1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
শিবগঞ্জে কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে প্রগতি সংস্থার স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ ক্ষেতলালে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন! লাউগাছের চারা খাওয়া নিয়ে গলাচিপায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আহত ১ গৌরবে মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবজোন চ্যাম্পিয়ন ধামরাইয়ে অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমান হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে ( পিবিআই ) কালাইয়া বাজারের রাস্তাঘাটে করুণ দশা, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ঠাকুরগাঁওয়ে নদীতে গোসল করতে নেমে   দ্বিতীয় শ্রেণীর  শিশুর মৃত্যু বান্দরবানে বাজার চৌধুরীর অপসারণ ও বিচারের দাবীতে মানব বন্ধন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা! শিবচরে মাদক রোধে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিল উপজেলা বিএনপি

চট্টগ্রাম বন্দরে সায়েফ পাউয়ারটেক-এর দুর্নীতি

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪

রুহুল আমিন তরফদারের অর্থনৈতিক শোষণ ও বন্দর জিম্মি করে অর্থ আত্মসাৎ!

চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি, তবে এই বন্দরকেন্দ্রিক বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে প্রকাশিত হয়েছে যে, সায়েফ পাউয়ারটেক-এর মাধ্যমে বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম পরিচালনা করে রুহুল আমিন তরফদার হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যদিও বালু উত্তোলনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি তার সম্পৃক্ততা নেই, তার প্রতিষ্ঠান সায়েফ পাউয়ারটেক বন্দরের নিয়মকানুনকে উপেক্ষা করে এবং প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় বন্দরকে কার্যত জিম্মি করে রেখেছে।

সায়েফ পাউয়ারটেক-এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ!
রুহুল আমিন তরফদার তার প্রতিষ্ঠান সায়েফ পাউয়ারটেক-এর নামে বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মবহির্ভূতভাবে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর মাধ্যমে বন্দরের রাজস্ব থেকে বড় অংশ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে এবং বন্দরের স্বাভাবিক কার্যপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বালু উত্তোলন সিন্ডিকেট থেকে পৃথক চক্র যদিও বন্দরের বালু উত্তোলন নিয়ে অবৈধ সিন্ডিকেটের কর্মকাণ্ড চলমান আছে এবং তারা প্রতিনিয়ত সরকারি সম্পদ লুণ্ঠন করছে, এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে রুহুল আমিন তরফদারের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। বালু উত্তোলনের অবৈধ কার্যক্রম একাধিক মাফিয়া চক্র দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, যারা সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে বালু উত্তোলন করে। তবে রুহুল আমিন তরফদার বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেটের চেয়ে আলাদা ভাবে সায়েফ পাউয়ারটেক-এর মাধ্যমে বন্দরের ওপর নিজের অর্থনৈতিক শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে।
রুহুল আমিন তরফদারের প্রভাব রুহুল আমিন তরফদার বন্দর কর্তৃপক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে সায়েফ পাউয়ারটেক-এর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তার এই প্রভাব এতটাই প্রবল যে, নিয়মবহির্ভূত কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর মাধ্যমে তিনি প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছেন। সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী এই কার্যক্রমের ফলে সরকারের রাজস্ব আয় কমছে এবং বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।
তথ্য অনুসন্ধানের গভীরতা
চট্টগ্রাম বন্দরের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, সায়েফ পাউয়ারটেক-এর মাধ্যমে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এ রুহুল আমিন তরফদারের শোষণমূলক কর্মকাণ্ডের পরিমাণ হাজার হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এই অর্থের বেশিরভাগই বন্দরের নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে সংগ্রহ করা হচ্ছে। বন্দরের প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে আলাদা সিন্ডিকেট কাজ করছে, যা রুহুল আমিন তরফদারের চক্রের বাইরের একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
রুহুল আমিন তরফদারের নেতৃত্বে সায়েফ পাউয়ারটেক যে অর্থনৈতিক শোষণ করছে, তা শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব ক্ষতির কারণ নয়, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবকাঠামোতেও এক গভীর সংকটের সৃষ্টি করছে। বন্দরের বালু উত্তোলন সিন্ডিকেট এবং রুহুল আমিন তরফদারের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এ দুর্নীতি পৃথক দুটি চক্রের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও, উভয়ের লক্ষ্য একই—দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা। প্রশাসনের উচিত এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।কর্ণফুলী নদীতে
অবৈধ বালুর মহাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং সুপারিশ!
চট্টগ্রাম কর্ণফুলীনদীতে বালু উত্তোলনের অবৈধ কর্মকাণ্ড এক ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে। নদী এবং পরিবেশের উপর চাপ সৃষ্টি করে এরা দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে চলেছে। এই অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে যেমন নদীগুলোর স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতি বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। বালু উত্তোলনের মহাল গুলোতে অবৈধভাবে কাজ করা চক্রগুলো সমাজের বিভিন্ন শক্তিশালী মহলের পৃষ্ঠপোষকতায় নিরাপদ বোধ করছে, যা দমন করা অত্যন্ত জরুরি। এই পরিস্থিতিতে অবৈধ বালু মহাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যাবশ্যক।
অবৈধ বালুর মহাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্হা

১. আইন প্রয়োগের শক্তিশালীকরণ এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা: অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আইন প্রয়োগ করা দরকার। নদী ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে কঠোরভাবে শাস্তির বিধান রেখে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা উচিত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ দল গঠন করে নজরদারি বাড়াতে হবে।

২. ড্রোন এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি: অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি যেমন ড্রোন এবং স্যাটেলাইট ইমেজিং ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি নদীর মহালের অবৈধ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা হবে। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজতর হবে।

৩. বালু উত্তোলনের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি: যেখানে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশগত ক্ষতি হচ্ছে, সেসব এলাকায় বালু উত্তোলনের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। বালু উত্তোলনের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা এবং নির্ধারিত নিয়ম মানা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং কমিটি গঠন করা উচিত।

৪. অবৈধ মহাল দখলকারীদের তালিকা তৈরি এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা: সরকারকে অবৈধভাবে মহাল দখলকারী সিন্ডিকেটের তালিকা তৈরি করতে হবে। এই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের আর্থিক এবং আইনগত দিক থেকে চাপে রাখা উচিত। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

৫. বালু উত্তোলনের লাইসেন্স প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করা: বালু উত্তোলনের জন্য বৈধ লাইসেন্স প্রদান করতে হবে এবং তা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হওয়া উচিত। লাইসেন্সধারীদের নিয়মিত মনিটরিংয়ের আওতায় রাখতে হবে এবং তারা অনুমোদিত সীমার বাইরে গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
অবৈধ বালু উত্তোলনের চিহ্নিত চক্র এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ
১. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: জনগণকে সচেতন করতে গণমাধ্যম ও স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। পরিবেশগত ক্ষতি, নদীর তলদেশ নষ্ট হওয়া, এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো দরকার।
২. স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি: স্থানীয় প্রশাসনকে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। এলাকাভিত্তিক তদারকি দল গঠন করে নিয়মিত মনিটরিং করার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কোনো ধরনের অবৈধ বালু উত্তোলন সনাক্ত হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

৩. পরিবেশগত ক্ষতির জরিমানা: যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে যুক্ত, তাদের শুধু কারাদণ্ড নয়, বরং পরিবেশগত ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা উচিত। পরিবেশ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একযোগে কাজ করে এই ক্ষতিপূরণ আদায় করা উচিত।
অবৈধ বালু উত্তোলন দমন করা না গেলে দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রুহুল আমিন তরফদারসহ অবৈধ বালু উত্তোলনের মহাল দখল কারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দেশীয় সম্পদ রক্ষায় এবং পরিবেশের টেকসই ব্যবস্থাপনায় সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং জনগণের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট