1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

সুবিধাবাদী সাংবাদিকদের মুখোশ উন্মোচন: এখন তারা কোথায়

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক, লেখক এবং টেলিভিশন উপস্থাপক। বুকের ওপর হাত রেখে বলতে পারি—আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লিখেছি, গবেষণা করেছি, এখনও লেখার চেষ্টা করি। কিন্তু বিনিময়ে শেখ হাসিনার কাছ থেকে এক টুকরো সুবিধাও গ্রহণ করিনি। আমার কলম কখনো দালালি করেনি, আমার লেখা কখনো তোষামোদে বিক্রি হয়নি। শুধু শেখ হাসিনা নন, তার সরকারের কোনো মন্ত্রী, এমপি, মেয়র বা আমলা—কাউকেই তুষ্ট করার জন্য আমি কলম ধরিনি, সুযোগ-সুবিধার লোভেও পড়িনি। কিন্তু আজকের প্রশ্ন হলো—যারা শেখ হাসিনাকে তেল মেরে, প্রশংসার মালা গেঁথে, একের পর এক দলবাজি করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে, তারা আজ কোথায়? যারা শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আচরণকে উৎসাহিত করেছে, তার অন্যায় সিদ্ধান্তগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে, আজ তারা কোন মুখে মানুষের সামনে আসবে?

সাংবাদিকতা জাতির বিবেকের কণ্ঠস্বর। সেই সাংবাদিকতা যখন ব্যক্তিস্বার্থের বলি হয়, তখন শুধু পেশা নয়, পুরো জাতি এক গভীর সংকটে পড়ে। আমাদের দায়িত্ব ছিল শেখ হাসিনার ভুলগুলো আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া, তার একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। কিন্তু সেই দায়িত্ব ভুলে গিয়ে কিছু সুবিধাবাদী সাংবাদিক দালালিতে লিপ্ত হয়েছিল। তারা শেখ হাসিনার সকল অপকর্মকে স্বাগত জানিয়ে এগিয়ে নিয়েছিল, তার লুটপাট, দমন-পীড়ন, বাকস্বাধীনতা হরণের পক্ষে সাফাই গেয়েছিল।

আজ আমরা সবাই জানি—স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করতে শেখ হাসিনার সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামের এক ভয়াবহ শৃঙ্খল তৈরি করেছিল। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য যেখানে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রয়োজন ছিল, সেখানে তারা উল্টো এমন একটি কালো আইন করল, যা সাংবাদিকদের গলা টিপে ধরল। অথচ সেই সময় এই সুবিধাভোগী সাংবাদিকরা দল বেঁধে শেখ হাসিনার পক্ষে সাফাই গেয়ে গেছেন, তার স্বৈরাচারী শাসনের প্রশংসা করেছেন, বিরোধী মতকে দমন করতে তাকে উৎসাহিত করেছেন।

তারা কি জানত না, এই দেশ লুটপাটের সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছে? হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে, অথচ তারা দেখে না দেখার ভান করেছে। সেই লুটেরাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, তাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে নিজেরাও নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভরিয়েছে। আজ শুনি—একেক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শত শত কোটি টাকা! অথচ কত নির্লজ্জ হলে সাংবাদিকতার মুখোশ পরে এই কালো টাকা তারা ভোগ করতে পারে?

অসংখ্য নির্ভীক সাংবাদিক আজও সংগ্রাম করে জীবন চালায়। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখে, সত্য তুলে ধরে। অথচ তাদের জন্য এই সুবিধাভোগী সাংবাদিকরা কিছুই করেনি। তারা কি একবারও চেষ্টা করেছে নির্যাতিত সাংবাদিকদের জন্য দাঁড়াতে? কখনো কি চেষ্টা করেছে শেখ হাসিনার অন্যায় আইনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে?

অবাক লাগে, যখন দেখি—এক সময় যাদের মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম শুনতে শুনতে গালে ফেনা উঠে যেত, যারা কথায় কথায় জাতির পিতার চেতনার কথা বলত, আজ তারা চুপ করে আছে। তাদের এই নীরবতা কি লজ্জার? নাকি ভয় তাদের ঘিরে ধরেছে? সময়ের পরিক্রমায় সত্য কখনো চাপা থাকে না। আজ যখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হচ্ছে, তখন সুবিধাবাদী সাংবাদিকরা নিজেদের লুকানোর জায়গা খুঁজছে। তাদের সেই প্রতাপ আর নেই, নেই সেই জাঁকজমকপূর্ণ জীবন। যারা অন্যায়ের পক্ষ নিয়েছিল, সময়ের বিবর্তনে তারা আজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে চলেছে।

