1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১১:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

শেখ পরিবারের রাজনৈতিক প্রভাব এবং বর্তমান পরিস্থিতি: অস্বচ্ছতা, সন্দেহ ও সংকট

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ পরিবারের ভূমিকা দীর্ঘ ইতিহাসের অংশ হলেও, তাদের শাসন ব্যবস্থার প্রতি অনেক বিতর্ক এবং সমালোচনা রয়েছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবার দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় ছিল , এবং তাদের সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও নীতি নিয়ে দেশব্যাপী নানা আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্ক চলছে। যদিও সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে এসেছে, তবুও এর পাশাপাশি কিছু পক্ষের দাবি, যে এই শাসন ব্যবস্থার ফলে জনগণের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং দেশ একটি পরিবার বা দলের হাতে বন্দী হয়ে পড়েছে।

শেখ পরিবারের শাসনব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় সমালোচনার বিষয় হল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার অভাব। সরকার বিরোধী দলগুলোকে দমন করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার, হামলা ও হুমকি দেয়া হয়েছিল। এ কারণে দেশের গণতন্ত্র গুরুতর সংকটে পড়েছে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়েছে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো স্বাধীন নির্বাচন এবং সকল দলের অংশগ্রহণ, তবে বর্তমান সরকার এই বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রেই পক্ষপাতিত্ব করেছে। শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ হলো তাদের শাসনকালে দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক অপব্যবহার বেড়ে গেছে। দেশের শাসক পরিবার এবং তাদের ঘনিষ্ঠরা বিভিন্নভাবে সরকারি সম্পদ ব্যবহার করেছেন, যা দেশের জনগণের জন্য ক্ষতিকারক। প্রতিবেদন ও অনুসন্ধান থেকে দেখা গেছে যে, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও উন্নয়ন কার্যক্রমে দুর্নীতি হয়েছে এবং বিভিন্ন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি অবৈধভাবে অর্থ আয় করেছেন। এর ফলে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হালকা হলেও, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়নি। অধিকন্তু, দেশের পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ অত্যধিক হয়ে পড়েছে, যা বিশেষ কিছু গোষ্ঠীকে উপকৃত করেছে, কিন্তু সাধারণ জনগণ এর সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ সময় ধরে দেশ পরিচালনা করছেন, এবং অনেকেই মনে করেন যে, তাদের শাসনব্যবস্থা শুধুমাত্র একটি পরিবার বা দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। শেখ পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক পদগুলোতে নিয়োগ এবং তাদের ব্যবসায়িক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ দেশের জন্য উদ্বেগজনক। এটি দেশের বৃহত্তর জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে, কারণ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এবং সংস্থানগুলি এক পরিবারের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে যাওয়ার কারণে, দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও বাড়ছে। এছাড়া, শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প এবং কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারিত অর্জনের পরও, দেশের সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার মানের ব্যাপক পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য সামাজিক সেবা ক্ষেত্রগুলোতে অনেক অভাব রয়ে গেছে। সরকার অনেক সময়ই উন্নয়নের কথা বললেও, জনগণের মৌলিক সুবিধাগুলি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে দূর্নীতি এবং সুশাসনের অভাব, শিক্ষার মানে অবনতির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনমান তেমন উন্নতি লাভ করেনি।শেখ পরিবারের শাসনকালীন সময়ে বিরোধী দলগুলো প্রায়ই নিপীড়নের শিকার হয়েছে। দেশব্যাপী একাধিক ঘটনা রয়েছে যেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা, হুমকি, আক্রমণ এবং কারাবাসের মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব ঘটনায় জনগণের মধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতি সরকারের দমনমূলক আচরণের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, যা গণতন্ত্রের বিকাশের পথে বড় প্রতিবন্ধক। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিদেশী সম্পর্ক অনেকটাই কেন্দ্রীয় ও সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে। বিশেষ করে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারের কিছু সিদ্ধান্তে দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং বাইরের বিশ্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। শেখ পরিবারের শাসনব্যবস্থা একদিকে যেমন দেশের উন্নয়নে কিছু কিছু অর্জন এনেছে, তেমনি অন্যদিকে জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র, এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। জনগণের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা এবং সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি, যেখানে সব স্তরের মানুষের মতামত, অধিকার এবং কল্যাণের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে। শাসক পরিবারের প্রতি সমালোচনার পেছনে একটি বৃহৎ জনগণের স্বার্থ রয়েছে এবং এটি তাদের ভবিষ্যত উন্নতি, শান্তি এবং স্বাধীনতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং শেখ পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে যে ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা দেশের জনগণের জন্য একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৫ আগস্ট থেকে শেখ পরিবারের সদস্যদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি শুধু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, সাধারণ জনগণের মধ্যে নানা ধরনের সন্দেহ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জেল রিমান্ডে থাকলেও, শেখ পরিবারের কেউই আইনের আওতায় আসেননি বা তাদের অবস্থান স্পষ্ট হয়নি। এর ফলে জনগণের মধ্যে একধরনের অসন্তোষ ও অস্পষ্টতা সৃষ্টি হয়েছে, যা সরকারের স্বচ্ছতার ওপর গভীর প্রশ্ন তুলেছে।প্রথমত, বিষয়টি যে দেশের রাজনীতিতে সংকট সৃষ্টি করছে, তা স্পষ্ট। শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শেখ হাসিনার ভারত পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলেও, তার ছোট বোন শেখ রেহানার অবস্থান নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। শেখ রেহানার ব্রিটিশ পাসপোর্ট থাকার কারণে, তিনি কি ভারতে আছেন, নাকি অন্য কোথাও পালিয়েছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এমন পরিস্থিতি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং জনগণের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে, কারণ জনগণ তাদের নেতাদের অবস্থান ও ভবিষ্যত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে নিশ্চয়তা চায়।

