চরণদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী নজর মোহাম্মদ গোষ্ঠীর তিনশো বছরের পুরোনো পারিবারিক কবরস্থান নিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের মিথ্যাচার ও অপপ্রচার গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এই কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নজর মোহাম্মদ গোষ্ঠীর আদিপুরুষ, যা সিএস রেকর্ডে তাদের বৈধ মালিকানায় রয়েছে।
কালের পরিবর্তনে আরএস ও বিএস খতিয়ানে কিছু অংশ খাস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়, যা অনেকেরই অজানা ছিল। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী মোনাফ সওদাগরের গোষ্ঠী কবরস্থানের দখল নিতে অপকৌশল গ্রহণ করেছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে— লতিফ গংদের পূর্বপুরুষরা পশ্চিম চরণদ্বীপে বসবাস করতেন, সেখান থেকে নদীগর্ভে ভিটা হারিয়ে আজ থেকে ৭০-৮০ বছর আগে নজর মোহাম্মদ গোষ্ঠীর সদস্যদের নিকট থেকে জমি কিনে এলাকায় বসতি গড়েছেন।
তাদের কোন ঐতিহাসিক, ধর্মীয়, বা সামাজিক দাবি না থাকলেও তারা আজ এই কবরস্থানের মালিকানা দাবি করে বর্বর রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও মিথ্যা প্রচারে মেতে উঠেছে। তারা স্থানীয় ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় খাস খতিয়ানকে অজুহাত বানিয়ে জেলা প্রশাসকের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে, যেন কবরস্থান উদ্ধার করা হয়েছে কোনো ‘ফ্যাসিবাদের’ দখল থেকে!
এটি নিছকই মিথ্যাচার। কারণ, এই কবরস্থান কখনো কোনো রাজনৈতিক বা দখলদার শক্তির হাতে ছিল না। বিগত পনেরো বছর ধরে এই কবরস্থান উন্নয়ন, সংস্কার ও সংরক্ষণ করেছে নজর মোহাম্মদ সমাজের সর্দার ও তৎকালীন বিএনপি নেতা জানে আলম— যা তখনকার সরকারও কখনো আপত্তি করেনি।
অথচ আজকে আওয়ামী লীগ ঘরানার কিছু ব্যক্তি—যাদের রাজনৈতিক পরিচিতি ও অতীত অপকর্ম সর্বজনবিদিত— তারা নিজেদের অপরাধ ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকতে কবরস্থানের মতো পবিত্র বিষয় নিয়েও অপপ্রচারে লিপ্ত। যারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাদের কেউ কেউ শহরের ঠিকাদার, কাউন্সিলর, এমনকি সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বেও রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হলেও আজ তারা নিজেদের ‘উদ্ধারকারী’ সাজিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।
নজর মোহাম্মদ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে, কবরস্থানের খাস অংশ নিয়ে সরকার বনাম নজর মোহাম্মদ গোষ্ঠীর মধ্যে মামলা বিচারাধীন। এই মামলায় এই গোষ্ঠীর কোনো সংযোগ নেই। অতএব, ‘উদ্ধার’ নাটক করে যারা নিজেদের হিরো বানাতে চাইছে, তারা ইতিহাস বিকৃতি ও ধর্মীয় অনুভূতির চরম অপমান করছে।
আমরা এই ধরণের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি— যেন এই পবিত্র কবরস্থান নিয়ে আর কোনো অপপ্রচার চালানো না হয়। আমরা আইনি লড়াইয়ে আছি, থাকবো, এবং পৈতৃক কবরস্থান রক্ষায় সব রকমের শান্তিপূর্ণ, নৈতিক ও আইনসম্মত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
নজর মোহাম্মদ সমাজ
চরণদ্বীপ, চট্টগ্রাম