শুভ সকাল। বাটালি হীলে শতায়ু অঙ্গন সবুজ বেষ্টনী, অরণ্যের প্রাণ, শত বছর ধরে জাগুক স্বপ্ন, বন্ধুতায় জাগুক জীবনের গান। লিখতে বসি যতবারই মনে,ফিরে যাই সেই নির্জন কোণে, যেখানে প্রকৃতি বলে যায় কথা, অনুপ্রেরণায় ভরে প্রাণের পথ। বন্ধুরা মিলে লেখার জগতে, ভালোবেসে বাঁধি নতুন মিতালি, বাটালি হীলে জেগে থাকুক চিরকাল,শতায়ু অঙ্গন, আমাদের অনুপ্রাণিত হয়ে মিলে।প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটতে বের হলাম। হাঁটার আগে ভোরের স্নিগ্ধ মুহূর্তগুলোতে যে অনুভূতিগুলো আমার মনে জাগে, সেগুলো প্রকাশ না করলে অসম্পূর্ণ লাগে। ভোরের প্রথম আলো ফুটতেই আমি প্রতিদিনের মতো আজও বের হলাম হাঁটতে। এ সময় প্রকৃতি যেন অন্যরকম মায়াময় রূপ ধারণ করে। আকাশে ভোরের মৃদু লালচে আভা, গাছের পাতায় শিশিরবিন্দুর মিঠে ঝিলিক, আর পাখিদের কাকলি—এসব এক অপার্থিব সৌন্দর্যের মোহনায় নিয়ে যায়। এমন ভোরে, মহান আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা এবং প্রিয় নবী রাসুলের প্রতি শ্রদ্ধা যেন আরও গভীর হয়ে ওঠে। আমি মন থেকে শুনি ভোরের সুমধুর আজান, যা আমার হৃদয়ের প্রতিটি কোণে প্রশান্তি ঢেলে দেয়। নামাজে সেজদায় ঝুঁকে পড়ে আমি খুঁজে পাই আত্মিক সুখের পরম ঠিকানা। নামাজের পর যখন আমি বাটালি হিলের সবুজ অরণ্যের পথে হাঁটতে শুরু করি, মনে হয় প্রকৃতি যেন আমাকে বুকে টেনে নিচ্ছে। শতায়ু অঙ্গনের সবুজ ঘেরা পরিবেশ আর অরণ্যের শীতল বাতাস আমাকে জাগিয়ে তোলে জীবনের গভীরতম আনন্দে। সেখানে শরীরচর্চার সঙ্গে সঙ্গে আমি এক ধরনের আত্মিক যোগসূত্র অনুভব করি। বন্ধুরা যখন একত্রিত হয়ে শরীরচর্চায় অংশ নেয়, তখন সেই মুহূর্তগুলো এক অনন্য সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। তাদের আন্তরিক হাসি আর ভালোবাসার বিনিময়ে মনে হয়, আমি এক পরম আত্মীয়তাবোধের অংশ। গত কয়েক দিন ধরে শতায়ু অঙ্গনের বন্ধুদের নিয়ে আমার লেখালেখি চলছে। তবে গতকালকের লেখার যে সাড়া আমি পেয়েছি, তা আমার হৃদয়কে গর্বিত করেছে। অনেকে প্রশংসা করেছেন, ভালোবাসার আবেগে ভরিয়ে দিয়েছেন। এই প্রশংসা আমার কাছে শুধু শব্দ নয়; এটি আমার আত্মার জন্য এক অনুপ্রেরণার সুধা। তাদের ভালোবাসা আমাকে আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়, লেখকের কাজ শুধু লেখা নয়, ভালোবাসার এক অদৃশ্য সেতু তৈরি করা। শতায়ু অঙ্গনের কয়েকজন বন্ধু আমাকে তাদের নিয়ে লেখার অনুরোধ করেছেন। এরই মধ্যে কয়েকজনকে নিয়ে লিখেছি, তবে সামনে লিখব আমাদের প্রিয় ডাঃ জাহিদুল ইসলামকে নিয়ে। তিনি যে মানুষ, তার মিষ্টভাষী ব্যক্তিত্ব আর প্রতিভা নিয়ে লিখতে পারা আমার জন্য এক বিশেষ আনন্দের বিষয় হবে। তার জীবনের সরলতা ও গুণের যে আলোকচ্ছটা, তা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করতে চাই। শতায়ু অঙ্গন শুধু একটি শরীরচর্চার কেন্দ্র নয়, এটি আমাদের হৃদয়ের সবুজ জাগরণ। এখানে প্রতিদিন আমাদের বন্ধুদের মধ্যে যে আন্তরিকতা আর ভালোবাসার আবেশ ছড়িয়ে পড়ে, তা জীবনের রসদ। এই বন্ধন আমাদের এক করে রাখে, জীবনের সব দুঃখ-যন্ত্রণাকে দূরে ঠেলে দিয়ে একসঙ্গে হাঁটতে শেখায় জীবনের পথে। আমার লেখার মাধ্যমে যদি এই ভালোবাসার অঙ্গনকে সবার কাছে আরও প্রিয় করে তুলতে পারি, তবে নিজেকে ধন্য মনে করব। আমি চাই, শতায়ু অঙ্গনের এই আত্মিক বন্ধন চিরকাল অটুট থাকুক। এ বন্ধন আমাদের জীবনের প্রেরণা হোক, আলো হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি হৃদয়ে।
আন্তরিক মানুষদের আচরণ এবং মিলনের আনন্দ আমাদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করে। আমি আশা করি, এই ভালোবাসার সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকবে।দোয়া ও কৃতজ্ঞতা
শতায়ু অঙ্গনের প্রাণপুরুষ, আমাদের প্রিয় শরীরচর্চার ওস্তাদ ও বন্ধু, গণনার তালে তালে উদ্দীপনা ছড়ানো ইউনুস ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর জন্য সবাই আন্তরিকভাবে দোয়া করবেন। তাঁর এ আকস্মিক অসুস্থতা আমাদের মনে ভার এনে দিলেও আমরা আশা করি, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার সেই চেনা উদ্যম নিয়ে ফিরে আসবেন। এদিকে, গতকাল শতায়ু অঙ্গনে পিঠার আয়োজন ছিল, কিন্তু রহস্যজনকভাবে আয়োজকের নাম জানা যায়নি। তবে সবার ভালোবাসার দৃষ্টি স্বভাবতই আরিফ ভাইয়ের দিকে, কারণ এরকম মহতী আয়োজনের পেছনে তাঁরই হাত থাকার সম্ভাবনা প্রবল। যিনি সত্যিকার অর্থে পিঠার এই উপহার আমাদের উপভোগের জন্য এনেছেন, তিনি নাকি নিজের স্ত্রীর হাতে পিঠা বানিয়ে আমাদেরকে খাওয়াতে না পারার ‘লজ্জা’ থেকে নিজ পরিচয় গোপন রেখেছেন! কিন্তু আমরা জানি, এমন উদার ও সৃজনশীল কাজ গোপনে রাখা যায় না।
তাই, ইউনুস ভাইয়ের জন্য দোয়া আর পিঠার আয়োজকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, আমরা যেন এই বন্ধুত্বপূর্ণ উষ্ণতা ও ভালোবাসার মেলবন্ধন আরও শক্ত করি।
লেখক, সাংবাদিক, কথা সাহিত্যিক, গবেষক ও
টেলিভিশন উপস্থাপক,