
আলম সামস, মুরাদনগর (কুমিল্লা) ।।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়নের বিশেষ প্রকল্পের আওতায় জেলা প্রশাসনের করা ভূমিহীনের তালিকায় ২০১৮ সালে নাম উঠে হতদরিদ্র আলী আহাম্মদের। সরকারের করা তালিকায় নাম দেখে বড় আশায় বুক বাধেন তিনি। এই বুঝি একটা ভিটার মালিক হবো। সেই আশা আরো পাকাপোক্ত হয় যখন ২০২০সালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫শতক জায়গার কবুলিয়াত দলিল, নামজারীসহ খতিয়ান আলী আহাম্মদের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু বিধিবাম আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ৫শতক জমি আর কপালে জোটেনি আলী আহাম্মদের। স্থানীয় এক প্রভাবশালী গিলে খেয়েছেন আলী আহাম্মদকে দেয়া সরকারের সেই ভিটে। দখল হওয়া সেই ভূমি ফিরে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি তিনি।
এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে ভ‚মিহীন আলী আহাম্মদের সাথে।
জানা যায়, ২০১৮ সালে ভূমিহীনের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হওয়ার পর ২০২০সালের ১৫ই মার্চ মুরাদনগর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের ৩৭৭২ নং রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে ৫ শতক জমি কবুলিয়াত দলিল মূলে স্থায়ী বন্দোবস্ত পেয়েছেন আলী আহাম্মদ।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)র বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আলী আহাম্মদ। ভুক্তভোগী আলী আহাম্মদ বলেন, ভূমিহীন হিসেবে আমাকে পাঁচ শতক জায়গা ২০২০ সালে কবুলিয়াত দলিল মূলে ৯৯ বছরের জন্য স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া হয়। যাহার দলিল আমি ২০২০ সালে বুজিয়া পাই কিন্তু ওই জায়গা আমি দখল বুঝে পাইনি। বন্দোবস্ত পাওয়ার পর থেকে আমার এই জায়গায় প্রভাবশালী এক যুবলীগ নেতার আত্মীয় বাঙ্গরা গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে বাসির মিয়া জোর পূর্বক দখল করেন। রাতারাতি ভেকু দিয়ে আমার জায়গার মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে আমার জায়গা মাছ চাষ শুরু করেন। আমি গরীব মানুষ, তাদের সাথে মোকাবেলা করার মত টাকা আর ক্ষমতা কোনটাই নাই। অনেকবার ভূমি অফিসে গিয়েও আশ্বাস ছাড়া আর কিছু পাইনি। আর কোন উপায় না পেয়ে গত মাসে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভ‚মি)র বরাবর আমি অভিযোগ দায়ের করি।
অভিযুক্ত বাসির মিয়ার কাছে ভূমিহীনের জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আলী আহাম্মদকে যেখানে জায়গা দেয়া হয়েছে এর আশেপাশে সব গুলো আমাদের সম্পত্বি। খাস জায়গাটায় আমাদের দাবী সবচেয়ে বেশি। এই জায়গা আমরা পাই। এই বন্দোবস্তর বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা এটা বাতিল করেছি। বন্দোবস্ত বাতিলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় তিনি গড়িমসি করেও কাগজ দেখাতে পারেননি।
এব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, আলী আহাম্মদের কাগজপত্র সঠিক রয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে সরেজমিনে দেখার জন্য বলা হয়েছে। দখল না পাওয়ার কারন কি আর বর্তমানে কে দখলে আছে কিভাবে দখলে আছে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।