বিজয়ের মাস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা বিষয়ক সামাজিক আন্দোলন ‘তরী বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের নদ-নদী’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের নদ-নদীর কৌশলগত ভূমিকার কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং দেশের যোগাযোগ ও পরিবেশ রক্ষায় নদীগুলোকে সচল রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
​শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী সৈয়দ এমরানুর রেজা। তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
​নদী রক্ষায় জোর তাগিদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী সৈয়দ এমরানুর রেজা বলেন, “প্রকৃতির দান এই নদ-নদীগুলো না থাকলে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম আরও দীর্ঘায়িত হতো। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে নদ-নদীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই দেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে নদ-নদী, খাল ও জলাশয় রক্ষা করা জরুরি।”
​সভাপতির বক্তব্যে শামীম আহমেদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে নদীগুলো যেভাবে সহযোগিতা করেছে, তেমনি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকেও সহযোগিতা করতে পারবে, যদি আমরা নদী, খাল ও জলাশয় রক্ষা করি। তিনি জানান, তরী বাংলাদেশ জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
​অর্থনীতি ও যোগাযোগে সুফল ​সভায় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও শিক্ষানুরাগীরা তাদের স্মৃতি ও অনুভূতি প্রকাশ করেন এবং নদী সুরক্ষার গুরুত্ব নিয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন। বক্তারা বলেন, সারা দেশে নদী-খাল ও নৌপথ সচল থাকলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন ঘটবে, জনভোগান্তি কমবে এবং পণ্য পরিবহনের ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
​সভার শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়। তরী বাংলাদেশ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নী স্বাগত বক্তব্য দেন এবং সভা সঞ্চালনা করেন সোহেল রানা ভূঁইয়া।
​আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন, এম ওয়াসেল সিদ্দিকী, আছরারুন নবী মোবারক, প্রফেসর হুমায়ুন কবির খান, ফসিউর রহমান হাসান, জয়নাল আবেদীন, পৌর ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং কমিটির সভাপতি এবিএম মমিনুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আল আমিন শাহীন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ মো. আকরাম।
​এছাড়াও তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পী ফাহিমা সুলতানা, জেলা শিল্পকলা একাডেমির আবৃত্তি প্রশিক্ষক নুসরাত জাহান বুশরা এবং সোনালী সকালের আইরিন মৃধা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কবিতা আবৃত্তি করেন। সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও তরী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।