1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

সাদিয়ার আম্মু এবং এক অচেনা হৃদয়দ্বার

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

প্রথমে আমি একটু বিস্মিতই হয়েছিলাম। “সাদিয়ার আম্মু” নামে একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বন্ধুত্বের অনুরোধ এলো হঠাৎ করেই। এমন নাম সচরাচর চোখে পড়ে না—মনে হলো কারো মা নিজেকে মেয়ের পরিচয়ে পরিচিত করাচ্ছেন।
আমি সঙ্গে সঙ্গে গ্রহণ করিনি সেই অনুরোধ। সামাজিক মাধ্যমের এই অতল জগতে প্রতিটি নামের আড়ালে অনেক গল্প লুকিয়ে থাকে, আর আমি বিশ্বাস করি—সবকিছুর আগে জানাটা জরুরি, বোঝাটা আরও জরুরি।
তবে সেই আহ্বান একবার দেখে রেখে ফেললাম মনে। মানুষ মাত্রেই কৌতূহলী—আমি জানতে চাইলাম কে এই “সাদিয়ার আম্মু”? তার প্রোফাইল ছিল সংযত, সজ্জিত এবং অনাড়ম্বর। কোথাও চোখ ধাঁধানো ছবি নেই, কিন্তু কিছু লেখা, কিছু শেয়ার, কিছু মন্তব্য—সেইসবের ভাঁজে যেন একটা পরিপক্ব হৃদয়ের আলতো আলো ছড়িয়ে ছিল। তারপর থেকে শুরু হলো আমার নিজস্ব এক অনুসন্ধান—কিন্তু কোনো জিজ্ঞাসু প্রশ্ন নয়, না কোন প্রস্তাব। আমি যা বলতে চেয়েছি, তা নিজের মতো করেই লেখার মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি। আমার পরিচয়, আমার বিশ্বাস, আমার শহর, আমার ভাবনার ভেতরকার আলো-আঁধারির খেলা—সবকিছু আমি খুলে দিয়েছি তার সামনে।
সে কিন্তু তেমন কিছু বলেনি। উত্তর এসেছে সংক্ষিপ্ত, সংযত, মৃদু হাসিতে মোড়া।
আমি এখনো জানি না সে কে। আমি তাকে চিনিনা, জানি না, কখনো দেখিনি, কখনো মুখোমুখি কথা হয়নি। আমাদের বন্ধুত্বের বয়সও বেশি নয়—শুধু কিছু দিন। তবে এই অল্প দিনের মধ্যে তার আংশিক একটি পরিচয় পেয়েছি—একটি কোমল হৃদয়ের, আত্মমর্যাদাশীল এক নারীর, যার শব্দ কম, ভাবনা গভীর।
আমার মনে হয়, সে একজন ভালো মানুষ। হয়তো এখনো পুরোপুরি বোঝা যায়নি, কিন্তু যে স্পর্শ মনকে নড়ে দেয়, তার নাম চেনা না হোক, অনুভব সত্যি হয়।
এই যে সামাজিক মাধ্যমের ছায়ালোক, এর মধ্যেও যদি এমন কেউ আসে, যার প্রতি এক ধরনের শ্রদ্ধা জন্মায়, যাকে দেখে মন বলে—”এই মানুষটি হয়তো আলাদা”, তাহলে সেখানে হৃদয়ের ভাষা চুপ থাকতে পারে না।
তাকে আমি চট্টগ্রামে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি—হয়তো সে আসবে না কখনো, হয়তো একদিন হঠাৎ করেই এসে বলবে, “আমি সাদিয়ার আম্মু, আপনি যে গল্প লিখেন, আমি সেগুলো পড়ি।”
জানি না, ভবিষ্যতের পাতায় কী লেখা আছে। তবে এইটুকু বলতে পারি—প্রথমবার কোনো অচেনা প্রোফাইলকে আমি প্রত্যাখ্যান করেছিলাম, পরে সেই অচেনাকেই আমি একটি গল্পের পাতায় ঠাঁই দিলাম।
এমন অচেনা কেউ যদি আপনার জীবনে এসে দাঁড়ায়, তার নামটা আপনি ভুলে গেলেও, তার রেখে যাওয়া অনুভবটা আপনি কখনো ভোলেন না।
তার বাড়ি বগুড়া, থাকে ঢাকার নাখালপাড়ায়—এইটুকু জানতে পেরে মনে হলো, যেন অচেনা থেকে একটুখানি চেনা হয়ে উঠলো সে। আমি নিজেও জানি না কেন, বগুড়ার মানুষদের প্রতি আমার এক অজানা টান আছে। হয়তো সেখানকার ভাষা, সরলতা, কিংবা হৃদয়ের মতো খোলা মাঠের মানুষ—সব মিলিয়ে আমি বগুড়াকে ভালোবাসি। তাই হয়তো, মনে মনে তাকে আরেকটু কাছের করে ফেলেছিলাম, অজান্তেই।
কিন্তু সম্পর্কের সূচনা যখন হয় ফেসবুকের পাতায়, তখন সেখানে সূর্যের আলো যেমন থাকে, তেমনি ছায়াও ছায়ার মতো জড়িয়ে থাকে। আমি ঢাকায় যাওয়ার সংবাদটি খুব স্বাভাবিকভাবে তাকে জানিয়েছিলাম—না কোনো উদ্দেশ্য, না কোনো প্রত্যাশা। শুধু বলেছিলাম—”আমি ঢাকায় যাচ্ছি”, যেন এক বন্ধুকে বলা হয়, যাকে আপনি না চেনেন, তবু শ্রদ্ধা করেন।
কিন্তু সে যেন সেটিকে অন্যরকম করে বুঝলো।
তার উত্তরটা ছিল কিছুটা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মতো—
“আপনার সাথে আমার কি কোনো পরিচয় আছে?”
আমি থমকে গেলাম।
হ্যাঁ, তার সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় নেই। সেটি অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু যদি পরিচয়ের শুরুই হয় বন্ধুত্বের আহ্বানে, যদি সেই ছোট্ট ‘Request Sent’ বাটনের ভেতরে ঢুকে যায় হাজারো সম্ভাবনার নুড়ি-কণা—তাহলে কি এই প্রশ্নটা সত্যিই দরকার ছিল?
তবু আমি ভুল করিনি। হয়তো সে করেছে। অথবা—সে ভয় পায়। হয়তো তার অভিজ্ঞতা ভালো নয়, হয়তো সামাজিক এই প্যান্ডোরার বাক্সে কেউ তাকে কষ্ট দিয়েছিল, তাই সে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে নিজেকে বাঁচাতে।
তার প্রশ্নে আমি কষ্ট পেয়েছি—সে কথা সত্যি। কিন্তু আরও সত্যি হলো—আমি রাগ করিনি। আমি জানি, এক নারীর ভেতরে কত শত আশঙ্কা বাস করে, কতদূর ভেবেই তবে সে কাউকে বিশ্বাস করতে শেখে।
আমি ভাবলাম—পরিচয় তো আসতেই পারতো, যদি সময় পেত।
আমার দিক থেকে পরিচয় ছিল—শুধু সে জানত না, জানতেই দিল না।

এমনও হতে পারে, এ গল্প এখানেই শেষ হয়ে যাবে। হয়তো সে আমাকে ব্লক করবে, হয়তো আমাকে আর কখনো মেসেজ দেবে না, কিংবা আমি চুপ থাকব, এই অপ্রীতিকর সংলাপের পর।
তবে তাতে কী আসে যায়? কিছু মানুষ গল্প হয়ে আসে, আবার কিছু মানুষ গল্পের গভীরে এসে থেমে যায়। সে হয়তো সেই দ্বিতীয় ধরনের মানুষ।
তবুও আমার মনের কোন এক কোণে এখনো এক আশা জেগে থাকে—
হয়তো একদিন, কোনো এক ভোরে, সে বুঝবে—
কেউ তাকে বিরক্ত করতে নয়, বিশ্বাস করতে চেয়েছিল।
কেউ তার কাছে সময় চায়নি, শুধু একটু সত্য চেয়েছিল।
চলবে—

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট