চট্টগ্রামের ফ্যাসিবাদের অন্যতম গডফাদার হিসেবে পরিচিত এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী জুনুর ফাঁসির দাবিতে আজ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্য বিরোধী সাধারণ ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফজলে করিম চৌধুরীকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত না করে বিশেষ সুবিধা দিয়ে ভার্চুয়াল শুনানি করা হচ্ছে, যা তারা অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেন। তারা অভিযোগ করেন, ফজলে করিমের বিরুদ্ধে খুন, জমি দখল, অবৈধ অস্ত্র মজুদসহ একাধিক মামলা থাকলেও তাকে শারীরিকভাবে আদালতে হাজির করা হচ্ছে না। বক্তারা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ আওয়ামী লীগের উচ্চপদস্থ নেতাদের মতো আদালতে কেন তাকে শারীরিকভাবে হাজির করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন।
এদিকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ফজলে করিমের রাউজানের বাড়ি থেকে পুলিশের অভিযানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হলেও তা জনসম্মুখে প্রকাশ না করায় জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ তোলা হয়েছে, পুলিশ কি রিমান্ডের নামে তাকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে?
সমাবেশে বক্তারা উল্লেখ করেন, গত ২৮ জুলাই রাউজানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফজলে করিম তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে ব্যবহার করে ছাত্র জনতার উপর অতর্কিত হামলা চালান। অভিযোগ করা হয়, এই হামলায় নগরীর পাথরঘাটা থেকে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের মামলায় ফজলে করিম বা তার সহযোগীদের আসামি করা না হওয়ায় আন্দোলনকারী ছাত্রদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, ফজলে করিমের প্রাক্তন স্ত্রী রিজওয়ানা, যিনি তাদের সন্তান ফারাজ করিমের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন, তিনিও বিচার প্রক্রিয়ায় অসহযোগিতা করছেন। সমাবেশে তার আইনজীবীর অনভিপ্রেত আচরণ এবং সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার বিষয়েও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। আন্দোলনকারীরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, ওই আইনজীবীকে বার কাউন্সিল থেকে বহিষ্কার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
সমাবেশে ফজলে করিমের ছেলে ফারাজ করিমেরও গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। অভিযোগে বলা হয়, ফারাজ করিম মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে মানুষকে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বাবার অবৈধ অস্ত্র ভান্ডার রক্ষায় গোপনে সহায়তা করছেন বলেও দাবি করা হয়। ভুক্তভোগীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বিচার বিভাগের কাছে দাবি জানিয়েছেন, ফজলে করিম ও তার ছেলেকে আইনের আওতায় এনে জনস্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।