
গত শুক্রবার রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পূর্ব গরঙ্গল গ্রামে নিজের বসত ঘর থেকে ধরে নিয়ে মোঃ বেলাল প্যাদা (২৬) নামের এক যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। গুরুতর আহত ওই যুবদল কর্মীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় সেখানে আরো বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। আহত যুবদল কর্মী বেলাল প্যাদার বড় ভাই যুবদল কর্মী মোঃ কামরুল হাসান প্যাদা জানান, তার ছোট ভাই যুবদল কর্মী ও ইট বালুর ব্যবসায়ী মোঃ বেলাল প্যাদা (২৬) শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে নিজেদের টিনের বসতঘরের সামনের বারান্দায় বসে দিনের বিকি কিনির টাকা পয়সা গুনে হিসাব মেলাচ্ছিলেন। এ সময় তাদের প্রতিপক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম খান ও তার সহোদর বাদশা খান ও তাদের বাবা লতিফ খানের নেতৃত্বে ৭/৮ জনের আওয়ামী সমর্থকদের একটি গ্রুপ তাদের বাড়িতে চড়াও হয়ে বেলাল প্যাদাকে তাদের নিজ বসতঘর থেকে ধরে নিয়ে এলো পাতারি পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বাড়ির পাশের পাকা সড়কের উপর ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর দেখে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তখন তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, যুবদল
কর্মী বেলাল প্যাদার অবস্থা আশঙ্কা জনক। সেখানে সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আহত যুবদল কর্মীর বড় বোন সাবিনা আক্তার নুপুর বলেন, হামলাকারী আওয়ামী লীগ সমর্থক রফিকুল ইসলাম খান, বাদশা খান, লতিফ খান ও তাদের সহযোগীদের
অত্যাচারে বিগত ১৬ বছর আমার ভাইয়েরা কেউ এলাকায় থাকতে পারেনি। বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে থেকে তাদেরকে বিএনপির রাজনীতি করতে হয়েছে। দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের এত বড় পতনের পরও এরা এখনো এলাকায় দাপট দেখাচ্ছে।
বেলালকে বাড়ি থেকে ডেকে আনার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত লতিফখান। তিনি বলেন, বেলাল প্যাদা এর আগে কয়েকবার আমার ছেলেদের ও আমাকে মারধর করেছে। গতরাতে বেলাল প্যাদা তার চাচার বাড়িতে এসে একটি নারী ঘটিত অপরাধ জড়িত হয়। ফলে তার আপন চাচাতো ভাই ইউসুফ প্যাদার সাথে মিলে আমার ২ ছেলে তাকে মারধর করেছে বলে শুনেছি। তবে আমি সেখানে ছিলাম না। আমি অসুস্থ, তাই বিছানায় শুয়ে ছিলাম। আওয়ামী লীগ আমলে, আপনারা ওদেরকে মেরেছেন বাড়িঘর ছাড়া করেছিলেন কি ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওদের অভিযোগ মিথ্যা। আমরা কোনদিন আওয়ামী লীগ করিনি।
অপরদিকে, হামলার শিকার বেলালের বড় ভাই মোঃ কামরুল হাসান প্যাদা বাদী হয়ে মোঃরফিকুল ইসলাম খান, বাদশা খান ও লতিফ খানসহ মোট ৮জনকে আসামি করে শনিবার দুপুরে গৌরনদী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ তারিক হাসান রাসেল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আসল ঘটনা উদ্ধারে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।