➤ দূর্নীতি বন্ধ হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে চক্রের সদস্যরা।
➤আত্যসাত কৃত অর্থ উদ্ধারের নেই কোন পদক্ষেপ
‘ফর হায়ার’ ও ‘হায়ার্ড’ শব্দ প্রদর্শনের যন্ত্র এখন বিআরটিএকে ঘিরে গড়ে ওঠা এক নতুন দুর্নীতির অস্ত্র। যন্ত্রটি মূলত অটোরিকশা ভাড়ার অবস্থা দেখাতে ব্যবহৃত হওয়ার কথা, অথচ বাস্তবে এটি হয়ে উঠেছে কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্যের হাতিয়ার।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল থেকে এই যন্ত্র প্রতিটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় বসানো বাধ্যতামূলক হলেও বাস্তবে তা হয়ে উঠেছে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের চরম লাভের উৎস। জানা যায়, এই যন্ত্র না লাগালে দেওয়া হচ্ছে না কোনো ফিটনেস সনদ। তবে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় এই যন্ত্র না লাগালেও মিলছে ফিটনেস সনদ। ভাড়ায় নিয়ে লোক দেখানো ছবি তুলে চলছে কোটি টাকার বাণিজ্য। অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিআরটিএ সংলগ্ন ‘খাজা আজমীর অনলাইন জোন’ নামের দোকানে ভাড়ায় পাওয়া যায় এই যন্ত্র। লাইনে দাঁড়ানোর সময় গাড়ির ছাদে এটি বসিয়ে ছবি তোলা হয়, আর কাজ শেষ হলে তা ফেরত দিয়ে ভাড়া মেটানো হয়। দিনে গড়ে ১০০-১৫০টি গাড়িকে এই যন্ত্র ভাড়া দিয়ে দোকানগুলো আয় করছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা, যা মাসে দাঁড়ায় লাখ টাকার বেশি। একটি ‘ফর হায়ার’ যন্ত্রের প্রকৃত দাম ৩০০-৫০০ টাকার মধ্যে হলেও, সেটি কিনতে গাড়ির মালিকদের খরচ হচ্ছে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন ধাপে চলছে এই যন্ত্র বসানোর নামে চাঁদাবাজি: প্রথমত সরকারি ফি বাবদ দুই হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফট করতে হয়। সেই টাকা দিয়েই বিআরটিএর বাইরে বসে থাকা ঠিকাদারের কাছ থেকে কিনতে হয় যন্ত্রটি। অতঃপর, ৩০০-৫০০ টাকার বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে নেওয়া হয় কেনার ভাউচার। সবশেষে ফাইল ড্রপিং এবং ফিটনেস ঐঅনুমোদনের জন্য দিতে হয় অতিরিক্ত আরো ১৫শ’ টাকা। তথ্য মতে, চট্টগ্রাম নগরে ১৩ হাজার সিএনজি চালিত অটোরিকশা রয়েছে। প্রতিটি গাড়ি থেকে ৬ হাজার টাকা করে আদায় হলে পুরো চক্রের ব্যবসা দাঁড়ায় প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকায়। ‘ফর হায়ার’ যন্ত্র বিক্রির অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, তারা প্রতিটি যন্ত্র ২০০০ টাকায় বিক্রি করছে। যদিও প্রকৃত খরচ ৩০০-৫০০ টাকা। এতে প্রতিষ্ঠানটির লাভ দাঁড়ায় ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মতো এবং এর বড় অংশ চলে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পকেটে।
বিআরটিএর দুর্নীতির সাথে হাত মিলিয়েছে এক দল দালাল চক্র ও আশপাশের টাইপিং দোকানগুলো। কর্মকর্তারা নানা ছুতোয় সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করছে। অটোরিকশাগুলোর মিটারে চলাচল নিশ্চিত করতে না পারলেও ‘ফর হায়ার’ যন্ত্র বাস্তবায়নে হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিআরটিএ। অথচ যাত্রী স্বার্থ বা সেবার মানোন্নয়নে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিএনজি মালিক বলেন, চট্টগ্রাম বিআরটিএ’র প্রকৌশলী মাসুদকে বিষয়টি জানিয়েও কোনো ফল পাইনি। বরং তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ফর হায়ার লাগাও, না হলে রাস্তায় নামতে পারবে না। গাড়ি চালাতে হলে এসব খরচ করতেই হবে। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে যখন জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করে এর পর থেকে আমরা আর হয়রানি সিরকা হচ্ছি না। যদি এইটি সরকার অনুমোদিত হতো প্রতিবেদন এর পর কেনো বন্ধ হলো। আর এর পরেও আইন প্রয়োগ কারি সংস্থা গুলো চুপ কেনো তাই আমাদের অবাক করে। অনুসন্ধান বলছে, বিআরটিএ এখন আর কেবল একটি সেবা প্রতিষ্ঠান নয়- এটি হয়ে উঠেছে ঘুষ ও দালাল নির্ভর বাণিজ্যিক কেন্দ্র। যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপেই জড়িয়ে আছে দুর্নীতির এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় যে চট্টগ্রামে চক্রের সদস্যরা হলেন মোঃ ফারুক, এ,আর খোকন ও মোঃ সোহাগ। আরো বেশ কিছু তথ্য পাওয়া তাদের বিষয়ে সেইটি হচ্ছে মোঃ ফারুক ও এ,আর খোকন অতিতে ট্রেড ইউনিয়ন এর সদস্য ছিলো। ট্রেড ইউনিয়ন করাকালীন তাদের সাথে সক্ষতা গড়ে উঠে আওয়ামী বেশ কিছু উচ্চ পদস্থ নেতা কর্মী দের সাথে। এই নেতা কর্মীদের প্রভাব খাটিয়ে চট্টগ্রাম বি,আর,টি,এ তে নিয়োগ দিতে থাকে একে পর এক দালান তাদের কর্মীদের দেখা যায় বি,আর,টি,এ বিভিন্ন শাখা অফিসে। বিভিন্ন সময় অভিযানে তাদের সদস্যরা দরা পড়লে ও দরা ছোঁয়া বাহিরেই তাথে মূল হোতা মোঃ ফারুক ও এ,আর খোকন। তাদের কে এখন সহযোগিতা করছে বিতর্ককৃত জাতীয়তাবাদ সড়ক পরিবহন শ্রমিক দল এর উচ্চ পদস্থ নেতা বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদবাজীর নতুন ফরমুলা তৈরি করে লাখ লাখ টাকা অতস্ত করেছে বলে জানা যায়। এই চক্রের সাথে সম্পর্কে থাকতে পরে চট্টগ্রাম বিআরটিএ’র প্রকৌশলী মাসুদ বলে জানান অনেকে, কিন্তু বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় এই বিষয়গুলো নিয়ে দুটি অভিযোগ দাখিল করে সিএনজি মালিকরা। অভিযোগে তুলে দরা বিষয়ে অনুসন্ধান করে আইন প্রয়োগের অনুরোধ জানান ভুক্তভোগীরা। দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোঃ আবুল হোসেন এর সাথে অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগগুলো আমরা ঢাকা কার্যালয় পাঠানো হবে সেখান থেকে চেয়ারম্যান এর দিক নির্দেশনায় অনুসন্ধানের পর অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বিআরটিএ’র প্রকৌশলী মাসুদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে কোন বক্তব্য দিতে পারবে না বলে জানান।