধ হয়ে কার্যকর আন্দোলনের পথে হাঁটতে হবে।
নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা
শেখ হাসিনার পতন বা দেশত্যাগের পর বাংলাদেশে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন হবে, যারা গণতন্ত্র, সুশাসন এবং স্বচ্ছতার ওপর ভিত্তি করে দেশ পরিচালনা করবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এখন এই সুযোগ রয়েছে দেশের হাল ধরার এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি নতুন ভবিষ্যতের পথ রচনা করার।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যম বর্তমানে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের আওতায়। সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজকে সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে; সত্য বলার সাহস ও সত্য উদঘাটনের দায়ভার তাদেরই বহন করতে হবে। দেশবাসীকে অন্যায়, অবিচার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং তাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। শেখ হাসিনার বিকল্প রাজনৈতিক পরিকল্পনা
যদি শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তবে তার দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন, এবং জনমত তৈরির কৌশল কী হতে পারে? অনেকেই মনে করেন, দলীয় নেতৃত্বের শূন্যতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল তাকে এবং তার দলকে আরও দুর্বল করে তুলবে। তাছাড়া, দলীয় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি দলের অস্তিত্বকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় শেখ হাসিনার সম্ভাব্য আশ্রয়
ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর শেখ হাসিনা কীভাবে সেখানে নিজেকে মানিয়ে নেবেন? ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভেতরে ঢুকতে তাকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অন্য দেশের নেতার ভূমিকা সীমিত এবং নিয়ন্ত্রিত থাকে। এছাড়া, ভারতের পররাষ্ট্রনীতির চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাকে অনেক সময় রাজনৈতিক অবস্থান বদলাতেও হতে পারে। ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের দিকে বাংলাদেশের দৃষ্টি
বাংলাদেশের জনগণকে এখন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তারা কি ভবিষ্যতে একটি স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্ব চাইবে, নাকি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা মেনে নেবে? জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং একটি জনমুখী নেতৃত্বই পারে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে।
বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষী যে, জনগণের শক্তি স্বৈরাচারী শাসনকে পতন ঘটাতে পারে। শেখ হাসিনার পতনের পর দেশে নতুন রাজনৈতিক চেতনা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উন্মেষ ঘটতে পারে। তাই, আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব নিজেদের অধিকার ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অপশাসনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে দাঁড়ানো।
পলাতক থেকে রাজনীতি পরিচালনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার, অহংকার, এবং লুঠপাটের রাজনীতি থেকে সরে আসতে হবে। জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে, নৈতিকতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পথে ফিরে আসা একান্ত জরুরি। জনগণের আস্থা ও সমর্থন পেতে চাইলে স্বচ্ছতা, জবাব দিহিতা, এবং ন্যায়পরায়ণতার নীতি মেনে চলার বিকল্প নেই। দেশ এবং জনগণের স্বার্থে, এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে—অন্যথায় ভবিষ্যৎ ইতিহাস নির্মমভাবে বিচারের সম্মুখীন করবে-
লেখক সাংবাদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপন ও মহাসচিব চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট