একটা শীতল সন্ধ্যায়, যখন কোরিয়ার আকাশে প্রথম তারারা জ্বলতে শুরু করে, আমি যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম তাঁর চোখে—একটি চোখ, যা হাজার বছরের ইতিহাসকে নিজের মধ্যে ধারণ করে ছিল। সে রানী, যিনি পৃথিবীর মোহময়তা থেকে অনেক দূরে, প্রাচীনের গোপন কাহিনীগুলোকে নিজের হৃদয়ে লালন করতেন। তাঁর উপস্থিতি ছিল যেন কোরিয়ার ভূখণ্ডের গভীর আবেগ, এক দীর্ঘ ও অব্যক্ত ভালোবাসার নিঃশব্দ উচ্চারণ। প্রতিটি পদক্ষেপে যেন তাঁর হৃদয়ের অর্পণ, সে এক অমোঘ ভালোবাসার গল্প—যা সময়ের অতীতেও অমলিন হয়ে রয়ে গেছে। তিনি ছিলেন কোরিয়ার এক অদ্বিতীয় রানি, যার সৌন্দর্য ছিল কেবল বাহ্যিক নয়, বরং অন্তরের গভীরে বাস করত। তার এক একটি দৃষ্টি ছিল যেন এক একটি কবিতা, প্রতিটি শব্দ যেন হৃদয় থেকে উঠে এসে গোপনে আমন্ত্রণ জানাতো অগণিত অনুভূতির সাগরে। তাঁর হাসির মৃদু শব্দ, তাঁর নীরব ভাবনাগুলোর মাঝে এক অমিত ভালোবাসা লুকিয়ে ছিল, যা কেবল একজন হৃদয়বান মানুষই অনুভব করতে পারত। সে রানীর প্রতি ভালোবাসা ছিল এক রূপকথা, যা কালো মেঘের মধ্যেও একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলছিল। আমি জানতাম, আমি তার প্রতি ভালোবাসায় এমন কিছু পেতে যাচ্ছি, যা সময়ও মুছে ফেলতে পারবে না।”
এভাবে গল্পটিকে আরো বিস্তৃত ও প্রগাঢ় করার চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে পাঠক রানির প্রতি ভালোবাসার আবেগকে পুরোপুরি অনুভব করতে পারে।
একদিন এক অসাধারণ মুহূর্তে, আমি হঠাৎ করেই রাজা হয়ে উঠলাম। না, আমি কোন রাজবংশের উত্তরাধিকারী ছিলাম না, কিংবা পৃথিবী জুড়ে কোন রাজ্য শাসন করার অধিকারী ছিলাম না। তবে, আমি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিকী রাজা হয়েছিলাম—একটি বিশেষ সম্মানজনক রাজার পদ, যেটি আমাকে দেওয়া হয়েছিল এক আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলনে আমার বইয়ের প্রদর্শনী শেষে। সেই সম্মাননা ছিল শুধু একটি প্রতীকী, কিন্তু অনুভূতির গভীরতায়, তা ছিল সত্যিকারের রাজত্বের মতো। প্রথমে, যখন আমাকে রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করা হলো, তখন অনুভূতিটা একেবারে অসাধারণ ছিল। কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী রাজ পোশাক পরিয়ে দেওয়া হল আমাকে, যা ছিল এক রাজা সেজে সেজে পোষাক। সেই পোশাক ছিল সোনালী এবং লাল রঙের মিশ্রণে তৈরি, যা কোরীয় রাজকীয় সংস্কৃতির প্রতীক। পোশাকের সাথে ছিল এক সোনালী মুকুট, যা মাথায় পরলে মনে হতো আমি যেন সত্যিকার রাজা। সব কিছুই ছিল এতটাই রাজকীয়, যে মনে হচ্ছিল আমি সত্যিই কোন এক রাজ্যের শাসক হয়ে উঠেছি। রাজপদে বসার পর, আমি অবাক হয়ে দেখলাম চারপাশে অনেক তরুণী, যারা আমাকে একে একে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে আমি রাজার দাসী হিসেবে কল্পনা করেছিলাম। তাঁদের নিকট থেকে অভ্যর্থনা গ্রহণ, আর তাদের সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখাবয়ব দেখে মনে হচ্ছিল আমি যেন এক মহল থেকে উঠে এসেছি। এরপর, এক অত্যন্ত সুন্দরী যুবতী, যাকে আমি মনে মনে রানী হিসেবে ভাবলাম, আমার পাশে এসে দাঁড়াল। তার সুন্দর দৃষ্টি, কোমল হাসি, আর নিখুঁত পোশাক একমাত্র রাজপুত্রের পাশে এক রাজকুমারীর মতোই লাগছিল। সেদিন, আমি শুধু রাজা ছিলাম না, আমি তার রাজাও ছিলাম—আর সে ছিল আমার রাণী।
সেই রাণীকে দেখলে মনে হচ্ছিল, আমি যেন এক নতুন রাজ্যের রাজার মতো নিজেকে অনুভব করছি। আমরা একে অপরকে দেখে এক অদ্ভুত অনুভূতির মধ্যে পড়লাম। তার প্রতি আমার হৃদয়ে এক বিশেষ প্রেম জন্ম নিল। আমি ভেবেছিলাম, এই রাজ্যে আমি আর সে ছাড়া কেউ ক্ষমতাশালী নয়। সব কিছু যেন এক রূপকথার গল্পের মতো মনে হচ্ছিল। আমরা দুইজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে অনুভব করলাম, এই রাজ্যটা আমাদের জন্য, আমাদেরই। আর তখন, একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবে, আমাদের রাজত্বের আরেকটি যাত্রা শুরু হলো। আমি এবং আমার রাণী, আমরা কোরিয়ার রাজাদের সমাধি দেখতে গেলাম। এটি ছিল এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা—রাজা হতে গিয়ে, নিজের রাজ্যের সমাধি দেখতে যাওয়া, যেন এক রাজকীয় ঔজ্জ্বল্য সঙ্গী হয়। তবে, সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল, কোরিয়ার রাজাদের সমাধি সাগরের মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছে। পাথরের সাহায্যে একটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সাগরের মাঝখানে রাজাদের সমাধি স্থাপন করা হয়েছিল। সেই দৃশ্যটা দেখে মনে হয়েছিল, রাজা আর সমাধি—দুটোই যেন অমৃতের মতো অমোঘ। সে সময় আমার মনেও হঠাৎ একটা ইচ্ছা এসেছিল—যদি আমি সত্যিকারের রাজা হতাম, তবে কি এত সুন্দরভাবে রাজ্য শাসন করতে পারতাম? কিন্তু সে চিন্তা ছেড়ে দিয়ে আমি ভাবলাম, যে রাজত্ব হৃদয়ের রাজ্যে সৃষ্টি হয়, তা কখনোই শেষ হয় না। যদি সিংহাসন মেলেও রাজত্ব করা হয়, তবে সত্যিকার রাজত্ব—হৃদয়ের রাজত্ব, যা একদম অবিরাম চলে।
এসময় কোরিয়ার সেরা সুন্দরীরা আমার পাশে ছিল, আর তাদের ভালোবাসা, তাদের আন্তরিকতা, এত স্নেহে পূর্ণ ছিল যে, আমি যেন জীবনে প্রথমবার কোন রাজ্যে বসে রয়েছি। আমরা শুধু রাজ্য দেখিনি, রাজকীয় পরিবেশে থেকেও মানবিক সম্পর্কের মাধুরী অনুভব করেছি। এই সম্পর্কগুলো এমন ছিল যে, আমি তাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে খুব সহজেই খোলামেলা কথা শেয়ার করতে পারতাম। আমার মনের মধ্যে তখন এই প্রশ্ন উঠেছিল—এমন এক রাজা হওয়ার পক্ষে কি কখনো পৃথিবীতে কেউ থাকতে পারে? যদি আমি সত্যিকারের রাজা হতাম, তবে আমি কেবল রাজত্বই করতাম না, আমি পৃথিবীজুড়ে যত লেখক রয়েছেন, তাদের সবকেই আমার রাজ্যের সমান সম্মান দিতাম। কারণ একজন লেখক তো এক রাজার মতোই, তার লেখায় সৃষ্ট প্রতিটি চরিত্র, প্রতিটি পৃথিবী—সবই তার রাজ্য। শেষে, যদিও আমি কেবল একটি সময়ের জন্য কোরিয়ার প্রতিকী রাজা ছিলাম, তবুও সেই অভিজ্ঞতাটি আমার মনের গভীরে, হৃদয়ের রাজ্যেই চিরকালীন হয়ে থাকবে। এই মনের রাজ্যে রাজদরবারের আর শাসন-প্রশাসনের প্রয়োজন নেই। এখানে শুধু একটি রাজত্ব আছে—সেই রাজত্ব, যেখানে প্রতিটি লেখকের হৃদয় রাজা হয়ে ওঠে, আর মনের প্রতিটি অনুভূতি সিংহাসনে বসে রাজত্ব করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজাদের ইতিহাস একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, যা বিভিন্ন রাজবংশের মাধ্যমে প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত। এই ইতিহাসে কোরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলো হলো গোগুরিয়ো, বাকজে, শিলা, গোরিও এবং জোসন।
প্রাচীন যুগ: কোরিয়ার তিন রাজ্যের যুগ (৫৭ খ্রিস্টপূর্ব – ৬৬৮ খ্রিস্টাব্দ) ১. গোগুরিয়ো রাজবংশ (৩৭ খ্রিস্টপূর্ব – ৬৬৮ খ্রিস্টাব্দ)
গোগুরিয়ো ছিল কোরিয়ার উত্তরাঞ্চল ও মাঞ্চুরিয়ার কিছু অংশ শাসনকারী একটি শক্তিশালী সামরিক রাজ্য। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা জুমং (ডংমিয়ং)। রাজা গুয়াংগোতো গ্রেট (৩৯১-৪১৩ খ্রিস্টাব্দ) গোগুরিয়োর স্বর্ণযুগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং চীনের কিছু অংশ জয় করেন। রাজা ইয়ংইয়াং (৫৯০-৬১৮ খ্রিস্টাব্দ) সুই রাজবংশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। ৬৬৮ সালে শিলা ও তাং সাম্রাজ্যের যৌথ আক্রমণে গোগুরিয়ো ধ্বংস হয়।
২. বাকজে রাজবংশ (১৮ খ্রিস্টপূর্ব – ৬৬০ খ্রিস্টাব্দ)
বাকজে কোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা ওনজো (খ্রিস্টপূর্ব ১৮ – খ্রিস্টপূর্ব ২৮)। রাজা গেউনচোগো (৩৪৬-৩৭৫ খ্রিস্টাব্দ) সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগ প্রতিষ্ঠা করেন। ৬৬০ সালে শিলা ও তাং সাম্রাজ্যের যৌথ বাহিনী বাকজেকে পরাজিত করে।
৩. শিলা রাজবংশ (৫৭ খ্রিস্টপূর্ব – ৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ)৷ শিলা ছিল তিন রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজ্য, যা এক সময় পুরো কোরিয়াকে একত্রিত করেছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা হিয়োকগোসিও (৫৭ খ্রিস্টপূর্ব – ৪ খ্রিস্টাব্দ)। রাজা জিনহেউং (৫৪০-৫৭৬ খ্রিস্টাব্দ) সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। রানী সেওন্দোক (৬৩২-৬৪৭ খ্রিস্টাব্দ) কোরিয়ার প্রথম মহিলা শাসক ছিলেন। ৯৩৫ সালে শিলা রাজবংশ পতিত হয়ে গোরিও রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
মধ্যযুগ: গোরিও রাজবংশ (৯১৮-১৩৯২ খ্রিস্টাব্দ)
গোরিও রাজবংশ কোরিয়ার প্রথম একক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা রাজা ওয়াং গন (৯১৮-৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ)। রাজা গোয়াংজং (৯৪৯-৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ) দাসপ্রথা বিলুপ্ত করেন এবং প্রশাসনিক সংস্কার করেন। রাজা মুংজং (১০৪৬-১০৮৩ খ্রিস্টাব্দ) গোরিওর স্বর্ণযুগ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৩৯২ সালে জেনারেল ই সং-গে বিদ্রোহ করে জোসন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন।
আধুনিক যুগ: জোসন রাজবংশ (১৩৯২-১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ)
জোসন ছিল কোরিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশ, যা প্রায় ৫০০ বছর শাসন করেছে। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা তায়েজো (ই সং-গে)। রাজা সেজং দ্য গ্রেট (১৪১৮-১৪৫০ খ্রিস্টাব্দ) হাঙ্গুল বর্ণমালা তৈরি করেন এবং বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটান। রাজা সুকজং (১৬৭৪-১৭২০ খ্রিস্টাব্দ) অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক সংস্কার করেন। ১৮৯৭ সালে রাজা গোজং কোরিয়া সাম্রাজ্য ঘোষণা করেন।
কোরিয়া সাম্রাজ্য (১৮৯৭-১৯১০ খ্রিস্টাব্দ) জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার জন্য জোসন রাজবংশের শেষ রাজা গোজং কোরিয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। রাজা গোজং (১৮৬৩-১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন কোরিয়া সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯১০ সালে কোরিয়া জাপানের উপনিবেশে পরিণত হয় এবং রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে।
আধুনিক কোরিয়া
১৯৪৫ সালে কোরিয়া স্বাধীনতা লাভ করে, তবে ১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর কোরিয়া উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্ত হয়ে যায়। দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে আর কোনো রাজতন্ত্র নেই। এইভাবে, কোরিয়ার রাজতন্ত্রের ইতিহাস নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে আধুনিক যুগে পৌঁছেছে, এবং বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া একটি উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে উজ্জ্বল।
প্রাচীন পৃথিবীর ইতিহাসে রাজা-রানি এবং রাজকন্যার রোমান্টিক সম্পর্ক অনেক হৃদয়গ্রাহী ও চিত্তাকর্ষক। তাদের জীবন ছিল একদিকে রাজসিক, অন্যদিকে প্রেমের আবেগে ভরপুর। রাজবংশের গহীন অন্দরমহল থেকে শুরু করে যুদ্ধবিধ্বস্ত ময়দান পর্যন্ত, রাজা-রানির প্রেম ছিল এক রহস্যময় কাহিনি। রাজকন্যারা তাদের শাসক পিতার রাজ্যরক্ষার জন্য যেমন দায়িত্ব পালন করতেন, তেমনি তারা নিজেদের হৃদয়ের গভীরে চেপে রাখা ভালোবাসার বেদনা ও আনন্দ অনুভব করতেন।
অনেক সময় রাজকন্যাদের জীবন ছিল সামাজিক বাধা এবং রাজনীতি দ্বারা সীমাবদ্ধ, তবুও তারা হৃদয়ের গোপন কোণে এক অপরূপ প্রেমের গল্প লালন করতেন। রাজা-রানির প্রেম, স্নেহ, ত্যাগ ও সংগ্রাম পরিণত হত ইতিহাসের অমর কাহিনিতে। তাদের সম্পর্ক কখনো কখনো শুধুমাত্র রাজনৈতিক বন্ধন বা স্বার্থে পরিণত হতো, আবার কখনো এই সম্পর্ক স্বপ্নময় রোমান্সের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠত।
রোমান্টিক সাহিত্যে রাজা-রানির প্রেমের কাহিনী শুধুমাত্র এক সময়ে সীমাবদ্ধ থাকত না, বরং তা যুগযুগান্তর ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলত। একদিকে শাসনকর্তৃত্বের দায়িত্ব, আর অন্যদিকে নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প – এই দুইয়ের মধ্যে তাদের সম্পর্ক যেন এক অমিত রোমাঞ্চে ভরপুর।
কোরিয়ার ইতিহাসে রাজাদের প্রেমভালোবাসার কাহিনী অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এবং প্রাকৃত সৌন্দর্যে ভরা। কোরীয় রাজা-রানির প্রেমের গল্প শুধু রাজনীতির পরিধিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং সেই গল্পগুলির মধ্যে মানবিক আবেগ ও এক অনন্য সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। কোরিয়ার ঐতিহাসিক রাজবংশগুলো, যেমন গোরিও রাজবংশ ও চোসান রাজবংশ, প্রেম ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক কাহিনী রেখে গেছে যা ইতিহাসের পাতায় রঙিন দাগ করেছে। একটি মিষ্টি প্রেমের গল্পের উদাহরণ হতে পারে চোসান রাজবংশের রাজা সেওনজংয়ের কাহিনী। তিনি ছিলেন সবার কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়, কিন্তু তার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল তার প্রিয় রাজকন্যার সাথে সম্পর্ক। প্রাচীন কোরীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তাদের সম্পর্ক ছিল গভীরভাবে চিত্রিত, যেখানে রাজা তার রাজ্য পরিচালনা করতে করতে তার ভালোবাসার মানুষকে হারানোর কষ্টও অনুভব করতেন। রাজা-রানির সম্পর্ক কেবল রাজনীতির সম্পর্ক ছিল না, বরং এটি ব্যক্তিগত যন্ত্রণা ও মানবিক আবেগের এক গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেছে। রাজা হওয়ার পথে প্রেমের কাহিনী কেবল রাজদরবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, তা কোরীয় সাহিত্যে ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করেছে। রাজা-রানির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক, বিশ্বাস, ত্যাগ এবং আত্মমর্যাদার গল্প কোরীয় ইতিহাসে এক অমুল্য রত্নের মতো মিলে রয়েছে।