1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

নাঈমুল ইসলাম খান, মুন্নী শাহা ও চৌধুরী ফরিদ: সাংবাদিকতার মুখোশে দুর্নীতির সম্রাট

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৩১ বার পড়া হয়েছে

নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের ১৬৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ: গোয়েন্দা প্রতিবেদন উন্মোচনে চাঞ্চল্য গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও আত্মগোপনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের নামে থাকা ১৬৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। নাঈমুল ইসলাম খান, যিনি ‘আমাদের নতুন সময়’সহ একাধিক সংবাদপত্রের সম্পাদক হিসেবে পরিচিত, তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৯১টি। প্রতিবেদন অনুসারে, এসব অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল ২৪৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে তিনি ইতোমধ্যেই ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার অ্যাকাউন্টে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে মোট জমা হয়েছে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। মন্টি ইতোমধ্যে ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। তাদের তিন কন্যার অ্যাকাউন্টেও লক্ষণীয় পরিমাণ অর্থের সন্ধান মেলে। আদিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাইম খানের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৬১ লাখ টাকা।উল্লেখযোগ্য ভাবে, তারা অধিকাংশ অর্থই উত্তোলন করে নিয়েছেন। গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, নাঈমুল ইসলামের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবেও জমা হয়েছিল ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তবে এর প্রায় সম্পূর্ণ অর্থ ইতোমধ্যে তুলে নেওয়া হয়েছে, বর্তমানে সেখানে মাত্র ২১ লাখ টাকা অবশিষ্ট।
এছাড়া, পরিবারটি মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন, যার সম্মিলিত লিমিট ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। বর্তমানে এসব কার্ডে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা বকেয়া রয়েছে। নাঈমুল ইসলাম খান নিজেই ছয়টি কার্ডের মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকার বেশি সীমা ব্যবহার করেছেন, আর তার স্ত্রী মন্টির চারটি কার্ডের লিমিট ৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা। তাদের দুই মেয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা লিমিটের দুটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে। তবে, অধিকাংশ অর্থ এর আগেই তুলে ফেলা হয়। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের পর থেকে নাঈমুল ইসলাম খান আত্মগোপনে চলে গেছেন। তার মালিকানাধীন সংবাদপত্রগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রতিবেদন শুধু অর্থনৈতিক অনিয়ম নয়, বরং সাংবাদিকতার আড়ালে চলমান ক্ষমতার অপব্যবহারকেও উন্মোচন করছে। নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এই প্রতিবেদন একদিকে দুর্নীতির গভীর শেকড় চিহ্নিত করছে, অন্যদিকে সাংবাদিকতার নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
সাংবাদিকতা যাঁরা করেন, তাঁরা জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত। তাঁদের দায়িত্ব সত্য প্রকাশ করা, ন্যায়বিচারের পক্ষে কলম ধরা। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার একটি বড় অংশ যেন সেই দায়িত্ব ভুলে গেছে। বরং সাংবাদিকতার নামে চলছে এক ধরনের নির্লজ্জ দালালি ও দুর্নীতির উৎসব। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন নাঈমুল ইসলাম খান, মুন্নী শাহা ও চট্টগ্রামের চৌধুরী ফরিদের মতো বিতর্কিত সাংবাদিকেরা। জাতির বিবেক না দুর্নীতির কুশীলব?


নাঈমুল ইসলাম খান ও মুন্নী শাহার নাম একসময় সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হতো। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ হয়ে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। জনসাধারণের জন্য কথা বলার বদলে তাঁরা ক্ষমতার অলিন্দে বিচরণ করে নানা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সরকারের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্প ও উন্নয়ন কাজ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

চৌধুরী ফরিদের নাম চট্টগ্রামে একসময় উঠতে বসতে শোনা যেত। এখন তিনি চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাঁর আসল পরিচয় ভিন্ন। সরকারি আমলা, মেয়র ও মন্ত্রীদের সঙ্গে আঁতাত করে চট্টগ্রামে কোটি কোটি টাকার লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই লুটপাটের টাকা বিদেশে পাচার করে তিনি এখন আত্মগোপনে আছেন। সাংবাদিকতার নামে প্রভাব বিস্তার
মুন্নী শাহা ও নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকতার নামে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে সুবিধা আদায় করেছেন। চৌধুরী ফরিদ চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ ও আমলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে সাধারণ জনগণের সম্পদ লুট করেছেন। তাঁরা নিজেরা বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন, অথচ সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন।
চট্টগ্রামে চৌধুরী ফরিদের অপকর্ম চট্টগ্রামে চৌধুরী ফরিদের লুটপাটের ঘটনা নতুন কিছু নয়। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রকল্প থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে তাঁর প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়ে থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ছিল স্পষ্ট। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা তাঁর একটি নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। নাঈমুল ইসলাম ও মুন্নী শাহার শত কোটি টাকার সম্পদ নাঈমুল ইসলাম ও মুন্নী শাহার সম্পদের পরিমাণ এখন শত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সাংবাদিক ও টেলিভিশন উপস্থাপক মুন্নী সাহা এবং তার স্বামী কবির হোসেন তাপসের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ব্যাংক হিসাবে ১৩৪ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান শুরু করেছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে ১৩৪ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১২০ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে স্থগিত করা হিসাবে ১৪ কোটি টাকা রয়েছে। এই লেনদেন ১৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে, যার মধ্যে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখায় ২০১৭ সালের ২ মে মুন্নী সাহার স্বামী কবির হোসেনের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের নামে একটি হিসাব খোলা হয়, যেখানে মুন্নী সাহা নমিনি হিসেবে ছিলেন। এছাড়া, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখায় প্রাইম ট্রেডার্সের নামে আরেকটি হিসাব খোলা হয়। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক না থাকলেও তাদের মধ্যে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে, যা সন্দেহজনক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এমএস প্রমোশন এবং প্রাইম ট্রেডার্সের নামে ব্যাংক থেকে ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধ না করে বারবার সুদ মওকুফ ও নবায়ন করা হয়েছে। ২০১৭ সালেই সুদ মওকুফ করা হয় ২৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। এই লেনদেনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং বিএফআইইউ এই অর্থ পাচার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে। এছাড়া, গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড এলাকায় শান্তিনিকেতনে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা মুন্নী সাহার নামে রয়েছে।
উল্লেখ্য, মুন্নী সাহা ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে একুশে টেলিভিশন ও এটিএন বাংলায় কাজ করেছেন। তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির টেলিভিশন উপস্থাপনায় ভূমিকা রেখেছেন। এই অভিযোগগুলোর সত্যতা নিরূপণে দুদক অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রভাব বিস্তার করে, সরকারি প্রজেক্ট থেকে ভাগ বসিয়ে এবং শেখ হাসিনার সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপিদের সঙ্গে সম্পর্কের মাধ্যমে তাঁরা রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা , প্রশ্ন থেকে যায়, সাংবাদিকতা কি এখন আর সত্যের পক্ষে কথা বলার জায়গা নেই? নাকি এটি এখন শুধুই ক্ষমতার হাতের খেলনা? মুন্নী শাহা, নাঈমুল ইসলাম খান ও চৌধুরী ফরিদের মতো সাংবাদিকরা এই প্রশ্নের সামনে এক বড় উদাহরণ।সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে কলঙ্কিত করে যাঁরা দুর্নীতিতে জড়িত, তাঁদের মুখোশ উন্মোচন করা প্রয়োজন। জাতির সামনে এই সত্য তুলে ধরা প্রয়োজন যে, সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কিছু মানুষ কিভাবে আমাদের সমাজকে কলুষিত করছে। সাংবাদিকতা কোনো ব্যবসা নয়, এটি দায়িত্ব। এই দায়িত্বের জায়গায় মুন্নী শাহা, নাঈমুল ইসলাম ও চৌধুরী ফরিদের মতো লোকেরা থাকলে জাতির জন্য এটি এক অশনি সংকেত। চৌধুরী ফরিদের অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের হিসাব তদন্ত করে প্রকাশ করার জন্য দুদকের প্রতি অনেকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট