
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে হলুদ সরিষা ফুলের ব্যাপক সমাহার। রাত শেষে সকাল হলে দেখা যায়, নীল আকাশের নিচে ফসলের মাঠ জুড়ে হলুদ সরিষা ফুল। এ যেন প্রকৃতিতে বসন্ত লেগেছে সকালের সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত হবার সাথে সাথেই সরিষা ফুলের সমারোহে হেসে ওঠে চারদিক।
মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছিরা। পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খেতে থাকে। ফুলগুলোর তাদের কলি ভেদ করে সুভাস ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। এ যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলা ভূমি।
দিন শেষে বিকেলে দেখা যায়, ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিনোদন প্রেমিরা। সরিষা মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং সৌন্দর্য উপভোগ করেন। কেউবা আবার মোবাইল ফোনে সেলফি তুলেন। মনের আনন্দে গান গেয়ে হলুদ সরিষা ফুলের মত মনকে সাজিয়ে বাড়ি যাচ্ছে।
সরিষা ক্ষেতে সরজমিনে গিয়ে উপজেলার সরিষাকোল গ্রামের কৃষক মো. রহম আলী সাথে কথা বলে জানা যায়, সরিষা চাষাবাদ করতে প্রতি বিগা জমিতে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা মত খরচ হয়েছে। লাভ হবে প্রতি বিগাতে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকার মত। সরিষা চাষে যে সার আমরা ব্যবহার করি, পরবর্তীকালে ইরি ধান রোপনের সময় সার বেশি দেওয়া লাগে না। এতে আমাদের খরচ কিছুটা কমে যায়। তিনি বলেন, এবার মেঘ-বৃষ্টি না হলে আমরা লাভবান হবো ইনশাল্লাহ।
কৃষক রহম আলী আরো জানান, আমি ৭ বিগা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৪৫ হাজার টাকার মত। তবে কৃষি অফিস থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। নিজের টাকা দিয়ে সার বীজ কিনেছি।
নাববিলা গ্রামের কৃষক মো. সাকওয়াত হোসেন বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। ফুল আসা শেষের দিকে প্রায়। কার্তিক মাসে বীজ বুনেছি, পৌষ-মাঘ মাসের দিকে সরিষা তুলবো।
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বছর সরিষার চাষাবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রা ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে।মৌসুমের শুরুতে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গত বছরের চেয়ে এবার সরিষা চাষ কিছুটা কম হয়েছে। তবে সরিষা চাষে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে সরিষার ফলন ভালো হবে বলে আশা হচ্ছে।মাঠ পর্যায়ে সরিষার পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে।##