1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
নবীনগরে গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপির বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি পীরগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে শহিদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল বকশীগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত  জুলাই আন্দোলনে নিহত বিশালের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাশনের! বিএনপি’র  ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘অন্যের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন পঞ্চগড়ে পাঁচটি ফিলিং ষ্টেশনে ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা জয়পুরহাটে রেমিট্যান্স যোদ্ধা সম্মাননা নিয়ে সমালোচনার ঝড়,বিতর্কিত ব্যক্তির হাতে ক্রেস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গলাচিপায় বিএনপির সুসংগঠিত শক্তি প্রদর্শন ও আনন্দ র‌্যালি আবুল হাসানকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের সহিংসতার নির্মম চিত্র! ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে ভোক্তা অধিকার অভিযান

সবুজের আলিঙ্গনে সাংবাদিকদের মিলনমেলা: কোদালা চা বাগানে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের উৎসব

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

কোদালা চা বাগানের বসে লেখা-
সবুজের সুধা আর ঐতিহ্যের গল্প কর্ণফুলী নদীর ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে কোদালা চা বাগান, যেন এক পুরনো কবিতা—যার প্রতিটি পঙক্তিতে লেখা আছে শতবর্ষের গল্প, কর্ণফুলী নদীর তীরে বিস্তৃত কোদালা চা বাগান, যেন প্রকৃতির এক সুনিপুণ আঁচড়। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, সবুজের গহীনে ঢুকে পড়ে মন অবলীলায় হারিয়ে যায়। বিশাল চা বাগানের বুকে এক নিমন্ত্রণ, যেখানে শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, আছে নিঃশব্দে গল্প করা গাছপালা আর নদীর নরম গুঞ্জন। চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের এইবারের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হলো এই মনোমুগ্ধকর চা বাগানের বুকে। যেন সবুজের সঙ্গে সাংবাদিকদের এক রকমের আত্মার সংযোগ। সকাল থেকেই কর্ণফুলীর স্রোতধারা পাশে রেখে চা বাগানের পথ ধরে আমরা যখন এগিয়ে চললাম, মনে হলো—এই পথ যেন সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতে জানে। চা গাছের সারি সারি সুশৃঙ্খল বাহারী কুচকাওয়াজের মতো দাঁড়িয়ে আমাদের স্বাগত জানাচ্ছে। দূরে বিস্তীর্ণ রাবার বাগান আর পাখির কলরবে বাগানটি যেন অন্য এক ধরণের প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। আমরা যত এগোই, ততই প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ধরা দেয়। মনে হয়, কর্ণফুলী নদী আর চা বাগান একে অপরের পরিপূরক। নদীর পাশে দাঁড়িয়ে সবুজের দিকে তাকালে মনে হয় প্রকৃতি যেন নিজের হাতে এই ছবি এঁকেছে। বিকেলবেলা যখন আলো ছড়িয়ে পড়ছে, তখন কোদালা চা বাগানে হাসি আর গল্পে মুখর হয়ে উঠল আমাদের মিলনমেলা। পুরোনো সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা, নতুনদের সঙ্গে আলাপ আর হালকা চা-বিস্কুটের আড্ডা, সব মিলিয়ে যেন এক অবিস্মরণীয় দিন। আমরা সবাই যেন একাকার হয়ে গিয়েছি প্রকৃতির সঙ্গে। এই মিলনমেলায় প্রকৃতির সৌন্দর্যকে আমরা কেবল দেখিনি, অনুভব করেছি। কর্ণফুলীর তীরে দাঁড়িয়ে গাঢ় নিঃশ্বাসে চা বাগানের মিষ্টি গন্ধ বুকের গভীরে টেনে নিয়েছি। কর্মব্যস্ত জীবনে এই ধরনের একদিন যেন আমাদের সব ক্লান্তি ধুয়ে-মুছে নিয়ে যায়। কোদালা চা বাগান শুধু চায়ের পাতাই ফলায় না, এই বাগান বয়ে আনে প্রশান্তি আর মনের খোরাক। আমরা সাংবাদিকরা এখানে মিলিত হয়ে সেই প্রশান্তিকে সঙ্গী করে শহরে ফিরলাম। হয়তো আগামী বছর আবার মিলিত হবো, আবার হারিয়ে যাবো কর্ণফুলীর তীর আর সবুজের মাঝে। কোদালা চা বাগান: সবুজের সুধা আর ঐতিহ্যের গল্প কর্ণফুলী নদীর ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে কোদালা চা বাগান, যেন এক পুরনো কবিতা—যার প্রতিটি পঙক্তিতে লেখা আছে শতবর্ষের গল্প। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের বুক চিরে ছুটে চলা এই চা বাগানের জন্ম হয় ব্রিটিশ শাসনামলে, ১৮৯৪ সালে। তবে এর শুরু আরও পুরনো, ১৮২৮ সালে, যখন কর্ণফুলী নদী দিয়ে ব্রিটিশরা যাতায়াতের সময় এই বিস্তীর্ণ পাহাড়ি ভূমি দেখে চা চাষের স্বপ্ন বুনেছিল।
সে সময় কর্ণফুলীর ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটত ব্রিটিশদের জলযান। নদীর পাড় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা গাছপালার নিবিড় সবুজ দেখে একদিন ব্রিটিশ এক কর্মকর্তা বলে উঠলেন, “এখানে চা হবে, সেরা চা।” জমি লিজ নেওয়া হলো, আর ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াল কোদালা চা বাগান। চায়ের ঝলমলে পাতাগুলো যেন এখনো সেই দিনের সাক্ষী, যখন ব্রিটিশদের হাতে বোনা গাছগুলো সময়ের সঙ্গে বেড়ে উঠল। ১৯৭৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার যখন ব্যক্তিমালিকানায় লিজ দেওয়া শুরু করল, কোদালা চা বাগান পেল নতুন পথচলার ছাপ। ১৯৯৩ সালে আনোয়ার গ্রুপ বাগানটি লিজ নেয়, কিন্তু প্রকৃতি সবসময় যে মন খুলে দেয় না, তার প্রমাণ মেলে এখানে। লাভজনক না হওয়ায় ২০০৪ সালে বাগানটি ব্র্যাকের হাতে যায়। তারপর সময়ের পরিক্রমায় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর, সিটি গ্রুপ কোদালা চা বাগানকে নতুন রূপে সাজানোর দায়িত্ব নেয়।
প্রায় ২,৪৮৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই চা বাগানের ৮৭২ একরেই চা চাষ হয়, আর ৯০০ একরে রাবারের গাছ দাঁড়িয়ে থাকে মাথা উঁচু করে। শুধু চা আর রাবারই নয়, এখানে আছে আম, আগর, নিম আর মুলি বাঁশের এক বিশাল বনভূমি। কোদালা চা বাগানে এলেই মনে হয়, এক পা রাখলেই হয়তো শত বছর পেছনে ফিরে যাবো। ব্রিটিশ আমলের পুরনো বাংলোগুলো এখনো দাঁড়িয়ে আছে, তাদের দেয়ালে আঁকা গল্পগুলো যেন নিরব সাক্ষী হয়ে আমাদের ডাক দেয়। আর বাগানের ভেতর দিয়ে যখন পায়ে পায়ে হাঁটি, তখন দূরে কর্ণফুলী নদীর কলতান শোনা যায়—সে ডাক যেন চায়ের সুগন্ধের সঙ্গে মিলেমিশে আরও মিষ্টি হয়ে ওঠে। আজ আমরা চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের মিলনমেলা নিয়ে এই চা বাগানের অতিথি। বাগানের পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে পাতা ছুঁয়ে যাচ্ছিল আমাদের হাত, আর বাতাসে চায়ের পাতার স্নিগ্ধ ঘ্রাণ ভেসে আসছিল। এখানে এসে মনে হয়, কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি যেন মুহূর্তেই গলে যায়।
কোদালা চা বাগান শুধু একটি চা বাগান নয়—এ এক জীবন্ত ইতিহাস, যেখানে চা পাতার ফাঁকে লুকিয়ে আছে ব্রিটিশ শাসনের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প, আর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিদিনের সংগ্রাম।
চলবে—

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট