1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

নির্বাসিত জীবনের আর্তনাদ

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

স্বপ্নভঙ্গের সূচনা-১

আমি আজ সমাজের চোখে এক পতিতা, রূপোপজীবিনী। অথচ একদিন আমিও ছিলাম স্নেহময় এক মায়ের কোলের মানিক, বাবার আদরের রাজকন্যা। শৈশবের দিনগুলো ছিল হাসি-খুশিতে ভরা। ছোট ভাই-বোনদের সঙ্গে খুনসুটি, স্কুলের বান্ধবীদের সঙ্গে গল্পগুজব—এসব নিয়েই আমার সুন্দর জীবন গড়ে উঠেছিল। বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আমাকে উচ্চশিক্ষিত করে সমাজের একজন সম্মানিত ব্যক্তি বানানোর। কিন্তু সেই স্বপ্ন এক নিমেষেই ধূলিসাৎ হয়ে গেল, যখন ভালোবাসার মোহে পড়ে আমি ভুল করেছিলাম।

সে ছিল আমার স্বপ্নের রাজপুত্র। তার কথার যাদুতে আমি বিভোর হয়ে গিয়েছিলাম। তার প্রেমে পড়ে মা-বাবার কড়া শাসনকেও বিদ্রোহ মনে হয়েছিল। সে আমাকে বলেছিল, “তুমি আর আমি, সারা জীবন একসঙ্গে থাকব। আমি তোমার সুখের জন্য সব কিছু করব।” এই কথাগুলোই ছিল আমার জীবন ধ্বংসের প্রথম পদক্ষেপ।

বিয়ের ঠিক আগের রাতে সে আমাকে নিয়ে পালিয়ে গেল। আমি চোখ বন্ধ করে তার হাতে হাত রাখলাম, কারণ আমার বিশ্বাস ছিল—সে আমার জন্য সব কিছু করতে পারে। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি, সে শুধু আমার শরীরের জন্য আমাকে চেয়েছিল, আমার ভালোবাসার কোনো মূল্য তার কাছে ছিল না।

পর্ব ২: বিশ্বাসঘাতকতা ও পতিতালয়ে প্রবেশ

সেই মানুষটি, যাকে আমি আমার সব কিছু দিয়ে বিশ্বাস করেছিলাম, সে আমাকে একটা অচেনা জায়গায় নিয়ে গিয়ে তার এক বন্ধুর হাতে তুলে দিল। আমি অবাক হয়ে বললাম, “এটা কোথায়? আমরা কি বিয়ে করব না?” সে আমার দিকে তাকিয়েও দেখল না। শুধু বলল, “আমি চলে যাচ্ছি। তুমি এখন থেকে এদের সঙ্গে থাকবে।”

আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না—আমার ভালোবাসার মানুষটি আমাকে এভাবে ঠকাবে! সে চলে গেল, আর সেই বন্ধু আমাকে রাতের আঁধারে এক নিষ্ঠুর শয়তানে পরিণত হলো। আমি চিৎকার করলাম, কাঁদলাম, কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করতে এল না। একরাত, দু’রাত, তারপর ধীরে ধীরে আমি হারিয়ে গেলাম এক অন্ধকার গহ্বরে, যেখানে আমার আত্মা প্রতি মুহূর্তে চিৎকার করত, কিন্তু কেউ শুনত না। সেই বন্ধু যখন আমার উপর তার পাশবিক অত্যাচার শেষ করল, তখন সে আমাকে এক দালালের কাছে বিক্রি করে দিল। আমি তখন বুঝলাম, আমি আর সেই আগের মেয়েটি নেই, যে একদিন মা-বাবার ঘরে হাসিমুখে দিন কাটাত। আমি এখন এক ব্যবসার পণ্য, যেখানে প্রতিদিন হাত বদল হয়, যেখানে আমার ইচ্ছার কোনো মূল্য নেই।

পর্ব ৩: অন্ধকার জীবনের বাস্তবতা

আমার নাম পরিবর্তন হয়ে গেল। যে নামটা আমার মা ভালোবেসে রেখেছিলেন, সেটার অস্তিত্ব আর নেই। এখন আমি এক অচেনা নামে পরিচিত। সমাজের বড়লোক, ক্ষমতাবান পুরুষরা আমাকে তাদের শয্যাসঙ্গিনী বানায়। তারা টাকা দেয়, আদেশ দেয়, আর আমি তাদের খুশি করতে বাধ্য হই। কেউ আমাকে “রূপসী” বলে ডাকে, কেউ “সন্ধ্যার রানী” বলে। কিন্তু আমার কাছে এগুলো অর্থহীন।

দিনের বেলায় সমাজ আমাকে ঘৃণা করে, আর রাতের বেলায় সেই সমাজের বড় বড় মানুষগুলো আমাকে খোঁজে। দামি হোটেল, ব্যক্তিগত ফ্লাইট, বড়লোকদের পার্টি—সব জায়গায় আমি শুধু একটা শরীর। আমি জানি, আমি নরকের মধ্যে বেঁচে আছি, কিন্তু এখান থেকে বেরোনোর পথ নেই।

পর্ব ৪: হৃদয়ের আর্তনাদ

আমার মা-বাবার কথা মনে পড়ে না, কিন্তু ছোট ভাই-বোনদের কথা মনে হলে বুক ফেটে কান্না আসে। ওরা কেমন আছে? ওরা কি জানে, তাদের আদরের আপু কোথায় হারিয়ে গেছে? ওদের জন্য মন কাঁদে, কিন্তু আমি আর ওদের কাছে যেতে পারব না। আমি যদি ফিরে যাই, তবে সমাজ আমায় থু থু দিয়ে তাড়িয়ে দেবে। মা-বাবাও হয়তো আমাকে অস্বীকার করবে।

কখনো কখনো ভাবি, যদি জীবন শেষ করে দিই, তবে কি সব দুঃখ মিটে যাবে? কিন্তু মৃত্যুর জন্যও সাহস দরকার, যা আমার নেই। আমি শুধু বেঁচে থাকি, প্রতিদিন নতুন নতুন পুরুষের স্পর্শ সয়ে।

পর্ব ৫: মুক্তির স্বপ্ন

আমি জানি, আমার মুক্তি নেই। কিন্তু যদি কোনো মেয়ে আমার গল্প শুনে সতর্ক হয়, যদি কেউ প্রেমের ফাঁদে পা না দেয়, তবে হয়তো আমার কষ্টের কিছুটা মূল্য থাকবে।

আমি জানি, এই সমাজ আমার কষ্ট বোঝার চেষ্টা করবে না। তারা শুধু আমাকে নোংরা চোখে দেখবে। কিন্তু আমি চাই, একদিন কেউ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝুক—আমি জন্ম থেকে পতিতা ছিলাম না। সমাজ আর পুরুষদের লালসা আমাকে এই পথে নিয়ে এসেছে।

আমি সেই পথের এক যাত্রী, যে পথ থেকে ফেরার কোনো রাস্তা নেই। হয়তো একদিন কেউ আমার গল্প শোনার পর ভাববে—একজন মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু তার অন্ধবিশ্বাস আর প্রেমের নামে প্রতারণা।

আমি এখনো স্বপ্ন দেখি, একদিন আমার ছোট ভাই-বোনেরা বড় হবে, তারা সমাজের সত্য-মিথ্যা চিনতে শিখবে, তারা ভালো মানুষ হবে। আমি তাদের জন্য গোপনে দোয়া করি, যদিও আমি জানি, তারা আমাকে কখনো আর বোন বলে স্বীকার করবে না।

আমি রূপোপজীবিনী। সমাজ আমাকে যা-ই বলুক, আমি জানি, আমি একদিন মা-বাবার ভালোবাসার সন্তান ছিলাম। কিন্তু এখন আমি শুধুই এক নামহীন, পরিচয়হীন, নির্বাসিত জীবন।

চলবে–

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট