আমাদের চট্টগ্রামের মাটির খাঁটি সন্তান ড. মুহাম্মদ ইউনুস চট্টগ্রামের একমাত্র ব্যক্তি নোবেলজয়ী হয়েছেন,চট্টগ্রাম থেকে এই প্রথম রাষ্ট্রের কেউ যদি প্রধান হয়ে থাকে তা হয়েছে আমাদের চট্টগ্রামে কৃতি সন্তান ইউনুস। পৃথিবীতে যদি দারিদ্র্য বিমোচনে সফলতার কথা সর্ব প্রথম তুলে যিনি ধরেছে তিনি হলেন আমাদের এই ইউনুস- তিনিই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করাকালীন হাটহাজারী জোবরা গ্রাম থেকল মাত্র ৮৪৫ টাকা সাহায্যের মাধ্যমে এই দারিদ্র্য বিমোচনে প্রকল্প- পরবতীতে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই চট্টগ্রামে, চট্টগ্রাম ইতিহাস ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতিরসহ সবদিকে প্রাচীন কালথেকে এগিয়ে ছিল, বিশ্বের ইতিহাসে বাংলা তথা নাম জানা বা শোনার হাজারো বছর আগেই চট্টগ্রামের নাম বিশ্ববাসী জানতেন এবং চট্টগ্রামকে চিনতেন। ধর্ম প্রচারসহ প্রাচীনকালের ব্যবসা বাণিজ্যের চট্টগ্রামের
জাতিসংঘের মঞ্চে! শুরুতেই চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলুন, ড. মুহাম্মদ ইউনুস—আমাদের চট্টগ্রামের গর্ব, দারিদ্র্য বিমোচনের বিশ্বনেতা
ইতিহাস ভুলা যাবেনা, বার আউলিয় পানির পথে ধর্ম প্রচার ও বাণিজ্যের সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন এই চট্টগ্রামে, বিশ্ব পরিব্রাজক ইবনে বর্তূতা উপমহাদেশে এই ভারত বর্ষে আগমন করেছিলেন এই চট্টগ্রামে, গৌতমবুদ্ধ এসেছিলেন এই চট্টগ্রামে,
মোঘল সম্রাটের সেনাপ্রতি ১৬৬৬ সালের ২৬ শে জানুয়ারি সায়েস্তা খাঁ চট্টগ্রাম জয় করেছিলেন, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সূচনাও চট্টগ্রামে, বঙ্গবন্ধু ৬দফা দাবী ১৯৬৬ সালের ৭ জুন
চট্টগ্রাম লালদিঘির মাঠ থেকে
আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেছিলেন এই চট্টগ্রাম থেকে। ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীন ঘোষণা দিয়েছিলেন এই চট্টগ্রাম থেকে, স্বাধীনতা যুদ্ধের ১নং সেক্টর ছিলেন এই চট্টগ্রামে- পাকিস্তানের আইয়ুব খানের সময় ফজলুল কাদের চৌধুরী অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনিও এই চট্টগ্রামের, শেখ হাসিনাকে আমিরকার ওয়াশিংটন সিটিতে বিশ্ব দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষদ্ধ লোনের উপর সর্বপ্রথম সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত করে সম্মানিত করেছিলেন যিনি তিনি হলেন আমাদের ইউনুস- যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমিরিকাতে বসে স্বাধীনতা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুর জন্য আত্ম চিতকার ও কান্না করেছিলেন সেই ইউনুস আজ আমাদের বাংলাদেশের অন্তরবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতীয় সংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য জাতীয় সংঘের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন চট্টগ্রামের মাটির খাঁটি সন্তান আমাদের ইউনুস- ধরতে গেলে ঘরের ছেলে ঘরে যাওয়ার মতো হলেও, কিন্তু এখন যাচ্ছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হয়ে, তিনি দীর্ঘ বছর আমিরিকাতে কেটেছেন এবং জীবনের শিক্ষা গ্রহণ ও পরিবার গ্রহণ ও তিনি আমেরিকাতেই করেছেন, তবুও আমাদের চট্টগ্রামের মাটি তারা শরীরে জড়িয়ে আছেন, এই মাটি থেকেই বেড়ে উঠে আজ বিশ্ব জয় করেছেন তা আমাদের চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের গর্ব- তিনি সুযোগ পাইলেই চট্টগ্রামের একেবারে খাঁটি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলেন, তিনি নিজপকে চাটগাঁইয়া পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন, তা আমরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখেছি, আজ তিনি এই প্রথম চট্টগ্রামের সন্তান হিসেবে জাতীয় সংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন, তিনি কিন্তু এই ধরনের হাজারো বক্তব্য বহি বিশ্বর বিভিন্ন দেশে দিয়ে আসছেন, জাতীয় সংঘ উনার জন্য নতুন কিছু নয়, তবে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে এই প্রথম- তাই আমি আজ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনুস সাহেব কাছে নিবেদন করবো বক্তব্য শুরুতে নিজের পরিচয়টা চট্টগ্রামে আঞ্চিক ভাষায় উপস্থাপন করার জন্য, অন্য দিকে পুরো বক্তব্যটা যেন বাংলায় দেন।তিনিতো কয়েক হাজার বক্তব্য ইংরেজিতে রেখেছেন, তিনি যে একজন ইংরেজির ভালো বক্তা সারা পৃথিবীর মানুষ জানেন এবং তাকে ভালো বক্তা হিসেবে চিনেন, তাতে নতুন করে ইংরেজিতে বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা। এই দিকে ছাত্র জনতা আন্দোলনের পর উনার ক্ষমতা গ্রহণ নিয়ে এবং শেখ হাসিনার দেশত্যাগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কতধরনের কথা যে বলা বলি করছে তা কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক তা নির্ণয় করা খুবই কঠিন, তবে সব তর্কবির্তক অতিক্রম করে ভুয়া মন্তব্য এবং অহেতুক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় সংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন – যারা এখনো হারিয়ে যাওয়া ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন ইউনুসের রাষ্ট্রের
দায়িত্ব পালনকে অবৈধ বলেন তা দেখবে নিশ্চয় শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের ব্যর্থতা, লুঠপাট, গণহারে দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্য, অরাজকতা, রাজনৈতিক হানাহানি, ক্ষমতার অপব্যবহার, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যা রাজনীতি করার সাংবাদিক অধিকার ছিন্তাই করাসহ, দমন-পীড়ন চালিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকার হরনকরা ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া ছাত্র জনতা আন্দোলনের পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমনের চেষ্টা এবং গণ হত্যার চিত্র তুল ধরবে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাস্তি কামানার সম্ভবনা বেশি রয়েছে। হয়তো তার এই ভাসন পৃথিবীর সেরা ভাসনও হয়ে যেত পারে, তিনিতো একজন কালজয়ী মহাপুরুষ, এই দেশকে তিনি কি করতে চাই তা হয়তো একটি রুপরেখা দেবেন, তবে আমি মনে করি তিনি এখন যে আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষের ভুমিকায় অবতীর্ণ তা মনোভাব পরিহার করে নিজেকে নিরপেক্ষ সরকারের উপদেষ্টা সেটা প্রমান করার জন্য বিশ্বেবসীর সামনে অঙীকার করার প্রয়োজন রয়েছে, তিনি যদি সত্যি সত্যি নিরপেক্ষ হয় তাহলে তাকে এই দেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে- তাকে নিয়ে আবার একটি নতুন ইতিহাস রচিত হবে।
আমি আবারও বলবো তিনি যেখানে যাকনা কেন তিনি কিন্তু আমাদের চট্টগ্রামের মাটির খাঁটি সন্তান- আরা চাটগাঁইয়া–ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছ থেকে বিশ্ববাসী কী আশা করতে পারে? তিনি ইতিমধ্যে একজন প্রখ্যাত বিশ্বনেতা, আর এখন তাঁর নতুন ভূমিকা বাংলাদেশের নেতৃত্বে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর দক্ষতা, মেধা, এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছে। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে তাঁর যে অগ্রগণ্য ভূমিকা, তা বিশ্ববাসী অবগত। তাঁর নেতৃত্বে গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নয়, গোটা বিশ্বে দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আজ তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন, এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করছেন। তাঁর নেতৃত্বে আমাদের দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা অনেক।
আমরা যখন পেছনের দিকে তাকাই, ১৯৯৬ সালে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে তিনি যে অবদান রেখেছিলেন, তা অনস্বীকার্য। সেই সময় চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সমস্যাসহ অনেক জটিল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন। আজ তাঁর সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, তা হয়তো আগের চেয়ে আরও জটিল, তবে তাঁর অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের মেধা দিয়ে তিনি আবারও সেই জটিলতাগুলো নিরসনে সক্ষম হবেন বলে আমরা আশা করি। তবে, যদি কোনো কারণে তিনি ব্যর্থ হন, তাহলে আমাদের অর্জিত সব সফলতা ম্লান হয়ে যাবে। দেশ গভীর সংকটে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, এবং সামাজিক অরাজকতার মতো ইস্যুগুলো আমাদের চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, ড. ইউনুসের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর নিরপেক্ষ অবস্থান এবং বিশ্বনেতার পরিচয়ে তিনি যদি সফলভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশ আবারও এক নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাবে।
বিশ্ববাসী আশা করছে, ড. ইউনুস তাঁর সুশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নেবেন। তাঁর কাছ থেকে আমরা সঠিক নেতৃত্ব এবং প্রজ্ঞা আশা করি, যা শুধু দেশকে নয়, গোটা বিশ্বকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারে।
তবে যদি কোনোভাবে তাঁর নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশের ভেতরে এবং বাইরে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি হবে। আমাদের সকল অর্জন হারানোর পাশাপাশি, দেশ গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে। তাই, ড. ইউনুসের এই দায়িত্ব কেবল বাংলাদেশের নয়, বিশ্ববাসীর জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠেছে।
এবার সময় এসেছে, ড. ইউনুসকে তাঁর নেতৃত্বের মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে দেশকে সংকট থেকে উত্তরণ করার এবং বাংলাদেশকে আবারও গর্বিত করার।
লেখকঃ গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক ও বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান- দৈনিক ভোরের আওয়াজ, The Daily banner –