সাংবাদিকতা হলো জনতার পক্ষের শক্তি, দালালির হাতিয়ার নয়। যারা এই পবিত্র পেশাকে বিক্রি করেছে, তারা একদিন ভুলে যাবে, কিন্তু ইতিহাস ভুলবে না। সময় এখন তাদের মুখোশ সম্পূর্ণভাবে খুলে দেওয়ার, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ সাংবাদিকতার পোশাক পরে দালালি করার দুঃসাহস না দেখায়! শেখ হাসিনার আনুকূল্যে প্রাপ্ত সম্পদ, ব্যাংক লেনদেন ও বর্তমান বাস্তবতা বাংলাদেশের গণমাধ্যম সবসময়ই রাজনৈতিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে, যখন একদল সাংবাদিক মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবর্তে রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেন, তখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ২৮ জন সাংবাদিকের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চাওয়ার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকদের ভূমিকা। কীভাবে তারা শেখ হাসিনার সরকার থেকে সুবিধা নিয়েছেন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন—এই প্রতিবেদনে সে বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হলো।

শেখ হাসিনার সরকার থেকে প্রাপ্ত সুবিধাগুলো

১. আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর, সরকারপন্থী সাংবাদিকদের জন্য নানা সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো,১. সরকারি অনুদান ও বিজ্ঞাপন সুবিধা সরকারি বিজ্ঞাপনই ছিল বেশ কিছু সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান আয়ের উৎস। সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালানো সাংবাদিকরা সরাসরি এই সুবিধা পেয়েছেন।

২. পদোন্নতি ও প্রভাবশালী পদে নিয়োগ বিভিন্ন সাংবাদিককে উচ্চ পর্যায়ের সরকারি পদে বসানো হয়েছে। যেমন, শাবান মাহমুদকে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যা একজন সাংবাদিকের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পদ। ৩. সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে অনুদান সরকার গঠিত সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট মূলত অসচ্ছল সাংবাদিকদের জন্য হলেও, এক শ্রেণির সুবিধাবাদী সাংবাদিক নিয়মিত এ থেকে অর্থ পেয়েছেন।

৪. জমি, ফ্ল্যাট ও গাড়ির সুবিধা

সরকারি ঘনিষ্ঠতার কারণে কিছু সাংবাদিক সরকারি জমি, ফ্ল্যাট ও বিশেষ ব্যাংক ঋণের সুবিধা পেয়েছেন। অনেকের নামে জমি ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয়েছে, যা তাদের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করলে প্রশ্নবিদ্ধ।

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের বিতর্কিত আইন ও সাংবাদিকদের ভূমিকা

সরকারপন্থী সাংবাদিকরা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণমূলক আইনগুলোর পক্ষে ছিলেন। তারা সরকারের কঠোর অবস্থানকে সমর্থন করেছেন এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

১. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) সমর্থন ২০১৮ সালে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তবে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকরা এই আইনের পক্ষে অবস্থান নেন এবং সরকারের দমননীতি সমর্থন করেন।

২. সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে অবস্থান সরকারবিরোধী সংবাদ প্রকাশিত হলে, তারা টকশো ও কলামে তার সমালোচনা করতেন এবং বিরোধী সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতেন।

৩. বিরোধী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রচারণা স্বাধীন সাংবাদিকতা নিয়ে যারা কথা বলতেন, তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তারা বিরোধী সাংবাদিকদের ‘ষড়যন্ত্রকারী’ আখ্যা দিয়ে সরকারের কঠোর পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

বর্তমান বাস্তবতা: এখন তারা কোথায়?

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকরা সংকটে পড়েছেন। তাদের অনেকেই আর আগের মতো সুবিধা পাচ্ছেন না। ১. ব্যাংক লেনদেনের তদন্ত

বিএফআইইউ ২৮ জন সাংবাদিকের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়েছে। এটি প্রকাশ হওয়ার পর, তাদের সম্পদের উৎস নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

২. চাকরি হারানোর শঙ্কা সরকারের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন হলে, এসব সাংবাদিকদের চাকরি ও পেশাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। ৩. প্রতিপক্ষের টার্গেট হওয়া

যেহেতু তারা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাই নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রতিপক্ষের চাপে পড়তে পারেন।

৪. আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তাদের ভূমিকা যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল, তারা দলের স্বার্থে কাজ করেছেন। তবে এখন আওয়ামী লীগ চাপে পড়লে, তারা অনেকটাই নীরব।

আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়া সাংবাদিকদের তালিকা

১. নঈম নিজাম – বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক

২. ফরিদা ইয়াসমিন – জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি

৩. জায়েদুল হাসান পিন্টু – ডিবিসি নিউজের হেড অব নিউজ

৪. সুভাষ সিংহ রায় – এবিনিউজ২৪ ডটকমের প্রধান সম্পাদক

৫. হায়দার আলী – কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক

৬. জ ই মামুন – এটিএন বাংলা

৭. সৈয়দ বোরহান কবীর – বাংলা ইনসাইডারের সম্পাদক

৮. শাবান মাহমুদ – নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার

৯. মির্জা মেহেদী তমাল – বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর

১০. জুলকারনাইন রনো – বাংলাদেশ প্রতিদিনের চিফ রিপোর্টার

১১. আলমগীর হোসেন – সমকালের সম্পাদক

১২. মধুসূদন মণ্ডল – বাসস

১৩. মাসুদ আইয়ুব কার্জন – ডিবিসি

১৪. মাঈনুল আলম – আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক

১৫. ফরাজী আজমল হোসেন – সাংবাদিক

১৬. অশোক চৌধুরী – বৈশাখী টিভি

১৭. রাহুল রাহা – নিউজ টোয়েন্টিফোরের এক্সিকিউটিভ এডিটর

১৮. রেজাউল করিম লোটাস – ডেইলি সানের সম্পাদক

১৯. আশিকুর রহমান শ্রাবণ – নিউজ টোয়েন্টিফোরের ডেপুটি চিফ নিউজ এডিটর

২০. আবদুল্লাহ আল মামুন – যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি (সাবেক)

২১. রফিকুল ইসলাম রতন – স্বদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক

২২. শেখ জামাল হোসেন – দৈনিক মুখপাত্রের সম্পাদক

২৩. আদিত্য আরাফাত – ডিবিসি নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি

২৪. তাওহিদুল ইসলাম সৌরভ – এটিএন নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি

২৫. শেখ মামুনুর রশীদ – যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি

২৬. শ্যামল দত্ত – সাংবাদিক

২৭. আবুল খায়ের – দৈনিক ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক

২৮. সন্তোষ শর্মা – দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রশাসক

সাংবাদিকতা একটি মহৎ পেশা, যেখানে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়া উচিত। কিন্তু সুবিধাবাদী সাংবাদিকরা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় দলীয় দালালি করেছেন, যা আজ তাদের জন্যই বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সময়ের পরিক্রমায় জনগণ বুঝতে পেরেছে—এরা প্রকৃত সাংবাদিক ছিলেন না, বরং দলীয় প্রচারক ছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে এই সুবিধাভোগীদের মুখোশ উন্মোচন করা এবং প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকতাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন সময়ের দাবি।

তোষামোদী সাংবাদিকতা ও ইতিহাসের কঠিন বিচার

সাংবাদিকতা এক মহান পেশা, যেখানে সত্যের সন্ধানই প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, এখনো কিছু সাংবাদিক আছেন, যাঁরা সত্যের সন্ধান না করে শুধুমাত্র তৈলমর্দনে ব্যস্ত। তাঁরা সত্যের চেয়ে সুবিধাবাদের পথ বেছে নেন, রাজা-বাদশার তোষামোদি করাকে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বানিয়ে ফেলেন। কিন্তু ইতিহাস কখনো এসব লোকদের ক্ষমা করেনি, আগামীতেও করবে না।

একজন সাংবাদিকের কলম হওয়া উচিত সমাজের দর্পণ, শাসকের আয়না, সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর। কিন্তু যখন এই কলম বিক্রি হয়ে যায়, তখন তা আর সাংবাদিকের হাতের অস্ত্র থাকে না, বরং পরিণত হয় প্রভুদের পা মোছার রুমালে। এই রকম সাংবাদিকতা কেবল নিজেদের মান-সম্মান নষ্ট করে না, বরং পুরো পেশাটির মর্যাদাকে কলঙ্কিত করে। তাই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন: ✅ সাংবাদিকতার মূলনীতি কখনো বিসর্জন দেওয়া যাবে না। ✅ সত্যের প্রতি অবিচল থাকতে হবে, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনুসরণ করতে পারে।

✅ শুধু ক্ষমতার কাছে নয়, সাধারণ মানুষের কাছে দায়িত্বশীল থাকতে হবে।

✅ যারা সত্য আড়াল করে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

✅ সংবাদপত্র বা গণমাধ্যম কখনো কারো ব্যক্তিগত মুখপাত্র হতে পারে না। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যারা এখনো শাসকের গুণগান গাইতে ব্যস্ত, যারা সত্যকে আড়াল করে নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবে, তারা একসময় বুঝবে—সময় কাউকে ক্ষমা করে না, ইতিহাস কাউকে ছাড় দেয় না।

সাংবাদিকতার সত্যিকারের শক্তি হলো নির্ভীকতা, সততা, এবং নিরপেক্ষতা। সেই শক্তি যদি কেউ বিসর্জন দেয়, তাহলে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে, যেমন হয়েছে অতীতের তোষামোদকারী সংবাদকর্মীরা।

তাই এখনই সময় আত্মজিজ্ঞাসার—আমরা কি সত্যিকারের সাংবাদিকতার পথে আছি, নাকি সুবিধাবাদের ফাঁদে পা দিচ্ছি? যদি দ্বিতীয় পথে থাকি, তাহলে মনে রাখা দরকার—সময়ের নিষ্ঠুর বিচার এড়ানোর কোনো উপায় নেই।

-যুগ্ম সম্পাদক- দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily banner,

গবেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক।

চলবে–

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট