1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

চট্টগ্রামের সাংবাদিকতা: সত্যের পথে ঐক্য, সাহস ও নৈতিকতার প্রয়োজনীয়তা

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

সাংবাদিকতা পবিত্র দায়িত্বের নাম। এটি কেবল খবর সংগ্রহ বা প্রকাশ নয়, বরং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও সত্য প্রকাশের শপথ। কিন্তু চট্টগ্রামের সাংবাদিকতা আজ বিভক্ত, প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এক সাংবাদিকের কলম অন্য সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চলতে দেখা যায়, যেখানে মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন। দালালি আর চামচাগিরির সংস্কৃতি দুঃখজনকভাবে, সাংবাদিকতা আজ অনেকাংশে সরকারের দালালি কিংবা প্রভাবশালীদের তোষামোদের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। একশ্রেণির সাংবাদিক ক্ষমতার কাছাকাছি গিয়ে নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করছে। সরকারের অনিয়ম বা দুর্নীতির খবর আড়াল করে, উল্টো সেসব অন্যায়ের সাফাই গাইতে দেখা যায়। অথচ সত্যিকার সাংবাদিকতা হলো জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা, সরকারের ভুলত্রুটির সমালোচনা করা।
দালালি কেন বাড়ছে? কারণ স্পষ্ট—প্রভাবশালীদের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ, পদোন্নতির লোভ, কিংবা সরকারি সুবিধা লাভের ইচ্ছা। এই চামচাগিরির ফলে প্রকৃত সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা কমছে। মানুষ যখন সাংবাদিকদের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ করে, তখন সমগ্র পেশার উপর আস্থার সংকট তৈরি হয়। এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আরেক সাংবাদিক চট্টগ্রামের সংবাদ মাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি যদি পরিণত হয় ব্যক্তিগত আক্রমণ, অপবাদ আর চরিত্র হননের লড়াইয়ে—তবে এটি পেশার জন্য আত্মঘাতী। প্রতিযোগিতা থাকা উচিত পেশাগত দক্ষতা ও তথ্য উপস্থাপনায়, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ব্যক্তিগত স্বার্থে একজন সাংবাদিক অন্যজনের বিরুদ্ধে কলম ধরছেন। এ ধরনের মানসিকতা সাংবাদিকতার গৌরবকে ক্ষুণ্ন করে।
ঐক্যহীনতার ফলাফল
একতাই শক্তি, এই প্রবাদ আমরা জানি। কিন্তু সাংবাদিকরা যদি বিভক্ত থাকেন, তাহলে কোনো আন্দোলন বা প্রতিবাদ কখনো সফল হয় না। যখন কোনো সাংবাদিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরেন, তখন তিনি একা হয়ে যান। তার পক্ষে দাঁড়ানোর কেউ থাকে না। এই ঐক্যহীনতার কারণেই অনেক সময় সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হন, নিপীড়নের শিকার হন, এবং ন্যায়বিচার পান না।
কীভাবে এই সংস্কৃতি বদলাবে?
নিজেদের মধ্যে সংহতি গড়ে তোলা: সাংবাদিকদের মধ্যে পেশাগত সংহতি জরুরি। একে অপরের পেছনে লেগে থাকা বন্ধ করতে হবে। সত্যের পথে অবিচল থাকা: দালালি বা চামচাগিরি ছেড়ে সত্যিকারের সাংবাদিকতায় মনোযোগ দিতে হবে। জনগণের স্বার্থে কাজ করাই সাংবাদিকদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
প্রশিক্ষণ ও মানসিকতার পরিবর্তন: নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে তারা আদর্শ ও নৈতিক সাংবাদিকতা করতে পারে। অসৎ সাংবাদিকদের পরিহার করা: যারা সাংবাদিকতার নামে দালালি করেন, তাদেরকে পেশা থেকে বিচ্ছিন্ন করা জরুরি। নৈতিকতাহীন সাংবাদিকতা যেন পেশার শৃঙ্খলা নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সাংবাদিকতা পেশাটি সম্মানজনক, কিন্তু এটি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে। কলম হবে ন্যায় ও সত্যের প্রতীক, অন্য সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নয়। ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিকতা পারে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং জনগণের পক্ষে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে। সাহসী সাংবাদিকতা: ন্যায়ের কলমে আপসহীন সত্যের উচ্চারণ
সাংবাদিকতা কেবল পেশা নয়, এটি সমাজের দর্পণ, জাতির বিবেক। যখন শাসকের অন্যায়, দুর্নীতির ঘন অন্ধকারে সত্য হারিয়ে যায়, তখন সাহসী সাংবাদিকের কলম হয়ে ওঠে দীপ্ত মশাল। সাহসী সাংবাদিকতা মানে এমন এক নির্ভীক কণ্ঠস্বর, যা কারও রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না, কোনো লোভ-প্রলোভনে বশীভূত হয় না। সত্যের সন্ধান এবং প্রতিবাদ সাহসী সাংবাদিকতা মানেই সত্যের নির্ভেজাল অনুসন্ধান। সংবাদকর্মীকে প্রতিনিয়ত নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়—প্রভাবশালী মহলের হুমকি, হয়রানি, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। কিন্তু এক সাহসী সাংবাদিক জানে, তার দায় শুধুমাত্র জনগণের কাছে। সমাজে অন্যায়-অবিচার কিংবা দুর্নীতি দেখলে তিনি কলম থামান না। সত্য উদ্ঘাটনের নেশায় তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রতিবাদের ভাষা এবং নীতিবোধ সাংবাদিকতার মূল শক্তি হলো তথ্য। এই তথ্যই কখনো হয়ে ওঠে শাসকের জন্য বিপজ্জনক অস্ত্র। সাহসী সাংবাদিকরা অবিচল নীতিবোধে বিশ্বাসী। তারা ক্ষমতার কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ করেন না, বরং ক্ষমতাকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসার লড়াই করেন। প্রতিদিনের খবরের আড়ালে যে গভীর অন্যায় ঘটে, সাহসী সাংবাদিকতা সেই অপরাধের মুখোশ উন্মোচন করে।
গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য সাহসী সাংবাদিকতা অপরিহার্য। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক, অসৎ ব্যবসায়ী কিংবা অবৈধ লোভে মত্ত প্রতিষ্ঠান—সবাই চায় সত্য আড়াল করতে। কিন্তু স্বাধীন সাংবাদিকতা ছাড়া গণতন্ত্রের ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়ে। সাহসী সাংবাদিকরাই জনগণের পক্ষে থেকে রাষ্ট্রের অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।৷ কঠিন বাস্তবতা ও আত্মত্যাগ বিশ্বজুড়ে অনেক সাহসী সাংবাদিক নিখোঁজ হয়েছেন, অনেকে জীবন হারিয়েছেন, কিন্তু তবুও তারা সত্য প্রকাশে পিছপা হননি। বাংলাদেশে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড কিংবা গুম হওয়া সাংবাদিকদের ঘটনা আমাদের সামনে সাহসী সাংবাদিকতার নিষ্ঠুর বাস্তবতা তুলে ধরে। প্রেরণার উৎস এবং নতুন দিগন্ত সাহসী সাংবাদিকতার ইতিহাসে ওডসেসেপ মুর, মারি কলভিন, জামাল খাশোগির নাম চিরস্মরণীয়। তাদের আত্মত্যাগ সাংবাদিকদের সাহসী হতে উদ্বুদ্ধ করে। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা তাদের পথ ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়ে যাচ্ছেন, যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা লড়েছিলেন সত্যের পক্ষে।
সাহসী সাংবাদিকতা সমাজের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। এটি নির্যাতিতের কণ্ঠস্বর এবং নিপীড়িতের পক্ষে দাঁড়ানোর শপথ। যারা সত্য লিখতে জানেন, তারাই ইতিহাস গড়েন। সাহসী সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে হয়—তাদের কলমের কালি কখনোই বৃথা যায় নান
সাংবাদিকতা ও রাজনীতি: আপোষের সীমানা
সাংবাদিকতা এবং রাজনীতি—দুটি ভিন্ন জগত। একজন সাংবাদিকের রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে, কিন্তু যখন কলম ধরেন, তখন সেই মতাদর্শের ছায়া লেখা ছুঁয়ে যাওয়া উচিত নয়। সত্য প্রকাশের দায়িত্বই সাংবাদিকতার মূলধারা।
তিন দশকের লেখালেখির অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি, লেখার সময় রাজনৈতিক আপোষ কখনো কখনো আবশ্যিক হয়ে পড়ে, কিন্তু সেই আপোষের পরিধি হতে হবে ন্যায়সঙ্গত ও বিবেকনির্ভর। আপোষ করা মানেই সত্যের পথ থেকে বিচ্যুতি নয়। বরং কখনো কখনো পরিস্থিতির দাবি মেনে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়।
রাজনীতি লেখার টেবিলে স্থান পাবে কি? লেখার টেবিলে রাজনীতি প্রবেশ করুক বা না করুক, সেটি নির্ভর করে বিষয়বস্তুর উপর। কিন্তু যখন জনস্বার্থ, দুর্নীতি বা রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা নিয়ে লিখতে হয়, তখন অবশ্যই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উঠে আসতে পারে। তবে সেই লেখায় দলীয় পক্ষপাত বা ব্যক্তিগত রাজনৈতিক বিশ্বাস প্রভাব ফেললে পাঠকের মনে সন্দেহ জাগে। সাংবাদিকতার শপথ হলো নিরপেক্ষ থাকা। সত্য এবং তথ্যের মাধ্যমে জনসাধারণকে আলোকিত করা। লেখার মধ্যে ব্যক্তিগত মতাদর্শ ঢুকে গেলে সেই সত্যটি আংশিক হয়ে যায়, আর তাতে সাংবাদিকতার মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। কখন আপোষ গ্রহণযোগ্য?
কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি আসে, যেখানে সরাসরি সত্য তুলে ধরা হয়তো বিপদজনক বা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তখন সাময়িক আপোষ করতে হয়, কিন্তু তাতে মূল সত্য চাপা পড়ে যায় না। সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা রেখে, এমনভাবে লেখা উচিত যাতে ভবিষ্যতে সত্য প্রকাশের পথ খোলা থাকে। আপোষের সীমারেখা হলো—সত্যকে বিকৃত না করা, বরং কৌশলে উপস্থাপন করা।
কেন রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা জরুরি? বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকে: পাঠক চায় নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ। সাংবাদিক যখন নিরপেক্ষ থাকেন, তখন তার লেখা বিশ্বাসযোগ্য হয়।
লেখার প্রভাব বৃদ্ধি পায়: পক্ষপাতদুষ্ট লেখা সাময়িকভাবে কিছু মানুষের মন জয় করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তার প্রভাব কমে যায়। সাংবাদিকতার নৈতিকতা অটুট থাকে: সাংবাদিকতা নৈতিকতার পেশা। এটি কেবল তথ্য প্রকাশ নয়, বরং জনগণের পক্ষে সত্য তুলে ধরা। সাংবাদিকতার আসল শক্তি সত্য প্রকাশে, আর সত্যের সঙ্গে আপোষ করলে সাংবাদিকতা তার মূল্য হারায়। রাজনীতি ব্যক্তিগত থাকতে পারে, কিন্তু সাংবাদিকতার টেবিলে সেটি সীমিত রাখাই শ্রেয়। আপোষ তখনই গ্রহণযোগ্য যখন তা ন্যায়ের সীমারেখা অতিক্রম না করে। কলম হবে স্বাধীন ও সাহসী—যেখানে সত্যই হবে একমাত্র পথপ্রদর্শক।
লেখকঃ যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান-দৈনিক ভোরের আওয়াজ ও The Daily banner, এবং গবেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট