1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম: সততা ও দেশপ্রেমের শেষ বাতিঘর, যাকে হারিয়ে পথভ্রষ্ট আওয়ামী লীগ”

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম – এক অনন্য প্রজ্ঞা, সততা আর দেশপ্রেমের প্রতীক, যার অভাব আজ দেশের প্রতিটি সংকটময় মোড়ে আরও বেশি অনুভূত হয়। তার মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেই নির্লোভ, নিরহংকার মানুষটিকে, যিনি কখনও ক্ষমতার মোহে নিজেকে বিকিয়ে দেননি।
কিন্তু কি নির্মম বাস্তবতা! শেখ হাসিনার শাসনামলে সেই সততার বাতিঘরটি নিভে গেছে, আর তার পরিবর্তে দলে জায়গা করে নিয়েছে লোভী, দুর্নীতিগ্রস্ত একদল হায়েনা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা, পিতার মহান আদর্শের উত্তরাধিকারী হয়েও, আশরাফুলের মতো নেতা তৈরি করতে পারেননি। বরং তার নেতৃত্বে দেশ ক্রমেই লুটপাটের কবলে নিপতিত হয়েছে, আর তিনি নিজেই সে দুর্নীতির পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে অন্ধ হয়ে গেছেন। আজ মনে হয়, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বেঁচে থাকলে, শেখ হাসিনা হয়তো এতটা পথভ্রষ্ট হতেন না। তিনি হতে পারতেন সেই আয়না, যেখানে শেখ হাসিনা নিজের ভুলগুলোর প্রতিবিম্ব দেখতে পেতেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, শেখ হাসিনা সে সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। তাই আজ তার শাসনের পতন, তার দেশত্যাগ—এসব কিছুই অবশ্যম্ভাবী। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুদিনে এই শূন্যতা আরও গভীর হয়ে বাজে। আমরা শুধু স্মরণ করি, শ্রদ্ধা জানাই এবং আফসোস করি—দেশের জন্য আশরাফুলের মতো আরও কিছু নেতা প্রয়োজন ছিল।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতি আজ একজন দেশপ্রেমিক, সৎ ও নীতিবান নেতার শূন্যতা গভীরভাবে অনুভব করছে। তার মতো নেতা যদি আজ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকতেন, তাহলে হয়তো দলের বর্তমান দুরবস্থার চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো। সৈয়দ আশরাফুল ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি ক্ষমতা কিংবা পদ নয়, বরং দেশ ও দলের স্বার্থকে সর্বাগ্রে দেখতেন। বেদনাদায়ক সত্য হলো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা তার বাবার মতো নেতৃত্ব দিতে পারেননি। আশরাফুল ইসলামের মতো সৎ ও আদর্শবান নেতার পথ অনুসরণ করে যদি তিনি আওয়ামী লীগে কিছু সৎ নেতা তৈরি করতেন, তাহলে দেশের বর্তমান অবস্থা এতটা শোচনীয় হতো না। বরং দেশ আজ উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতো। দুঃখজনক হলেও সত্য, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ ক্রমশ লুটপাটের শিকার হয়েছে। আশরাফুল ইসলামের মতো মানুষের অভাবে শেখ হাসিনার চারপাশে চাটুকার ও দুর্নীতিবাজদের আধিপত্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলস্বরূপ, দেশের সম্পদ লুটপাট করে শেখ হাসিনার সহায়তায় এক শ্রেণির মানুষ অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এই পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। এ ঘটনা শুধু শেখ হাসিনার জন্য নয়, বরং জাতির জন্যও অত্যন্ত লজ্জাজনক অধ্যায়। যদি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি শেখ হাসিনার ভুলগুলো সংশোধনে সাহসী ভূমিকা রাখতেন। সংকটের সময়ে তিনি দলের হাল ধরে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতেন। আশরাফুল ইসলামের সততা, দৃঢ়তা ও দেশপ্রেম শেখ হাসিনার শাসনামলের দুর্নীতিগ্রস্ত চিত্র পাল্টে দিতে পারতো।
আজকের এই দিনে, আওয়ামী লীগের উচিত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। তার মতো নেতার অভাবেই আজ দল পথহারা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবায়ন করতে হলে আশরাফুল ইসলামের মতো নেতৃত্বের পুনর্জাগরণ প্রয়োজন।সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম – এক সংগ্রামী রাজনীতিকের নাম, যিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে সততা, নিষ্ঠা এবং দেশপ্রেমের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৫২ সালের ১লা জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা, বাংলাদেশের মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান নেতা।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে সৈয়দ আশরাফুল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতার সাথে তার পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই শোক ও ক্ষত নিয়ে আশরাফুল যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান এবং লন্ডনের হ্যামলেট টাওয়ারে বসবাস শুরু করেন। প্রবাস জীবনে তিনি বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। তিনি লন্ডন যুবলীগের সদস্য ছিলেন এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশী ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের (এফবিওয়াইইউ) শিক্ষা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে সৈয়দ আশরাফুল দেশে ফিরে আসেন এবং ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন। দলীয় সংকটে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সর্বদা নিষ্ঠা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের পর তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হয়ে তিনি একই মন্ত্রণালয়ে পুনর্নিয়োগ পান। তবে ২০১৫ সালের ৯ জুলাই, দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হন। মাত্র এক সপ্তাহ পর, ১৬ জুলাই তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্রিটিশ-ভারতীয় হিন্দু পরিবারের মেয়ে শীলা ঠাকুরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শীলা লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন। তাদের একমাত্র কন্যা রীমা ঠাকুর বর্তমানে লন্ডনের এইচএসবিসি ব্যাংকে কর্মরত। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর শীলা ঠাকুরের মৃত্যু সৈয়দ আশরাফুলের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। তার পর থেকে তিনি প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। ২০১৮ সালে তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে, যা নভেম্বরের মধ্যে চতুর্থ ধাপে পৌঁছে যায়। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর, ২০১৯ সালের ৩রা জানুয়ারি থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের মানুষ একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক নেতাকে হারায়। তার মরদেহ ঢাকার বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জীবন যেন এক অধ্যায় – যেখানে সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা অমলিন হয়ে রয়েছে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট