1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নিরাপদ সড়ক চাই সফল সামাজিক সংগঠন তারেক রহমান ফিরতে চাইলে একদিনেই ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব ঘোড়াঘাটে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক সীমিত গঠন ও বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত শ্রীমঙ্গলে ১১মাস ধরে ঘরবন্দী এক পরিবার লামায় ট্রাক্টর মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৪ চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক ব্লকেড, ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবি রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও  আলোচনা সভা  গৌরনদীতে বিএনপি’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড গাইবান্ধা, ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা হত্যার হুমকি থানায় অভিযোগ  ৩২ তম বাৎসরিক ওরশ মোবারক ও গুনীসম্মাননা ২০২৫

রূপগঞ্জের বালু নদের ডেমরা-চনপাড়া সেতু মরণফাঁদে পরিণত ॥ ধসে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা,নির্মাণের দাবি

মোঃ আবু কাওছার মিঠু, রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ)
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বালু নদের ওপর নির্মিত ডেমরা-চনপাড়া সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ এলজিইডি এ সেতুর উভয় পাশে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে সাইনবোর্ড দিয়েছে। তারপরেও ঝুঁকি নিয়েই যানবাহন চলাচল করছে। এতে সেতু ধসে পড়ে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। তাতে প্রাণহানির আশঙ্কা করে সেতুটি পুননির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জের যোগাযোগের সুবিধার্থে বালু নদের ওপর ডেমরা- রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়কের চনপাড়া এলাকায় ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এলজিইডি’র অর্থায়নে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট এবং প্রস্থ ১২ ফুট।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতু থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। সেতুর পিলার ও রেলিংয়ের রড বেরিয়ে গেছে। সেতুর পিলার ঘেঁষে বালুুবাহী বাল্কহেড চলাচল করছে। কখনো কখনো বাল্কহেডের ধাক্কায় পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারপরেও সেতু দিয়ে এখনো ভারী যানবাহন চলাচল করছে। গাড়ি পারাপারের সময় সেতু কেঁপে উঠে। সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর এ অবস্থা হলেও তা মেরামত কিংবা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেতুর পাশে নতুন করে আরো একটি সেতু নির্মাণ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা আর হয়ে উঠেনি। নদীতে চলমান ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর চারটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৬০ বছর মেয়াদি চুক্তিতে নির্মাণ করা হলেও ৩৫ বছরেই সেতুটির ভঙ্গুর দশা। যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২০০০ সালের দিকে সেতুতে ফাটল দেখা দেয়। তখন পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ২০১২ সালে সেতুর পিলার, র‌্যালিং ও বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। এলজিইডি সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ সময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সাইনবোর্ড দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে।
স্থানীয়রা জানায়, এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। তাদের প্রধান দাবি হলো, বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ডেমড়া-চনপাড়া সেতু। যে কোনো সময় সেতু ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন যানবাহন চালক ও পথচারীরা। নির্ধারিত ৬০ বছর সময় মেয়াদের আগেই সেতুটির নড়বড়ে অবস্থা। এ সেতু দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ফলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
মুশুরি গ্রামের ব্যবসায়ী নূরুন্নবী ভুঁইয়া বলেন, ব্যবসায়ীক কাজে তিনি প্রতিনিয়ত এই সেতু পার হয়ে ঢাকায় আসা-যাওয়া করেন। সেতু দিয়ে পারাপারের সময় এই ভেবে বুকটা কেঁপে ওঠে এই বুঝি সেতু ভাঙ্গিয়া পড়িল। ছোট্ট একটা গাড়ি গেলেই সেতু কেঁপে ওঠে। মনে হয় গাড়ি ঘোড়াসহ ব্রিজ ভাঙ্গিয়া এখনই নদীতে পড়ল।
পশ্চিমগাঁয়ের গৃহবধূ রোকসানা আক্তার বলেন, আমার মেয়ে আনিকা তাবাচ্ছুম সেতুর পশ্চিমপাড়ে ডেমরা কলেজে লেখাপড়া করে। সেতুটি পারাপারে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মেয়েকে নিয়ে প্রতিদিনই ভয়ে থাকি। সেতুটি ভেঙে যদি নদীতে পড়ে যায়, এ ভয়ে আমার মেয়ে নিয়মিত কলেজে যেতে চায় না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি গোলাম ফারুক খোকন বলেন, বালু নদের চনপাড়া-ডেমরা সেতু বিএনপি সরকার নির্মাণ করেছিল। তাই গত ১৬ বছর এটাকে কেউ মেরামত কিংবা সংস্কার করেনি। সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ও ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় রূপগঞ্জের মানুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে ঢাকায় তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতু অবিলম্বে নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আকতার হোসেন বলেন, সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করার জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল। সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিআইডব্লিউর আপত্তির কারণেও এ সেতুর নির্মাণ কাজে বিঘœ হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আহসানুজ্জামান বলেন, বর্তমানে নদীর সর্বোচ্চ পানির উচ্চতা থেকে সেতুর উচ্চতা ২৯দশমিক ৫২ফুটের পরিবর্তে ৩৯দশমিক ৩৬ফুট করা হয়েছে। তাতে সেতুর উভয়দিকে এপ্রোজ তিনগুণ বাড়বে। সে কারণে আগের টেন্ডার বাদ দিয়ে নতুন করে টেন্ডার দিতে হবে। এ কারনে সেতু নির্মাণে জটিলতা হয়েছে। তবে সকল জটিলতা নিরসন করে শিগগিরই সেতু নির্মাণ করা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বড় যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইন বোর্ড দেওয়া হয়েছে। বালু নদের চনপাড়া-ডেমরা সেতু সম্পর্কে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট