
“জেন্ডার সংবেদনশীল আচরণ করি,নারীবান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়ি“ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা বারসিক মানিকগঞ্জ অঞ্চলে বাল্য বিবাহের কারণ কুফল ও প্রতিকারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। তারই ধারবাহিকতায় গত ৮ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও আজ শহরের খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান উচ্চ বিদ্যালয়ে একই কর্মসূচি পালিত হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মো. আব্দুল মজিদ মোল্লা, নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক মো. শাহাদত হোসেন সাইজি, পলাশ ভৌমিক, বারসিক কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার ও ঋতু রবি দাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন- বিবাহের ক্ষেত্রে ‘অপ্রাপ্ত বয়স্ক’ অর্থ ২১ (একুশ) বৎসর পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো পুরুষ এবং ১৮ (আঠারো) বৎসর পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো নারী। যে বিবাহের ক্ষেত্রে কোন এক পক্ষ বা উত্তয় পক্ষ অপ্রাপ্ত বয়স্ক সেটিকে বাল্যবিবাহ বলব। আমরা জানি নানা কারণে বাল্য বিবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম কারন হলো- *সামাজিক প্রথা ও কুসংস্কার *মেয়েদের বোঝা মনে করা *বিয়ের বয়সসীমা নিয়ে আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং আইনের প্রয়োগ না থাকা *সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা এবং উত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানি *মেয়েদের সৌন্দর্য সম্পর্কে প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক ধারণা। *মেয়েদের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যৌতুকের পরিমাণ বাড়ার প্রবণতা। এছাড়াও বাল্য বিবাহের ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে-*মেয়েদের স্বাভাবিক দৈহিক বৃদ্ধি এবং পূর্ণতা প্রাপ্তি বাধাগ্রস্থ হয়: *মেয়ে শিশুরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়;*মেয়েদের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, নতুন পরিবেশ এবং সংসারের দায়িত্ব নিতে কষ্ট হয়; *যৌন মিলনের ভীতি তৈরি হয় এবং গর্ভধারণ ও প্রসবে জটিলতা দেখা দিতে পারে। *মৃত সন্তান হয়, জন্মের সময় শিশু মারা যেতে পারে বা শিশুর জন্মকালীন ওজন কম থাকে। *শিশু অপুষ্টি এবং মেয়েলী অসুখ এবং জটিলতা নানা রকমের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগে; ইত্যাদি।
তাই সরকারি আইনের পাশাপাশি আমরা সকলে মিলে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে চাই। বিশেষ করে স্কুল শিক্ষকরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যেমন- বাল্যবিবাহের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ (যাদের বাল্যবিবাহ দেবার বেশি সম্ভাবনা) শিশুদের একটি তালিকা তৈরি;।মা-বাবা, অভিভাবকের সাঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা;।শিশুদের বিশেষত: মেয়ে শিশুদের আশ্বস্ত করা যে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা যায়;।বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত আইন ও শাস্তি সম্পর্কে প্রচারণা;।শিশু সুরক্ষা হটলাইনের তথ্য জানানো এবং ব্যবহার করা; । হট লাইন নাম্বার যেমন ১০৯ ও ৯৯৯ সরবরাহ করা।