1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
কেশবপুরে প্রকাশ্যে যুবদল কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা! সবুজসহ তিনজন আটক, এলাকায় উত্তেজনা! শওকত আলম শওকত ও হাজী মোঃ আবু আকতার বোয়ালখালী বিএনপির অগ্রসৈনিক ওসি বাবুল আজাদের নেতৃত্বে থানার লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে চারবারের সেরা ওসি আফতাব উদ্দিন দিলরুবা খানম : বহুমাত্রিক প্রতিভায় দীপ্ত এক মানবিক শিল্পী সাংবাদিকতা নাকি ব্যবসা? পেশার পবিত্রতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ! প্রধান উপদেষ্টার বরাবর চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের স্মারকলিপি প্রদান সাংবাদিকের বিভ্রান্তিকর পরিচয় ব্যবহার: চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রতিবাদ বক্তা ও বক্তৃতা নিয়ে কিছু অপ্রিয় কথা ঢাকা সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুজন কারাগারে আত্মহত্যা

হামিদচরে শোকের ছায়া: কিশোর গ্যাংয়ের অমানবিক আগ্রাসন

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

চাঁন্দগাওয়ের হামিদচর এলাকা। এখানকার ছোট্ট গ্রামপ্রান্তের পথগুলোকে দাগিয়ে রেখেছে কালো ছাপ—শুধু বৃষ্টির কাদা নয়, নৃশংসতার কাদা। ৩০ এপ্রিল ২০২৫ সকালে পাওয়া গেল কিশোর ক্রিকেটার রাহাত খান–এর নিস্তেজ দেহ। তার স্কুল ব্যাগ মিলেছে নদীর তীরে, জুতা মাটি জলে আবৃত। পুলিশ গোয়েন্দা উদ্ধারে জানিয়েছে—১৩ জন সহপাঠীর হাতে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল তাকে, এরপর পাঁচ জন লাশ ভরিয়ে ফেলে আসে নদীর কাঁদামাটি বিলে।
এই তরুণ প্রাণকে ছিনিয়ে নেওয়া হলো গ্যাং–মানসিকতার–এর এক অঘোর স্তরের কারণে। প্রশ্ন জাগে, কীভাবে জন্ম নিলো এ গ্যাং? কী কারণে স্কুলের অভ্যন্তরে ফুটফুটে ছাত্রছাত্রীরা মিশে গেলো ক্রুরতা ও অপরাধের ছায়ায়?
কিশোর গ্যাং: গোপন ছদ্মবেশের সংঘাত-বদলানো বন্ধুত্বের মুখোশ
আজকের কিশোরদের ‘বন্ধুত্ব’ আর গতো দিনের খেলার দলের মতো নয়। এর ভেতর থাকে দলগত পরিচয়, গ্যাং–নাম, অবৈধ ইমেজ–নিজেদের বিশেষ দেখানোর এক নেশা। মাত্র কয়েকজন দিয়ে শুরু, ধীরে ধীরে যোগ হয়ে যায় আরও পড়ুয়ারা—এভাবেই গ্যাং গড়ে ওঠে।-ঘাতক অস্ত্রে চালানো লড়াই, শেষ কয়েক বছরে আমরা দেখেছি, স্কুলের হালকা খালাসের সই-কলম-রুলার বদলে ছুরি, লাঠি, এমনকি নোকা–বলে যে ছোরা–মাহে–ঘড়িম খুলতে শেখানা। মা–বাবার আঁচড়ানো আহার, শিক্ষক–শাসকের ভালোবাসা–সব নস্যাৎ করে চলে আসে খুন-খারাপের নিশ্বাস। মাদক–চক্রের প্রলুব্ধতা
একদলের সিনিয়র ছাত্রের দায়িত্ব পায় ঠ্যালাগাড়িতে চোলাই মদ ফেঁসিয়ে আনা। মদ্যপ অবস্থায় পটিয়ে নেওয়া হয় বাল্যমানেসিকদের। এ নেশা ছড়িয়ে দেয় স্ব-ঋণ–ঋণ। অনেকে বলে, একটু পকেটমানি, একটু গ্যাং–রং, আর … পরিশেষে আত্মরক্ষা নয়, নির্মমতা।
বদলা–প্রতিশোধের অশান্তি-
ছোটখাটো ঝগড়া, বাজে ছল, মাধ্যমিকের পরীক্ষায় ফেল—সমস্ত অবিলম্বে বদলার অভিযোগ গ্যাং–ছকিতে। “সে আমার রিপোর্ট টিন দাবি করেনি—কেটে ফেলি?”, “সে ঘুরে–ঘুরে আমায় কলিগের দোষারোপ করছে—গ্যাং–রূপে শাস্তি দেই”—এমন কথা কেউ কাউকে বলে না, বরং অস্ত্র ভরা ঘায়ে আঘাত করে বলে দেয় বদলাটা। অপহরণ থেকে চাঁদাবাজি
বিনা কথায় ফোন করে চলে আসে পরিচিত ‘গ্যাং মেসেঞ্জার’—যেতে হবে নির্দিষ্ট স্থানে। লুট, অপহরণ, চাঁদাবাজি—কোনও শিক্ষানবীশকে শিকার বানিয়ে চলে গ্যাং–হুকুম পালন।
রাহাতের দৃশ্য: এক ফুটফুটে জীবন হারা- রাহাত খান—তার কোলে ছিল ক্রিকেট ব্যাট আর স্বপ্নের ছন্দ। পরিশ্রমী, সৎ, খেলার মাঠে ছুটে বেড়ানো ছেলের খোলাময় হাসি ছিল স্কুল জীবন। কিন্তু একদিন সকালে সেই স্বপ্ন ঝাঁজিয়ে কাদা–ময় নদীতে ফেলে দেয়া হলো। তার দুর্বল দেহের ক্ষতচিহ্ন ঘটনাস্থল বলে দেয় ১৮–২০ ডিম যন্ত্রণা। শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, বরাবরই রাহাতকে উৎসাহ দিতেন সততার পথে; কিন্তু স্কুলের অবক্ষয়িত পরিবেশে সে আর পারল না প্রতিরোধ। গ্যাং–নেতার বুকে স্ফীত হয়ে, বন্ধুর ‘মুমুর্ষু’ প্রলুব্ধতা তাকে করল শিকার।
সমাধান: আমাদেরই প্রত্যায় ও উদ্যোগ- ১. সীমাহীন মনিটরিং ও নিরাপত্তা: স্কুলের চত্বর থেকে শুরু করে সাইবার ক্লাসরুম—সবখানে নজরদারি অত্যন্ত জরুরি। সিসি ক্যামেরা, ছাত্র–গুরুর জনসচেতনতা কর্মশালা, ২৪–ঘণ্টা সেভ এন-হেল্পলাইন চালু রাখতে হবে।
২. শিক্ষকের প্রশিক্ষণ: শুধু মাতৃভাষা-বিজ্ঞানই নয়, মানসিক স্বাস্থ্য, গ্যাং ও মাদক প্রতিরোধের কোর্স চালু করতে হবে। শিক্ষকরা যাদের দ্বায়িত্ব, তাদেরই করে তুলতে হবে প্রথম প্রতিরোধক। ৩. পিতামাতার ভূমিকা: বাড়িতে শিশুদের সাথে নিয়মিত মানসিক আলাপ–উপদেশ, অনলাইনে যোগাযোগের খোঁজ–টিকিট খুঁজে বের করতে সহায়তা। ৪. ন্যায়বিচার-উদ্যোগ: স্কুল, পুলিশ, সমাজ—all মিলিয়ে জিরো টলারেন্স নীতি প্রণয়ন। গ্যাং–নেতাসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আরোপ করতে হবে মাদকদমন, অস্ত্র-আইন, অপহরণ-আইন অনুযায়ী বিচারের বন্দোবস্ত। ৫. সামাজিক পুনর্বাসন:
নির্যাতন, গ্যাং–নেশা–মাদক বিস্তার রোধে প্রয়োজনে যৌথ পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু করতে হবে। হয়রানি, হুমকি—সর্বত্রই কোউন্সেলিং এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দরকার। রক্তাক্ত রাহাতের স্মৃতি আমাদের নিজেকে জাগিয়ে দেয়—যে শিররন্ধ্র হলো গ্যাং–নেশার তোষামোদে, যে শিশুমনে ধরেই অপরাধের ছাপ, যে কিশোরী নেশা আর হিংসার ফাঁদে আটকা পড়ে।
আজ আমরা যদি চুপ থাকি, তবে অন্য কোনো রাহাত হবে পরের বিষাক্ত শিকার। আজ যদি আমরা উদ্যোগী না হই, তবে গ্যাং–অপরাধের কালো ছায়া বাড়তেই থাকবে। বাঁচাতে হবে ‘ফুটফুটে জীবন’; প্রতিটি রাহাতের হাসি ধরে রাখতে হবে নিরাপদ ও সুস্থ স্কুল-সমাজে, যেখানে অস্ত্রের শুন্গ, গ্যাং–উলেখ আর নৃশংসতা কখনই অভিশাপ হয়ে ফের ফিরবে না

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট