চান্দগাঁও পুলিশের সফল অভিযান: অর্থ আত্মসাৎ মামলার রহস্য উদঘাটন, নগদ টাকা ও সিএনজি উদ্ধার”
চান্দগাঁও থানার অভিযানে অর্থ আত্মসাৎ মামলার দুই আসামি গ্রেফতার: উদ্ধার ২,৪০,৫০০ টাকা ও একটি সিএনজি
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার পুলিশের একটি চৌকস অভিযানে অর্থ আত্মসাৎ মামলার দুই আসামি গ্রেফতার হয়েছে। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা এসময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত নগদ ২,৪০,৫০০ টাকা এবং একটি সিএনজি অটোরিক্সা উদ্ধার করেন। ঘটনাটি কীভাবে ঘটে?
মামলার বাদী মোহাম্মদ হারুন সওদাগর (৫৭) একজন ব্যবসায়ী। গত ১১ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ রাত ৯টার দিকে তিনি সিএনজি অটোরিক্সায় (রেজি নম্বর: চট্টমেট্টো-থ-১৩-৬৭৮৪) চান্দগাঁও থানাধীন কাপ্তাই রাস্তার মাথা মোড় থেকে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাত আনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার রোড নং ৮-এর নিজের বাড়ির সামনে নামেন। তবে ভুলবশত তিনি তার সঙ্গে থাকা কালো রঙের একটি হ্যান্ডব্যাগ সিএনজিতে রেখে নামেন। ব্যাগটির ভেতরে নগদ ২,৪০,৫০০ টাকা, মূল্যবান জমির দলিল, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল। তিনি দ্রুত সিএনজি চালকের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগ করেন, তবে সিএনজি চালক নগদ টাকা ও কাগজপত্র ফিরিয়ে দেননি। পরবর্তীতে হতাশ হয়ে হারুন সওদাগর চান্দগাঁও থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ১১ নভেম্বর মামলা (নং-০১৭ (১১)২৪) রুজু হয়।
পুলিশের অভিযান মামলা দায়েরের পরপরই চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তদন্ত শুরু করে। উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ জোন) এবং চান্দগাঁও থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ রেজাউল করিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেন।
১৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে পুলিশের একটি টিম নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের হেফাজত থেকে নগদ ২,৪০,৫০০ টাকা এবং সিএনজি অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের পরিচয় ১. মোহাম্মদ নাছির (৪২): পিতা: হাসান আলী ,মাতা: মরিয়ম ওরফে খতিজা বেগম স্থায়ী ঠিকানা: বালামচর, শাহজাহান চেয়ারম্যানের বাড়ি, লালমোহন, ভোলা, বর্তমান ঠিকানা: বড় পুকুর দক্ষিণ পাড়, রামপুর, হালিশহর, চট্টগ্রাম।
২. মোহাম্মদ ইমরান হোসেন ওরফে দুলাল (৫৮): পিতা: মৃত আইয়ুব আলী,মাতা: মরিয়ম বেগম,স্থায়ী ঠিকানা: চুনাতি, মসজিদবাড়ি, লাকসাম, কুমিল্লা,বর্তমান ঠিকানা: বড় পুকুর দক্ষিণ পাড়, হাজী কেরানী রোড, হালিশহর, চট্টগ্রাম।
উদ্ধারকৃত আলামত,নগদ টাকা: আত্মসাৎকৃত ২,৪০,৫০০ টাকা যানবাহন: একটি সিএনজি অটোরিক্সা পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া উদ্ধার হওয়া অর্থ ও অন্যান্য আলামত বাদীর কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া স্থানীয় জনগণ চান্দগাঁও থানার এই সফল অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তাদের মতে, পুলিশের এমন কার্যকরী ভূমিকা জনসাধারণের আস্থা বাড়াবে এবং অপরাধ দমনে সহায়ক হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি আরও কয়েকটি প্রতারণার ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে থানার কার্যক্রমে যে গতিশীলতা এসেছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ আত্মসাতের জটিল মামলার রহস্য উদঘাটন এবং উদ্ধার অভিযানে তাঁর বিচক্ষণ নেতৃত্ব প্রমাণ করে যে তিনি দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। অপরাধ দমনে তাঁর তৎপরতা এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে আধুনিক পুলিশি কৌশল প্রয়োগের ফলে সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং তার প্রচেষ্টাকে উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। মোঃ আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে চান্দগাঁও থানা এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে, যা অপরাধ দমন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাঁর এই সাফল্যকে সাধুবাদ জানিয়ে এলাকাবাসী আশা করছেন যে, ভবিষ্যতেও তিনি একই নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।