
দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় রাজস্ব খাত হলো প্রধান চালিকাশক্তি। সেই রাজস্ব আহরণকে সুনিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব বর্তমানে কাঁধে তুলে নিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ। তিনি কেবল একজন অভিজ্ঞ প্রশাসক নন, সময়ের সাহসী মানুষ হিসেবেও পরিচিত। সততা, নিষ্ঠা ও দূরদর্শিতার সমন্বয়ে তার পূর্ববর্তী দায়িত্বপালনের সুনাম আজ সর্বত্র স্বীকৃত। আয়কর আদায়ের নিশ্চয়তা, কর ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা সম্প্রসারণ ও করদাতাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি কাজ করছেন অক্লান্তভাবে। তার নেতৃত্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে জবাবদিহিতা ও দক্ষতা হচ্ছে মূল ভিত্তি। দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করার জন্য তার গৃহীত পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হচ্ছে নীতি-নির্ধারক মহল, ব্যবসায়ী সমাজ ও সাধারণ জনগণের কাছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গর্বিত সন্তান আজ প্রমাণ করছেন, সৎ ও সাহসী নেতৃত্বই পারে রাজস্ব খাতকে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রকৃত ভিত্তিতে রূপান্তরিত করতে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি রাজস্ব। রাষ্ট্রের উন্নয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে প্রতিটি খাতে সরকারের কার্যক্রমের জন্য রাজস্ব আহরণ অপরিহার্য। আর সেই রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ দায়িত্ব যিনি পালন করছেন তিনি হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ। তিনি ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার যোগদানের মধ্য দিয়ে রাজস্ব প্রশাসন নতুন উদ্যম, নতুন দিকনির্দেশনা এবং আধুনিকতার পথে এগিয়ে চলেছে। জনাব খান জন্মগ্রহণ করেন লক্ষ্মীপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার পিতা জনাব নুরের রহমান খান এবং মাতা সালেহা খানম। ছোটবেলা থেকেই তিনি পড়াশোনায় মেধার পরিচয় দেন এবং জীবনের প্রতিটি স্তরে সৎ, পরিশ্রমী ও শৃঙ্খলাবদ্ধ মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যান।
বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ প্রাঙ্গণে অর্জিত শিক্ষাই তার পেশাগত জীবনের শক্ত ভিত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে আরও শাণিত করতে তিনি যুক্তরাজ্যের আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। সেখান থেকে তিনি গভর্নমেন্ট ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা এবং মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আজ তার এই উচ্চ পদে আসীন হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক বিশাল গৌরব। তিনি প্রমাণ করেছেন, মেধা, অধ্যবসায় ও সততার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় অবদান রাখতে সক্ষম। ১৯৯৪ সালের ২৫ এপ্রিল বিসিএস (কর) ক্যাডারের ১৩তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। প্রথম থেকেই মাঠ প্রশাসনে কাজ করে তিনি অভিজ্ঞতার এক বিশাল ভাণ্ডার গড়ে তোলেন। কর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি করদাতাদের সমস্যার কাছাকাছি পৌঁছান এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। দীর্ঘ তিন দশকের কর্মজীবনে মাঠ প্রশাসন থেকে নীতি প্রণয়ন—সবক্ষেত্রেই তিনি দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। এনবিআরের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই দায়িত্ব পালনে তার সততা, প্রজ্ঞা ও দক্ষতা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। শুধু একজন প্রশাসক নন, তিনি একজন দক্ষ পেশাদার অ্যাকাউন্ট্যান্টও। ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICMAB)-এর কাউন্সিল সদস্য, কোষাধ্যক্ষ, সচিব ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তিনি প্রতিষ্ঠানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তিনি প্রশাসনিক জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আজ তাকে রাজস্ব প্রশাসনে একটি দূরদর্শী নেতৃত্বে পরিণত করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি কর প্রশাসনে এক নতুন যুগের সূচনা করেছেন। তার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে—ডিজিটাল কর ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন,করদাতাবান্ধব সেবা সম্প্রসারণ,করফাঁকি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ,ভ্যাট ও আয়কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা,বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি,তার নেতৃত্বে এনবিআর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে, অনলাইনে কর পরিশোধের সুবিধা সম্প্রসারণ করছে এবং কর আদায় প্রক্রিয়াকে সহজ ও সময়োপযোগী করে তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে জনাব খান একজন রোল মডেল। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত শিক্ষা ও মূল্যবোধ কিভাবে একজনকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তুলতে পারে, তার জীবনই তার সেরা উদাহরণ। তার এই সাফল্য প্রমাণ করে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞান বিতরণই করে না, বরং নেতৃত্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রেও অগ্রগণ্য। ব্যক্তিজীবনে জনাব খান একজন স্নেহশীল স্বামী ও গর্বিত পিতা। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। কাজের ব্যস্ততা সত্ত্বেও তিনি পরিবারকে সময় দেন এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করেন। জনাব মোঃ আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ শুধু একজন প্রশাসক নন, তিনি দূরদর্শী নেতৃত্ব, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আর্থিক বিশেষজ্ঞ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত সন্তান। তার সততা, কর্মদক্ষতা ও প্রজ্ঞা জাতীয় রাজস্ব প্রশাসনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের নতুন দিগন্তের দিকে। আজ তিনি শুধু লক্ষ্মীপুর বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই নয়, বরং পুরো বাংলাদেশের জন্য গৌরবের প্রতীক। তার নেতৃত্বে এনবিআর আগামী দিনে রাজস্ব আহরণে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে—এমন প্রত্যাশাই জাতির।