রংপুরের মিঠাপুকুরে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাঁকা আমন ধান কেটে নিয়ে কৃষি জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক থানায় অভিযোগ করতে গেলেও মামলা গ্রহণ করেনি মিঠাপুকুর থানা পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের চাঁনপুরে মৃত ফরজ উল্লাহর পুত্র কৃষক আব্দুল মালেক জমির জবর দখল স্বত্ব ও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ মামলার ২০২১ সালের ২২ মার্চের রায়ের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ ৩০ বছর পর গত ১৪ অক্টোবর পুলিশের সহযোগিতায় ১ একর ৩৪ শতক জমির দখল পায়। জমিতে লাগানো আমন ধানের পরিচর্যা করে আব্দুল মালেক ও তার পরিবার। হঠাৎ গত ৪ নভেম্বর পবিত্র শিং, জোতিন শিং, শ্রীমতি কৈরালা রানী , শ্রীমতি গীতা রাণী ও শতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসীসহ লাঠি, লোহার রড, ছোরা, কাঁস্তে, বল্লম, তীর-ধনুক নিয়ে সজ্জিত হয়ে পবিত্র শিং ও শুকরা শিং এর হুকুমে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের জমির ধান কর্তন করে হাতে, ঘাড়ে ও ভ্যান যোগে নিয়ে যায়। ধান নিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুল মালেক তার সন্তানরা বাঁধা দিলো ধারালো ছোরা দিয়ে ধাওয়া দিলে তারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে পাঁকা ধান কেটে নেয়ার পরেই স্থায়ীভাবে কৃষিজমিটি দখল করার জন্য বসতবাড়ি নির্মাণ শুরু করেছে পবিত্র সিং, শ্রীমতি গীতা রাণী, ফনিক্স চন্দ্র, শ্রীমতি কৈবালা রাণী গং।
এবিষয়ে শ্রীমতি কৈবালা রাণী জানান, কেন হামরা জমি ছাড়ি দিবো। মালেক বগুড়ার লোক। এটা হামার বাপ দাদার সম্পত্তি। নেশা খিলিয়া জমি লিখি নিছলো। হামরা এই জমি ছাড়বার নই। হামার জমিতে হামরা ঘর তুলতোছি। ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মালেক জানান, বাবা আমি নিজের পরিশ্রমের টাকায় ৩০ বছর আগে এই জমিটা কিনছিলাম। ওরা জোর করি জাল দলিয়া বানেয়া জমিটা দখল করি নিছলো। জমি দখল করার দিন মোর একটা কিষানক মার্ডার করছিলো। তারপর থাকি অনেকদিন পালে আছনু। কোর্টোট মামলা করিয়া বছরের পর বছর ঘুরিয়া মামলার রায় পানু। রায় পায়া ৩০ বছর পর জমির দখল পানু। এখন আবার মোর পাঁকা ধান কাটি নিয়ে ওরা জমিটা দখল করি নেইল।
আব্দুক মালেকের পুত্র মাইদুল জানান, ওসি নিজে আসি দেখি গেইল ওরা পাঁকা ধান কাটি নিয়ে জমি দখল করি নিছে। তারপরও ওসি হামার মামলা নিবার চাওছে নাহ। কয় ওমার আগে কাগজ দেখি। কাগজপাতি দেখিয়ায়তো কোর্ট হামার পক্ষে রায় দিয়ে জমি দখল করি দিয়া গেইছে। এখন ধান কাঁটি নিয়ে গেইলো হামার। ওসি মামলা না নিয়ে কওছে কয়দিন পর মামলা নিবে। হামরা কি বিচার পাবার নাই? বাপেতো পুরা জীবনটায় শেষ করিল এই জমির পিছনত। হামারো বুঝি কোর্ট আর থানাত ঘোরতে ঘোরতে জীবন শেষ হয়া যাইবে এই জমির পিছনত। মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, অপরাধ সংঘটিত হলে অবশ্যই মামলা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। ভুক্তভোগী আমার কাছে এসেছিলো। এবিষয়ে কাজ চলমান রয়েছে। অভিযোগ করলেই মামলা গ্রহণ করা হবে।