চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বহুমাত্রিক থানা হলো কোতোয়ালি থানা। ইতিহাস, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, জনবসতি ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড—সব মিলিয়ে এটি এক অতি সংবেদনশীল এলাকা। এই থানার ভার নেওয়ার পর থেকেই ওসি আব্দুল করিম পরিস্থিতি মোকাবেলায় যে বিচক্ষণতা, পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তারই স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ব্যাজ—যা পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ পেশাগত সম্মানগুলোর একটি।
কোতোয়ালি: চট্টগ্রামের কেন্দ্রস্থলে সংকট ও সম্ভাবনার থানা
কোতোয়ালি থানা শুধু একটি প্রশাসনিক এলাকা নয়; এটি চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার প্রতিদিনের জনচাপ, রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং, ধর্মীয় আয়োজন কিংবা ছাত্র আন্দোলন—সবই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া এবং সফলভাবে তা পালন করা নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন।
ওসি আব্দুল করিম: শৃঙ্খলা ও মানবিকতার অনন্য মেলবন্ধন
ওসি আব্দুল করিম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই প্রতিটি সংকটকে দায়িত্বের চোখে দেখেছেন। তাঁর নেতৃত্বে কোতোয়ালি থানা এলাকার মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার হয়েছে, কিশোর গ্যাং নির্মূলে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া হয়েছে, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ইভটিজিংয়ের মতো অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তিনি থানাকে একটি ‘জনবান্ধব সেবাকেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন—যেখানে অভিযোগ দাখিল, তদন্ত এবং সমাধান সবই হয় দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে।
তিনি বিশ্বাস করেন, পুলিশের মূল শক্তি হলো জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণ। তাই তিনি সরাসরি এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন, উঠান বৈঠক করেন, স্কুল-কলেজে গিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং নানা সামাজিক উদ্যোগে পুলিশের সক্রিয়তা নিশ্চিত করেন।
আইজিপি ব্যাজ: রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রতীক
বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ব্যাজ কোনো আনুষ্ঠানিক বা প্রথাগত পুরস্কার নয়—এটি একটি জ্বলজ্বলে সম্মান, যা কেবলমাত্র তাদেরকেই দেওয়া হয় যারা পেশাগত জীবনে ব্যতিক্রমী সফলতা, সৎ নেতৃত্ব এবং মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়েছেন। ওসি আব্দুল করিমের এই ব্যাজপ্রাপ্তি তাঁর নিষ্ঠা, সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের এক অবিস্মরণীয় স্বীকৃতি।
এই ব্যাজ তাঁর জন্য যেমন গর্বের, তেমনি চট্টগ্রামবাসীর জন্যও এটি এক আত্মবিশ্বাসের উৎস। কারণ এই ব্যাজ বলে দেয়, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে এখনো এমন অফিসার আছেন যারা জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন।
পুলিশের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে অনুকরণীয় ভূমিকা
আজ যখন দেশের অনেক জায়গায় পুলিশের ভাবমূর্তি প্রশ্নের সম্মুখীন, ঠিক তখনই ওসি আব্দুল করিমের মতো অফিসাররা প্রমাণ করছেন—সততা, দক্ষতা আর আন্তরিকতাই পারে মানুষের হৃদয় জয় করতে। তিনি শুধু একজন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন, বরং একজন পথপ্রদর্শক, যিনি দেখিয়ে দিয়েছেন—কীভাবে দায়িত্বশীল পুলিশিং একেকটি থানা এলাকায় স্থায়ী শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
ওসি আব্দুল করিমের আইজিপি ব্যাজ প্রাপ্তি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়—এটি তাঁর সততা, নিষ্ঠা এবং মানবিক নেতৃত্বের যৌক্তিক পুরস্কার। তাঁর নেতৃত্বে কোতোয়ালি থানায় যেমন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তেমনি মানুষের আস্থাও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অর্জন শুধু তাঁর একার নয়, এটি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রতিটি সদস্য, এলাকার প্রতিটি বাসিন্দা এবং রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রতি এক গভীর অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এমন পুলিশ কর্মকর্তারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনে সাহস ও আশার প্রতীক হয়ে থাকবে।