এছাড়া, শেখ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবস্থানও অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থান কোথায়, তা জানানো হয়নি। এই ধরনের পরিস্থিতি জনগণের কাছে এক ধরনের অবিশ্বাস এবং সন্দেহ সৃষ্টি করে, যা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয়। যখন সরকার তাদের পরিবারের সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে খোলামেলা তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়, তখন এটি জনগণের জন্য নেতিবাচক সংকেত হিসেবে কাজ করে।শেখ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ এবং দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে তারা একটি শক্তিশালী প্রভাবশালী গোষ্ঠী তৈরি করেছে, যা দেশের গণতন্ত্র এবং রাজনৈতিক স্বচ্ছতার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে শেখ পরিবারের সদস্যদের নিয়োগের মাধ্যমে তারা ক্ষমতাকে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে, যা দেশের রাজনৈতিক জীবনে বৈচিত্র্য এবং প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত করেছে। এছাড়া, ৫ আগস্টের পর শেখ পরিবারের সদস্যদের আত্মগোপন করা এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে অস্বচ্ছতা জনগণের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন তৈরি করেছে। জনগণ তাদের নেতাদের প্রতি সৎ, স্বচ্ছ এবং দায়বদ্ধতা আশা করে, কিন্তু যখন সরকার বা রাজনৈতিক নেতারা তাদের অবস্থান বা কার্যকলাপ সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয়, তখন এটি জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দিক থেকে, শেখ পরিবারের সদস্যদের বিদেশে অবস্থান এবং তাদের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আরো উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে। যদি তারা বিদেশে আশ্রয় নেন, তবে এটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে, কারণ এটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবকেই প্রতিফলিত করে। এই পরিস্থিতি শুধু শেখ পরিবারের জন্য নয়, বরং দেশের জন্যও একটি বড় বিপদ। দেশের মানুষ যখন তাদের নেতাদের কাছে সঠিক নেতৃত্ব এবং স্বচ্ছতা আশা করে, তখন এমন অবস্থা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে আরও অস্থির করে তুলবে। দেশের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যত নির্ভর করছে জনগণের আস্থা এবং সরকারের দায়বদ্ধতার ওপর, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে গভীর প্রশ্নের মুখে রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের উচিত এই ধরনের রাজনৈতিক অস্পষ্টতা এবং পরিবারভিত্তিক শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। দেশের গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নেতৃত্বের স্বচ্ছতা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা অপরিহার্য। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগণের কাছে তাদের কার্যকলাপ ও অবস্থান পরিষ্কার করা, যাতে দেশের ভবিষ্যত গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারে।শেখ পরিবারের কে কোথায় আছে—ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর খোঁজ নেই শেখ পরিবারের কারও। দলের কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূলের নেতারা জেল রিমান্ডে থাকলেও শেখ পরিবারের কারও কিছু হয়নি। ঢাকা ছেড়ে ভারত পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিষয়টি পরিষ্কার। তবে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত শেখ পরিবারের বাকিরা কোথায়?

