1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

ক্ষমতা, পুলিশি নির্যাতন ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা: ওসি নেজাম উদ্দিনের ঘটনা ও শেখ হাসিনা সরকারের অপব্যবহার

মো.কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনার শাসন মানে অন্যায়ের জয়, আইন তার হাতের পুতুল, ন্যায় হলো ক্ষয়।

পুলিশকে বানালো ক্ষমতার দাস, গণতন্ত্রের নামে করলো সর্বনাশ।

লুটপাটের রাজ্যে ন্যায়ের নেই ঠাঁই, শেখ হাসিনার হাতে স্বদেশ নতজানু কাঁদে তাই।

অবিচারের অন্ধকারে হারালো আলো, শোষণের শৃঙ্খলে দেশ হলো কালো।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বরাবরই প্রশাসনের উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে, যখন কোনো দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকে, তখন প্রশাসনকে ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করার প্রবণতা বেড়ে যায়। আওয়ামী লীগ যখন টানা ক্ষমতায় ছিল, তখন পুলিশের ভূমিকা এবং তাদের রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে, পুলিশের বেশিরভাগ সদস্যই রাজনৈতিক চাপের শিকার হয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।

এই পরিস্থিতির একটি ভয়াবহ উদাহরণ ওসি নেজাম উদ্দিনের ঘটনা। তিনি এবং তার সহকর্মীরা যখন আইন মেনে কাজ করতে চাইলেন, তখন ক্ষমতাসীন দলের হস্তক্ষেপ তাদের ক্যারিয়ারকেই হুমকির মুখে ফেলে দিল। একটি সাধারণ মোবাইল চোরের পক্ষে দাঁড়িয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পুলিশ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয়, যা আমাদের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও দলীয় স্বার্থপরতার নগ্ন চিত্র তুলে ধরে। আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই, কিন্তু তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছিল, যা এখনও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জন্য এক দুঃসহ স্মৃতি হয়ে রয়েছে। ওসি নেজাম উদ্দিন ও মোবাইল চোর গ্রেপ্তারের ঘটনা

ওসি নেজাম উদ্দিন, ওসি মহিউদ্দিন সেলিম এবং এসআই কামরুজ্জামান তখন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা। তারা একটি মোবাইল চোরকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেন, যার বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ ছিল। চোর নিজেও তার অপরাধ স্বীকার করে এবং পুলিশ তার কাছ থেকে চুরি করা মোবাইল উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে একটি চোর চক্র চিহ্নিত করে, যা চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল। এটি ছিল পুলিশের জন্য একটি সফল অভিযান। কিন্তু এই ঘটনার মোড় ঘুরে যায় যখন জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এবং শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় শেখ হেলালের পরিচিত।

শেখ হেলাল, যিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা, তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তিনি দাবি করেন যে,

গোপালগঞ্জের একজন লোককে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে মামলায় ফাঁসিয়েছে।

এরপর শেখ হেলাল পুলিশ সদর দপ্তরের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করেন এবং স্বয়ং আইজিপিকে নির্দেশ দেন যেন এই তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শেখ হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রশাসনিক দুর্নীতি এই ঘটনাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে আনে: কেন একজন চিহ্নিত অপরাধীকে বাঁচানোর জন্য এত বড় রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হলো?কেন পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উল্টো চাকরি হারানোর হুমকির মুখে পড়ল?

কেন একজন প্রধানমন্ত্রী আত্মীয় হওয়ার কারণে অপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত হলো?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর একটাই—বাংলাদেশে আইনের চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয় বড়। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং নিজেদের লোকদের রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

এই ঘটনার পরে, নেজাম উদ্দিন এবং তার সহকর্মীদের চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলিশ কমিশনার জানতেন যে, তারা কোনো অন্যায় করেননি। কিন্তু শেখ হেলালের চাপে তিনি নিরুপায় হয়ে যান। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে, চাকরি বাঁচানোর জন্য নেজাম উদ্দিনকে বাধ্য হয়ে শেখ হেলালের এপিএস (ব্যক্তিগত সহকারী) ওবাইদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হয়। ঘুষ ও রাজনৈতিক দেনদরবার শেখ হেলাল সরাসরি শর্ত দেন যে, মোবাইল চোরকে মামলা থেকে বাদ দিতে হবে এবং তাকে তিন মাসের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই শর্ত মেনে নেওয়া ছাড়া পুলিশের কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন সময়ে তাদের বিরোধিতা করা মানে চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া এবং ভবিষ্যতে হয়রানির শিকার হওয়া।

এই সমঝোতার জন্য ঢাকার গুলশানের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে শেখ হেলালের এপিএস ওবাইদের সঙ্গে বৈঠক হয়।

পুলিশের চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে নেজাম উদ্দিন নিজের পকেট থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হন। এটি প্রশাসনের ভয়াবহ দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ, যেখানে অপরাধীদের রক্ষা করতে রাজনৈতিক নেতারা পুলিশের উপর চাপ প্রয়োগ করে এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পুলিশের ভূমিকা ও আজকের বাস্তবতা আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই। কিন্তু তাদের শাসনামলে পুলিশ কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তা এখনও জনগণের স্মৃতিতে সতেজ।

শেখ হাসিনার শাসনামলে:

পুলিশ ও প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহৃত করা হয়েছে

অপরাধীদের রাজনৈতিক আশ্রয়ে রক্ষা করা হয়েছে

বিরোধীদের দমন করতে পুলিশকে নিপীড়নের হাতিয়ার বানানো হয়েছে  নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে চাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের হয়রানি করা হয়েছে ওসি নেজাম উদ্দিনের ঘটনা এটি প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগের আমলে পুলিশ তার নিজস্ব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল এবং কেবলমাত্র দলীয় স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছিল। আজ যখন তারা ক্ষমতায় নেই, তখন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা মুখ খুলছেন এবং বলছেন, কীভাবে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল, কীভাবে তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেননি। শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনামলে পুলিশকে একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিলেন। যার ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ: আইনশৃঙ্খলা কি রাজনীতিমুক্ত হতে পারবে? ওসি নেজাম উদ্দিনের ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেমন রাজনৈতিক চাপের মধ্যে কাজ করে। এখন প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর কি পুলিশ প্রশাসন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হতে পারবে?

বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছে, তারা যদি একই ভুল করে এবং প্রশাসনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে, তাহলে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হবে না।

বাংলাদেশের জনগণ চায় একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পুলিশ প্রশাসন, যেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে ন্যায়বিচার গুরুত্বপূর্ণ হবে। যদি এটি নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে আরেকটি নেজাম উদ্দিনের ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে না। আমাদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আমরা কি একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা চাই, নাকি রাজনীতির হাতের খেলনা হয়ে যাওয়া প্রশাসন মেনে নেব? এই প্রশ্নের উত্তরই নির্ধারণ করবে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। পরিশেষে বলবো-গণতন্ত্রের মুখোশ পরে লুটের মেলা, পুলিশকে বানালো ক্ষমতার খেলা।

আইনের শাসন আজ শ্বাসরুদ্ধ প্রাণ, অবিচারের ছায়ায় কাঁদে বাংলাদেশের প্রাণ।

সত্যের পক্ষে যারা, তারা বন্দী আজ, অন্যায়ের স্রোতে ভেসে যায় সমাজ। হাসি মরে গেছে ন্যায়ের আঙিনায়, অন্ধকার নেমেছে মুক্তির চিনায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট