পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া বন্দর বাজারের রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। প্রায় ৫ কোটি টাকা বার্ষিক ইজারার এই বাজারে মূল সড়কসহ অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো ভাঙাচোরা, কাদা আর পানিতে ডুবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসে প্রায় ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় বাজারটির ইজারা নেন ইকবাল হোসেন নামের একজন ব্যক্তি। প্রতিবছর বিপুল রাজস্ব আদায় হলেও বাজারের অবকাঠামো উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ—এমন অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর মধ্যে সুন্দরী সিনেমা হলের সামনের রাস্তা এবং কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তা এখন একেবারেই চলাচলের অযোগ্য। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব রাস্তা পানিতে তলিয়ে খালের রূপ নেয়। ফলে ক্রেতারা বাজারে আসতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন।
বিশেষ করে বাজারের প্রায় ১৫০ ফুট দীর্ঘ একটি সড়ক দিয়ে বাইতুল আমান নূরানী হাফেজী মাদ্রাসার ২০০ শিক্ষার্থী ও পাশের মসজিদের শত শত মুসল্লি প্রতিদিন যাতায়াত করেন। কিন্তু ওই রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। একই সড়ক দিয়েই ঢাকামুখী পরিবহন থেকে নামানো মালপত্র ওঠানামা হয়। এ অবস্থায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে, ব্যবসায়ীদের মালামালের ক্ষতি হচ্ছে এবং লেবাররা আহত হচ্ছেন।
ধান-চাল ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মাত্র ১৫০ ফুট রাস্তার কারণে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মালামাল পরিবহনে কষ্ট হচ্ছে, বারবার দুর্ঘটনাও ঘটছে। দ্রুত রাস্তা সংস্কার না হলে ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাবে।”
ব্যবসায়ীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, কোটি কোটি টাকার ইজারা দেওয়ার পরও বাজারের রাস্তাঘাট সংস্কার হয় না। এতে ক্রেতারা আসতে চায় না, ব্যবসা মন্দার দিকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে বাজার ইজারাদার ইকবাল হোসেন জানান, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এককভাবে রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব নয়। তবে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে কোটি টাকার ইজারার বাজারে এমন করুণ পরিস্থিতি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।