আজ বুধবার বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে একটি জাতীয় পত্রিকা। যেখানে বলা হয়- হাসিনা বর্তমানে ভারতের দিল্লিতে অবস্থান করছেন, কিন্তু তার সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানা ঢাকা ছাড়লেও তার অবস্থানের বিষয়টি পরিষ্কার নয়। শেখ রেহানার ব্রিটিশ পাসপোর্টও রয়েছে। তাই তিনি বড় বোনের সঙ্গে ভারতে আছেন, নাকি অন্য কোথাও চলে গেছেন—এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থানও অনেকের জানা।প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনা দেশ ছাড়ার আগে থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত। চাকরির কারণে তিনি আগে থেকে ভারতে অবস্থান করছেন।শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নেতৃত্বে পরিচালিত হতো আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। শেখ রেহানার দুই মেয়ে।বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ সংসদের সদস্য। ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী। রেদওয়ান কোথায় অবস্থান করছেন, সেটি অজানা। তবে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।বিগত চার সরকারের নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সরকারের আটজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনার স্বজনরা। সিটি করপোরেশনের মেয়র তিনজন, সহযোগী সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করেন আরও তিনজন।

এ ছাড়া অনেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাই দেশের রাজনীতিতে ঘুরেফিরে এখনো বড় প্রশ্ন—শেখ পরিবারের প্রভাবশালী অন্যরা কোথায়? শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। তার দুই ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইম। ফাহিম ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি ছিলেন। ৫ আগস্টের পর থেকে শেখ সেলিমের পরিবার আত্মগোপনে আছে। শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করছে, শেখ সেলিম এখনো দেশেই আছেন। তবে এই তথ্যের সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শেখ সেলিমের ভাই শেখ ফজলুল হক মনির দুই সন্তান শেখ ফজলে শামস পরশ ও শেখ ফজলে নূর তাপস। ৫ আগস্টের পর থেকে তাঁদের খোঁজ নেই। শেখ তাপস ঢাকার সাবেক এমপি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র। সরকার পতনের দুই দিন আগে সিঙ্গাপুর যান তিনি। শেখ পরশও দেশ ছেড়েছেন বলে জানা যায়।

শেখ সেলিমের ছোট ভাই শেখ ফজলুর রহমান মারুফ ক্যাসিনো বিতর্কের সময় আলোচনায় এসেছিলেন। তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন বলে জানা গেছে। তাঁর ভগ্নিপতি যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীও আত্মগোপনে আছেন। বরিশালের শেখ পরিবার শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ ছিলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র। ৫ আগস্টের পর হাসনাত আব্দুল্লাহ ও ছোট ছেলে সুকান্ত আব্দুল্লাহ দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান বলে জানা গেছে। তবে সাদিক আব্দুল্লাহ কোথায় আছেন—এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর ছোট ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র। তিনি কোথায় আছেন, তা জানা যাচ্ছে না।

খুলনার শেখ পরিবারঃ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের পাঁচ ছেলে। তাঁদের মধ্যে দুজন শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল গত সংসদেও সদস্য ছিলেন। আবার শেখ হেলালের ছেলে শেখ তন্ময়ও গত দুই সংসদের সদস্য ছিলেন। জানা গেছে, হেলাল ও তন্ময় বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।হেলালের আরেক ভাই শেখ জুয়েল। ৫ আগস্টের পর জুয়েল দেশে ছিলেন। তবে তাঁদের আরো তিন ভাই শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বেলাল এখন কোথায় আছেন, তা কেউ জানে না। শেখ পরিবারের অন্যরা

শেখ হাসিনার ফুফাতো বোন শেখ ফাতেমা বেগমের এক ছেলে নূর-ই আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ছিলেন। আরেক ছেলে মুজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী) ফরিদপুর-৪ আসন থেকে টানা তিনবারের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে এই দুই ভাইও আত্মগোপনে আছেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো বোন ফিরোজা বেগমের স্বামী। ৫ আগস্টের পর তিনি ভারত গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।এদিকে গত ১৮ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে প্রাণনাশের আশঙ্কায় ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়। অনেকে ধারণা করছেন, আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শেখ পরিবারের কয়েকজন সদস্য থাকতে পারেন। যদিও আইএসপিআর জানিয়েছিল, পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় অনেকে সেনানিবাস ত্যাগ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট