1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নিরাপদ সড়ক চাই সফল সামাজিক সংগঠন তারেক রহমান ফিরতে চাইলে একদিনেই ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব ঘোড়াঘাটে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক সীমিত গঠন ও বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত শ্রীমঙ্গলে ১১মাস ধরে ঘরবন্দী এক পরিবার লামায় ট্রাক্টর মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৪ চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক ব্লকেড, ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবি রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও  আলোচনা সভা  গৌরনদীতে বিএনপি’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড গাইবান্ধা, ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা হত্যার হুমকি থানায় অভিযোগ  ৩২ তম বাৎসরিক ওরশ মোবারক ও গুনীসম্মাননা ২০২৫

পাহাড়ের নীরবতায় শব্দের জন্ম

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

রাঙামাটি যাওয়ার পথে পথ যেন থেমে গেল এক পুরনো স্মৃতির সিঁড়িতে। সে এক ধুলো-মাখা পুলিশ ফাঁড়ি, যার গায়ে এখনো পুরনো সময়ের গন্ধ লেগে আছে। সময় তাকে পরিত্যাগ করেছে, মানুষ ভুলে গেছে, অথচ সে দাঁড়িয়ে আছে নিজের মতো করে, পাহাড়ের দিকে চেয়ে, অরণ্যের নিঃসঙ্গতার সাক্ষ্য হয়ে।
আমি থেমে যাই। হাতে এক কাপ চা, আর হৃদয়ের গভীরে জমে থাকা কিছু অস্থির ভাবনা। চারপাশে নিঃশব্দতা—নীরব অথচ কথা বলে। দূরে সবুজ পাহাড়, ঘন বৃক্ষরাজি, হালকা কুয়াশার পর্দা। যেন প্রকৃতি তার গোপন দরজা খুলে দিয়েছে শুধু আমার জন্য। এই থেমে যাওয়ার মাঝেও এক অনন্ত গতি আছে—ভাবনার, স্মৃতির, আত্মশুদ্ধির।
আমার বড় মেয়ে কাশপি তখন ছবি তোলে। আমি তা জানি, তবু ভাবনার ভেতর এতটাই ডুবে থাকি যে ক্যামেরার উপস্থিতি আমার অনুভবে আসে না। এই মুহূর্ত যেন কোনো দৃশ্য নয়, এক ধরনের সাহিত্যিক স্বপ্ন। যেখানে সময়ের হিসাব নেই, শহরের শব্দ নেই, কেবল এক নিঃসঙ্গ লেখকের আত্মসমীক্ষা।
পাহাড় আমাকে বদলে দেয়। শহরের কোলাহল, যন্ত্রের শব্দ, মানুষের মুখোশ—এসবের বিপরীতে এই প্রকৃতি আমার আত্মাকে ধুয়ে দেয়। আমি ফিরে যাই আমার শৈশবে, সেই সময়ের চট্টগ্রামে, যখন রেললাইন পেরিয়ে আমরা পাহাড়ে উঠতাম, পলিথিনে মুড়িয়ে নিয়ে যেতাম সামান্য ভাজা চানাচুর, চা, কাগজ আর কলম। আজও সেই কাগজ, সেই কলম সঙ্গেই আছে, তবে পাহাড়ের প্রতি ভালোবাসা আরও গভীর, আরও বিশুদ্ধ হয়ে উঠেছে।এই ফাঁড়ির সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আমার মনে পড়ে যায় সমস্ত অসমাপ্ত লেখা, ভুলে যাওয়া চরিত্র, অপ্রকাশিত উপন্যাসের পাতা। পাহাড় যেন আমায় তাড়া দেয়—লিখো, আবার লিখো।
যা বলা হয়নি, তা লিখো। যা হারিয়ে গিয়েছে, তা খুঁজে আনো শব্দে।পথ চলতে চলতে থেমে গিয়ে ভাবনার ঢেউয়ে ডুবে যাওয়া আমার চিরাচরিত স্বভাব। অন্যেরা যাকে বিলম্ব বলে, আমি তাকে বলি আত্মার পুনর্জন্ম। এই পাহাড়ি নিঃস্তব্ধতা আমার সাহিত্যের গর্ভনদী, এখান থেকেই জন্ম নেয় আমার শব্দ, বাক্য, প্রতিবাদ ও প্রেম।
চায়ের কাপটা ফাঁকা হয়ে আসে, কিন্তু আমার ভেতরের ভাবনা তখনও উপচে পড়ে। সামনে অরণ্যের দিকে তাকিয়ে মনে হয়, সাহিত্যের গভীরতা আসলে এখানেই—যেখানে শব্দ নয়, নীরবতাই সবচেয়ে শক্তিশালী ভাষা।
এই পথ রাঙামাটির, অথচ মনে হয় আত্মার ভেতরের কোনো গভীর উপত্যকায় প্রবেশ করেছি। আমি লিখে ফেলি আমার আগামী দিনের প্রথম লাইন—“জীবন কেবল গন্তব্যে পৌঁছানোর গল্প নয়, মাঝে মাঝে থেমে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দ পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে নিজের ভেতর ফিরে যাওয়ার নামও জীবন।”
ঠিক এইভাবেই সাহিত্যের সঙ্গে আমার পথচলা, থেমে থেমে চলা, দেখার ফাঁকে গভীরভাবে বোঝা। পাহাড় আমাকে লেখক করে, চা আমাকে দর্শক করে, আর স্মৃতি আমাকে মানুষ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট