বান্দরবানের লামা পৌর এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ লিটার পানি উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ‘লামা পৌর পানি সরবরাহ প্রকল্পের’ কাজ শুরু করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
একই প্রকল্পে ১৬৪৩টি পাবলিক ও হাউজ হোল্ড টয়লেট নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর যৌথ অর্থায়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ ২০২৯ সালে শেষ হওয়ার কথা জানান সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর লামা উপজেলা অফিস সূত্রে জানা যায়, লামা পৌর এলাকায় বর্তমানে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২০ লাখ লিটার। অতীতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর লামায় পানি সরবরাহ লাইনের কাজ করলেও নানা সমস্যার কারণে প্রকল্পটি সম্পন্ন হয়েও পানি সরবরাহ শুরু হয়নি। বর্তমানে লামা পৌরসভার এক মাত্র পানি সরবরাহ প্রকল্পটি গড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ লিটার পর্যন্ত পানি সরবরাহ করতে পারে, যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। লামা পৌরসভা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যৌথ প্রচেষ্টায় এবং এডিবি’র অর্থায়নে অবশেষে লামা পৌর এলাকার নিরাপদ পানির সমস্যা সমাধানে “পার্বত্য চট্টগ্রাম সমন্বিত ও টেকসই পৌর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন” শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আরও জানায়, এই প্রকল্পের অধীনে লামা পৌর এলাকায় বিভিন্ন আকারের ১০০ কিলোমিটার পাইপ স্থাপন, ৬ লাখ ৮০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ, ৫ লাখ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ওভার গ্রাউন্ড রিজার্ভার নির্মাণ, একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ, ১টি সলিড ওয়েস্ট ও ফিকাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ, ১২টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ৬টি পাবলিক টয়লেট সংস্কার, ৮৫৭টি হাউজনহোল্ড টয়লেট নির্মাণ এবং ৭৬৮টি বিদ্যমান টয়লেটে সেফটি ট্যাংক স্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যে পাইপ স্থাপন/লেইনের কাজ শুরু হয়েছে, যা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিলানি ট্রেডার্স সম্পন্ন করছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিলানি ট্রেডার্সের পক্ষে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শামীম সিকদার বলেন, প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। রিজার্ভ ট্যাংক ও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। লামা পৌরসভা থেকে হাউজ হোল্ড টয়লেটের আবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর লামার সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রাজ্জাক বলেন, লামা পৌর এলাকায় বরাবরই নিরাপদ সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পৌর এলাকার নিরাপদ পানির সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। একি সাথে পৌর এলাকার মানুষ স্যানিটেশন সুবিধা পাবে। তিনি আরও বলেন, এই কাজে উপজেলা প্রশাসন ও লামা পৌরসভা প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে।