
গাইবান্ধা সদর উপজেলার পলাশপাড়া গ্রামের মির্জা হাসানের কন্যা জারিন সাদাফ ফারিন (২২) টিকটকে আসক্ত হয়ে বিয়ের পর স্বামী হুমায়ুন রশিদ হিমেলের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন। পরে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে যৌতুকের মিথ্যা অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জারিন সাদাফ ফারিনের সঙ্গে গাইবান্ধা শহরের সুখনগর পাড়ার আইনজীবী সাইফুল ইসলামের পুত্র হুমায়ুন রশিদ হিমেলের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর হিমেল চাকরির সুবাদে স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজারে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। শুরুতে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও ধীরে ধীরে জারিনের টিকটক আসক্তি ও বেপরোয়া আচরণে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জারিন প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের টিকটক ভিডিও তৈরি ও আপলোডে ব্যস্ত থাকতেন। এতে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে কোনো কারণ ছাড়াই তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় বাবার বাসায় চলে আসেন এবং সেখান থেকে নিয়মিত অনলাইন কনটেন্ট তৈরিতে যুক্ত হন।
এর মধ্যে স্বামী হিমেল ও তার পরিবার একাধিকবার জারিনকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করলেও তিনি ও তার বাবা মির্জা হাসান তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ২৮ নভেম্বর জারিন ঢাকার তুরাগ থানায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ১১(গ)/৩০ ধারায় নথিভুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে হুমায়ুন রশিদ হিমেল বলেন, “ আমাদের সংসার শুরুটা খুব ভালো ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর জারিন পুরোপুরি টিকটকে ডুবে যায়। পড়ালেখার সময় থেকেই সে বেপরোয়া হয়ে পড়ে। আমি চাকরির কারণে কক্সবাজারে থাকলেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে নানা অজুহাতে এড়িয়ে যেত। আমার বাবা-মা তাকে বাড়িতে আনতে বারবার অনুরোধ করলেও সে পাত্তা দেয়নি। এখন সে আমাদের পরিবারকে অপমানিত করতে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মামলা করেছে। আমার শ্বশুর মির্জা হাসান আ’লীগ শাসন আমলে পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন, ইউপি চেয়ারম্যানও ছিলেন। সেই দাপট এখনও আছে।’’
জারিনের বাবা মির্জা হাসান এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি না হলেও সংক্ষেপে বলেন, “বিষয়টি এখন আদালতে, আইন যা বলবে তাই হবে।”
তুরাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তা শাশ্বত দত্ত চৌধুরী বলেন,“বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্ত পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।