1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৯:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

“রাজশাহীর সুমাইয়া: দাদির কোলের আলো”

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

সুমাইয়ার জীবন যেন পদ্মার শান্ত জলের মতো—ধীরে বয়ে চলে, অথচ গভীর। রাজশাহীর তাহেরপুরে তার শৈশব কেটেছে দাদির স্নেহে। মায়ের অনুপস্থিতি, বাবার দূরত্ব—সব শূন্যতা পূরণ করেছেন দাদি, তার ভালোবাসার পরশে। ঢাকার মিরপুরে এখন সে বাস করে। অনার্স শেষ করে টিউশনি করিয়ে নিজের পথ তৈরি করছে। সুমাইয়ার গল্প যেন দাদির আঁচল গায়ে জড়িয়ে এগিয়ে চলার এক নীরব প্রতিচ্ছবি। এই গল্প শুধু সুমাইয়ার নয়, এটি ভালোবাসা, ত্যাগ আর নির্ভরতার গল্প। দাদির কোলের আলোয় বড় হওয়া সুমাইয়া আজও সেই আলো নিয়ে পথ চলতে চায়—সফলতার দিকে, জীবনের দিকে।সন্ধ্যার বাতাসে রাজশাহীর পদ্মা নদী যখন গাঢ় নীল হয়ে ওঠে, তখন দূরের কোনো গাছের পাতায় সূর্যের শেষ আলো ঝলসে ওঠে। সেই আলোয় যেন একটা অপরিচিত মুখের ছায়া ভেসে উঠল—সুমাইয়া।
ফেসবুকের নীল দুনিয়ায় তার বন্ধুত্বের অনুরোধ এল একদিন হুট করেই। নামটা দেখেই মনে হলো, রাজশাহীর মেয়ে। আমি রাজশাহীর মানুষের প্রতি দুর্বল, এ শহর আমার হৃদয়ে আলাদা এক জায়গা নিয়ে আছে। অনেক স্মৃতি, অনেক প্রিয় মানুষ। রাজশাহী শুধু একটা শহর নয়, যেন এক জীবন্ত কবিতা।
সুমাইয়ার নামের পাশে যখন রাজশাহী লিখা দেখলাম, তখনই মনে হলো—সে আমার চেনা। অথচ সরাসরি কোনোদিন দেখিনি তাকে। কিন্তু লেখকদের এমনই হয়, যাকে দেখিনি তাকে নিয়েই মনে মনে গল্পের চরিত্র বুনতে শুরু করি। সুমাইয়া যেন সেই চরিত্রের একটা বাস্তব রূপ।
“আমি অবিবাহিত, মা নেই। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা থাকেন। আমি দাদির কাছে বড় হয়েছি।”
এই কয়েকটা বাক্য যেন মনের ভেতরে ঝড় তুলল। এমন জীবনের গল্প তো আগেও শুনেছি, পড়েছি। কিন্তু সুমাইয়ার বলা এই কথাগুলো যেন অন্য রকম এক শূন্যতা ছুঁয়ে গেল।
সুমাইয়ার মা যখন তাকে রেখে পৃথিবী থেকে চলে গেলেন, তখন সে খুব ছোট। বাবার ভেতরে যতটুকু পিতৃত্ব ছিল, তা হয়তো দ্বিতীয় সংসারের দেয়ালের ওপারে হারিয়ে গিয়েছিল। দাদিই হয়ে উঠলেন তার আশ্রয়।
আমি চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই, রাজশাহীর পুরনো কোনো বাড়ির উঠানে বসে দাদি ছোট্ট সুমাইয়ার চুলে বিলি কাটছেন। চারদিকে সন্ধ্যার আজান ধ্বনি ভেসে বেড়াচ্ছে, আর দাদি হয়তো বলছেন,
“মা তুই আমার ছায়া। তোকে বড় করতে করতে আমিই হয়তো বুড়িয়ে যাব, কিন্তু তোকে দেখে আমি তাজা থাকব।”
দাদির কোলেই সুমাইয়ার শৈশব কেটেছে। মা-বাবার অভাব কখনো পূরণ হয়নি, তবে দাদির ভালোবাসার আড়ালে সে শূন্যতা ঢেকে গেছে। সেই কোলেই রাতের পর রাত ঘুমিয়েছে, যেখানে দাদি হয়তো কোনো পুরনো দিনের গান গুনগুন করতেন। “দাদি ছিল আমার পৃথিবী,” সুমাইয়া একদিন লিখল চ্যাটে।
“আপু বিয়ের পর আর তেমন আসেন না। ভাই নেই। বাবা অনেক দূরে থাকেন। কিন্তু দাদি আমার সব।” আমি বুঝতে পারি, এই কথাগুলো লিখতে গিয়ে তার চোখের কোণে জল জমেছে। তার মনের ভেতর লুকানো শূন্যতা হয়তো একাকী রাতগুলোয় তাকে আরও কাছে টেনে নেয় দাদির।
একবার জানতে চাইলাম, “তোমার দাদি কেমন মানুষ?”
সে হাসল। তার লেখায় সেই হাসির সুর পাই।
“দাদি খুবই সাধারণ। কিন্তু আমার কাছে তিনি রাজকন্যার চেয়েও বড়। তার হাতের রান্না আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার। ছোটবেলায় যখন অসুস্থ হতাম, দাদি আমার মাথায় হাত রেখে বলতেন—মা তুই ঠিক হয়ে যাবি। সেই হাতের স্পর্শই ছিল আমার ওষুধ।” আমি কল্পনায় দেখতে পাই, রাজশাহীর কোনো পাড়ায়, পুরনো একটি দোতলা বাড়ির জানালা দিয়ে চাঁদের আলো ঢুকছে। সেই আলোয় সুমাইয়া হয়তো তার দাদির কাছে বসে গল্প করছে।
“তোমার মা কোথায়?”
কখনো হয়তো কেউ তাকে জিজ্ঞেস করেছিল।
“মা ওপারে আছেন।”
এই উত্তরটাই সে দেয়। আর মনে মনে ভাবে, তার মা সত্যিই তাকে দেখছেন কি না।
আমি লেখক, আমার কাজ মানুষকে বোঝা। কিন্তু সুমাইয়াকে বোঝার চেয়ে, তার গল্পটাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।
একদিন সুমাইয়া লিখল—
“দাদি এখন খুব অসুস্থ। আমি সারাদিন তার পাশে থাকি। ভাবি, তিনি যদি একদিন না থাকেন, তাহলে আমার পৃথিবীটা শূন্য হয়ে যাবে।”
আমি উত্তর দিলাম, “না, তোমার পৃথিবী কখনো শূন্য হবে না। দাদির ভালোবাসা তোমার ভেতর থাকবে, সবসময়।”
সুমাইয়া কিছুক্ষণ কোনো উত্তর দিল না। মনে হলো, সে দূরে কোথাও তাকিয়ে আছে। হয়তো পদ্মার পাড়ে বসে, নীরবে, দাদির হাত ধরে আছে।
আমি জানি, এই গল্প এখানেই শেষ হয় না। সুমাইয়ার গল্প চলতে থাকে, প্রতিদিন, প্রতিটা মুহূর্তে। আর আমি—আমি শুধু সেই গল্পের ছায়া ধরে লিখে যাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট