“মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই, যেন গোরের থেকে মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।”
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই অমর বাণীর সুরে নজরুল পরিবারের উজ্জ্বল প্রতিনিধি প্রয়াত বাবুল কাজীকে স্মরণ করতে চট্টগ্রামের জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চের উদ্যোগে এক আবেগঘন শোক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির এ্যালিগেন্ট টাওয়ারে জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চের সভাপতি ও বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্পী ফরিদা করিমের সভাপতিত্বে এই শোক আলোচনা আয়োজন করা হয়। সভার প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আবাসিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি। অনুষ্ঠানটি সুনিপুণভাবে পরিচালনা করেন জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক মো. কামাল উদ্দিন। শোকসভায় বক্তারা প্রয়াত বাবুল কাজীর জীবন ও আদর্শকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তাঁরা বলেন, “বাবুল কাজী শুধু নজরুল পরিবারের প্রতিনিধি নন, তিনি ছিলেন মানবিক মূল্যবোধে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, মানবপ্রেম ও কাজের প্রতি নিষ্ঠা আমাদের সকলের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” শোকসভায় বক্তব্য রাখেন কাজী জাহাঙ্গীর আলম, সংগীতশিল্পী দিল আফরোজ, নুরুন্নবী জনি, নুরুল জামাল, আবুল কালাম, জসিম উদ্দিন খন্দকার, মুরাদ হাসান, বেলাল উদ্দিন এবং মোহাম্মদ ইব্রাহিম। বক্তারা বাবুল কাজীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “তিনি নজরুলের আদর্শকে ধারণ করতেন এবং তাঁর জীবনকেও সেভাবেই পরিচালিত করতেন। তাঁর কর্মগুণ ও সততার কারণে তিনি আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।” বক্তারা বলেন, “বাবুল কাজী ছিলেন নজরুলের চিন্তাধারা ও মূল্যবোধের এক জ্যান্ত প্রতীক। তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্ত ফুটে উঠেছে। নজরুলের মতই তিনি ছিলেন এক মহীয়সী প্রাণ, যিনি অন্যায়ের প্রতিবাদে দৃঢ় এবং ভালোবাসার ক্ষেত্রে উদার ছিলেন।” শোক আলোচনা শেষে বাবুল কাজীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। উপস্থিত সবাই গভীর আবেগ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁর স্মৃতিচারণ করেন। জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চের এই আয়োজন নজরুলভক্তদের জন্য এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করে। উপস্থিত ব্যক্তিরা শোকের মধ্যে বাবুল কাজীর জীবন থেকে নতুন অনুপ্রেরণা নিয়ে যান। তাঁদের মতে, বাবুল কাজীর মতো মহান ব্যক্তি হারানোর শূন্যতা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়, তবে তাঁর আদর্শ ও মূল্যবোধ আমাদের পথচলার আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে। বাবুল কাজীর স্মৃতিকে চিরজাগরুক রাখতে এবং নজরুলের জীবনবোধের সঠিক উপলব্ধি করতে এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।