চট্টগ্রামের উন্নয়ন আন্দোলনের অগ্রদূত, নীতিবান ও আপসহীন নাগরিক নেতাদের অন্যতম মঈনউদ্দীন মহসিনের স্মরণে আয়োজিত এক শোকসভা পরিণত হয় এক হৃদয়বিদারক নাগরিক শ্রদ্ধার বন্ধনে।
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের আয়োজনে চট্টগ্রাম একাডেমি মিলনায়তনে গতকাল অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তারা বলেন, “মঈনউদ্দীন মহসিন ছিলেন নাগরিক অধিকার রক্ষায় এক দীপ্তিমান আলোকবর্তিকা। চট্টগ্রাম যতদিন থাকবে, তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তার নির্ভীক নেতৃত্ব, মানবিকতা ও দৃঢ়তার জন্য।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান ও বর্ষীয়ান সংগঠক এম ওসমান গনি। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান ও নাগরিক আন্দোলনের অন্যতম কণ্ঠস্বর শাহরিয়ার খালেদ।প্রধান বক্তৃ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান সমন্বয়ক স ম জিয়াউর রহমান, যিনি বলেন, “মঈন ভাই শুধু আমাদের নেতা নন, তিনি ছিলেন প্রেরণার বাতিঘর। তাঁর মতো নিবেদিত কর্মী আমরা আর পাবো না।”
শোকসভায় অংশগ্রহণ করেন—
সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান ও কবি কামরুল ইসলাম নজরুল সংগীতশিল্পী ফরিদা করিম সাংগঠনিক সম্পাদক এম মনছুর আলম চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম, দুবাই শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার মরহুমের সন্তান নঈমউদ্দীন হাসান বিজয় বন্ধু ও সহযোদ্ধারা—মোহাম্মদ এমরান, মো. নুরুল হুদা চৌধুরী, তসলিম খা, মো. নুর, মো. মাসুদ রানা, শাহাবুদ্দিন খালেদ ফারুক, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।বক্তারা বলেন,”মঈনউদ্দীন মহসিন ছিলেন একজন সৎ, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন এবং জনমানুষের হৃদয়ের নেতা। চট্টগ্রামের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল নিঃস্বার্থ, নির্ভেজাল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি গণমানুষের কল্যাণে, উন্নয়ন পরিকল্পনায় ও অন্যায়ের প্রতিবাদে ছিলেন আপসহীন।
তিনি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি, বরং নাগরিকের পক্ষে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাবি তুলেছেন। তার লেখায়, বক্তৃতায়, ব্যবহারে সবসময় ছিল স্পষ্টবাদিতা।” মরহুমের সন্তান নঈমউদ্দীন হাসান বিজয় আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “আমার বাবা ছিলেন মানুষের নেতা, তিনি আমাদের শিখিয়েছেন সত্য বলার সাহস, মানুষের পাশে থাকার দায়।” সভায় উপস্থিত সবাই একমত হয়ে বলেন,চট্টগ্রামের নাগরিক অধিকার রক্ষায় মঈনউদ্দীন মহসিনের অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
তাঁর নামে একটি নাগরিক পুরস্কার প্রবর্তনের প্রস্তাব আসে সভায়।
চট্টগ্রাম উন্নয়নের স্বপ্ন যারা দেখেন, তাদের জন্য মঈনউদ্দীন মহসিন হবেন ভবিষ্যৎ পথচলার অনুপ্রেরণা। সভা শেষে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে তাঁর নামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ ও বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজনের ঘোষণাও দেওয়া হয়। মঈনউদ্দীন মহসিন নেই, কিন্তু তাঁর সংগ্রামমুখর কর্ম, তাঁর কণ্ঠের জ্বালাময়ী ভাষণ, তাঁর কলমের সাহস—সবকিছুই আজ চট্টগ্রামের ইতিহাসে হয়ে উঠেছে এক অমূল্য সম্পদ। তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদের আন্দোলনে, হৃদয়ে ও ভবিষ্যৎ স্বপ্নে।নিশ্চয়ই, নিচে মো. কামাল উদ্দিনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যটি দেওয়া হলো, যা সংবাদ বা স্মরণসভায় ব্যবহারের উপযোগী:
—মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন, বলেন
মঈনউদ্দীন মহসিন ছিলেন আমাদের নাগরিক আন্দোলনের হৃদয়। তিনি চট্টগ্রামের স্বার্থে জীবনভর লড়েছেন। কখনো নিজের জন্য কিছু চাননি—সবসময় চেয়েছেন মানুষের অধিকার, উন্নয়ন ও মর্যাদা।
তিনি ছিলেন সৎ, সাহসী ও স্পষ্টবাদী। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তাঁর কণ্ঠ ছিল জোরালো। সংকটের সময় আমাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে দাঁড়িয়েছেন।
মহসিন ভাই শুধু সংগঠনের নেতা ছিলেন না, ছিলেন আমাদের প্রেরণা। আজ তিনি নেই, কিন্তু তাঁর আদর্শ, দায়িত্ববোধ আর সংগ্রামী চেতনা আমাদের আগামী পথচলার সাহস যোগাবে।
চট্টগ্রাম তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রাখবে। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।