
আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। দিবসকে কেন্দ্র করে ‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে ১০
ডিসেম্বর ২০২৫ উদযাপনের লক্ষ্যে বুধবার সকাল ৮টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বর্ণাঢ্য
র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন নেতাকর্মীগণ স্ব স্ব থানা, জেলা, বিভাগীয়
পর্যায় আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও বর্ণাঢ্য র্যালিতে অংশগ্রহণ করে। আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল মানুষের মৌলিক অধিকার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ
আইন প্রণয়ণের দাবি। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নানা
কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি সুশৃঙ্খলভাবে পালন করা হয়।
উপস্থিত ‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ সংস্কার সহকারী পরিচালক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান
দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করে বলেন, “মানুষের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য দূরীকরণ, অসহায়, নিরীহ, গরিব, প্রতিবন্ধী ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে। মানুষ মানুষের জন্য। আইনের চোখে সবাই সমান। মানব কল্যাণে অধিকার আদায় নিয়ে বিশেষ ভ‚মিকা রাখতে হবে। আজকের এ বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা মূলত মানবাধিকার ও আইনি অধিকার বিষয়ে সচেতনতা
তৈরি ও সেবামূলক কাজে নিয়োজিত একটি ফাউন্ডেশন গঠন করা।”
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ এর সেক্রেটারী জেনারেল; মির্জা এমদাদ
হোসেন। তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয় এবং ১৯৫০ সালে ১০ ডিসেম্বরকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস হিসেবে আমরা এ দিনটিকে পেয়েছি। কাজেই আমাদের তা ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের ন্যায্য অধিকারের কথা মাথায় রেখে কার্যকর করতে হবে। নারী অধিকার, নারীর মর্যাদা ও মানবাধিকারের মধ্যে সুসর্ম্পক করতে হবে।
আমাদের মানবাধিকার পরিস্থিতির যদি কোনো উন্নতি হয় তা আবার কিছুদিন পর পরিবর্তন হয়ে
যায়, বেড়ে যায়। হত্যা, ধর্ষণ, পারিবারিক সহিংসতা থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টরের দিকে নজর
রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে – নারী ও শিশুদের ওপর বেড়েছে নির্যাতন, বেড়েছে নিপীড়ন,
অন্যায়, অত্যাচার। তাই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার মাধ্যমেই এ সমস্ত মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি
করা সম্ভব বলে আমরা আশা রাখি।
আরো উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণখান থানার কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও কবি মোহাম্মদ আলীম
আল রাজীর, সহ সভাপতি রুনা আক্তার, ও জয়েন্ট সেক্রেটারী মোঃ হযরত আলী সহ অন্যান্য কার্যনিবাহী
কমিটির সদস্যগণ। সভাপতি মোহাম্মদ আলীম আল রাজী বলেন, “আমাদের দেশ এখনও অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন, নিপিরণ, দুর্নীতি, হত্যা, গুম থেকে মুক্ত নয়। অথচ আমরা সবাই মানুষ। প্রতিটা মানুষের যেমনি ন্যায্য অধিকার রয়েছে তেমনি শিক্ষকদের সামান্য দাবি-দাওয়াও রয়েছে। তাদের এ সামান্য দাবি মেনে নিতে হবে। আমরা আশা করি আজকের দিবসকে কেন্দ্র করে এ সকল সমস্যা সমাধান ফিরে আসবে। ক্ষুধার্ত মানুষের কথা, প্রতিবন্ধীদের কথা, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,
ভেজাল ঔষধের বিষয়ে জাতিকে সঠিক বার্তা পৌঁছতে জাগ্রত করতে হবে।”
‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ এর অধীনে ফেনীতে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে গরিব, দুখী ও
অসহায়, দরিদ্র পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। ‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ ফেনী জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সোহেলসহ অন্যান্য কর্মীগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হন। সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ^ মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে শতাদিক মানুষের মাঝে ক্ষুদ্র বস্ত্র প্রদান গরীব, দুখী মানুষের কিছুটা হলেও শীত নিবারণে উপশম হবে। আমাদের এ বিতরণ ভবিষ্যতে আরো বিশদ আকারে অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উদযাপন করা হয়।
প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করে বৈষম্যমুক্ত শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ মানবাধিকার দিবসটি যথাযথ পালন
করে ‘আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশন’ এর প্রধান কার্যালয়; দারুসসালাম আর্কেড, ১৪ পুরানা পল্টন,
ঢাকা, মাননীয় চেয়ারম্যান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সাইফুল বারি’র সাথে
সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ও গণ্যমান্য উপস্থিত সদস্যগণদের সাথে মনবিনিময় করেন।